বাংলাদেশে মানবাধিকার নিয়ে উদ্বিগ্ন ব্রিটেন

Published: 21 November 2020

পোস্ট ডেস্ক :


প্রাণ বাঁচাতে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার প্রশংসা করলেও বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ মানবাধিকার পরিস্থিতিতে উদ্বেগ অব্যাহত আছে যুক্তরাজ্যের। গতকাল শুক্রবার ব্রিটিশ পররাষ্ট্র, কমনওয়েলথ ও উন্নয়নবিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছে। বাংলাদেশসহ ৩০টি দেশের গত জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাজ্যের পর্যালোচনা প্রতিবেদনে স্থান পেয়েছে।

ব্রিটিশ পররাষ্ট্র, কমনওয়েলথ ও উন্নয়নবিষয়ক মন্ত্রণালয় ২০১৯ সালের গণতন্ত্র ও মানবাধিকারবিষয়ক প্রতিবেদন প্রকাশ করে গত জুলাই মাসে। সেখানে ওই ৩০টি দেশকে চিহ্নিত করা হয়েছিল, যাদের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাজ্য বিশেষভাবে উদ্বিগ্ন এবং দেশগুলোর পরিস্থিতি উন্নয়নে যুক্তরাজ্য ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করে। ওই ৩০ দেশের তালিকায় ছিল বাংলাদেশ। এরপর যুক্তরাজ্য দেশগুলোর পরিস্থিতি পর্যালোচনা অব্যাহত রাখে এবং গত জানুয়ারি থেকে ছয় মাসের পর্যালোচনা তুলে ধরা হয়েছে গতকালের প্রতিবেদনে।
বাংলাদেশ প্রসঙ্গে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশে সার্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ অব্যাহত আছে। বিশেষ করে গত ফেব্রুয়ারি মাসে ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিরোধীদলীয় এক প্রার্থীর ওপর হামলা এবং ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শনের ব্যাপক অভিযোগ ছিল। নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করায় সরকার বাংলাদেশে যুক্তরাজ্য ও অন্যান্য কূটনৈতিক মিশনের সমালোচনা করেছে।’

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘স্থানীয় একটি মানবাধিকার গোষ্ঠীর তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালের প্রথম ছয় মাসে অন্তত ১৫৮টি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হয়েছে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব হওয়া অব্যাহত আছে। কভিড-১৯ মোকাবেলায় সরকারের উদ্যোগের সমালোচনা করায় স্বাস্থ্য পেশাজীবীসহ অন্তত ৩৮ জন সাংবাদিক ও চার শতাধিক ব্যক্তিকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আটক করা হয়েছে। ছয় মাসের জন্য সাজার মেয়াদ স্থগিত করার সরকারি সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে গত মার্চ মাসে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া কারাগার থেকে মুক্ত হয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত সেপ্টেম্বর মাসে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ দ্বিতীয়বারের মতো আরো ছয় মাস বাড়ানো হয়েছে।
ব্রিটিশ সরকারের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের প্রশংসাও রয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘প্রশংসনীয়ভাবে বাংলাদেশ কক্সবাজার জেলায় প্রায় আট লাখ ৬০ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়া অব্যাহত রেখেছে। গত এপ্রিল ও মে মাসে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ বঙ্গোপসাগরে ভাসমান রোহিঙ্গাবোঝাই কয়েকটি নৌকা উদ্ধার করেছে। কিছু শরণার্থীকে ভাসানচরে নেওয়া হয়েছে। আশ্রয়শিবির থেকে শরণার্থী স্থানান্তরের জন্য সরকার বঙ্গোপসাগরের ওই দ্বীপটি গড়ে তুলছে। ভাসানচরে সুরক্ষা ও সুবিধাগুলো পর্যালোচনার লক্ষ্যে স্বাধীন ও সমন্বিত কারিগরি এবং সুরক্ষা মূল্যায়নের জন্য যুক্তরাজ্য ও অন্য অংশীদাররা আহ্বান জানিয়ে যাচ্ছে। কক্সবাজারে শরণার্থী শিবিরগুলোতে ইন্টারনেট সুবিধায় বিধি-নিষেধ অব্যাহত রয়েছে। এতে কভিড-১৯ সম্পর্কিত জনস্বাস্থ্যসেবা প্রদান ও মানবিক সহায়তা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।’