বিজয় দিবসে বিটিএ’র ভার্চুয়াল আলোচনা ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা অনুষ্ঠিত

Published: 27 December 2020

পোস্ট ডেস্ক : বাংলাদেশ টিচার্স এসোসিয়েশন ইউকে (বিটিএ) গত বৃহস্পতিবার ২৪ শে ডিসেম্বর বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৪৯তম বিজয় দিবসের এক ভার্চুয়াল আলোচনা ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন করে।

সভার প্রারম্ভে BTA এর পক্ষ থেকে সভাপতি তার শুভেচ্ছা বক্তব্যে ১৯৫২ ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ, বুদ্ধিজীবী হত্যা, ১৫ই আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার পরিবার ও জেলের অন্তরালে চার নেতা হত্যা, সকল স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন, একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলায় যারা শহীদ হয়েছেন, আত্মাহুতি দিয়েছেন, এবং যে সমস্ত নারীরা বলাৎকারের শিকার হয়েছেন, যারা দেশের জন্য যুদ্ধ করেছেন, জীবন দান করেছেন, আমরা তাদের অবদানের কথা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে এবং মহান আল্লাহ পাকের কাছে তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।

উক্ত সভায় টিচার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি মোঃ আবু হোসেনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল বাসিত চৌধুরী ও যুগ্ন সম্পাদক ডক্টর রোয়াব উদ্দিনের সঞ্চালনায় স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে স্মৃতিচারণ মূলক আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন,
প্রবীণ রাজনীতিবিদ সুলতান শরিফ। তিনি বাংলাদেশ টিচার্স এসোসিয়েশনের ভোয়সি প্রশংসা করে বলেন, শিক্ষকরাই পারেন বাংলাদেশের স্বাধীনতার কথা এই প্রবাসে আমাদের পরবর্তী জেনারেশন এর কাছে তুলে ধরতে।

বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ডক্টর কবীর চৌধুরী (বাংলাদেশ থেকে) বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রবাসী বাঙ্গালীদের অবদান ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। আন্তর্জাতিকভাবে স্বাধীনতার পক্ষে জনমত সৃষ্টি করা এবং অর্থ সাহায্য প্রদান করে প্রবাসী বাঙালিরা স্বাধীনতার এক অনন্য ইতিহাস রচনা করেন। প্রবাসে যারা স্বাধীনতার পক্ষে দিনরাত খেটেছেন, তাদেরকে ‘মুক্তিযোদ্ধা’ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান বাংলাদেশ সরকারের নৈতিক দায়িত্ব বলে তিনি দাবি করেন।

বক্তারা স্বাধীনতা যুদ্ধে তাদের নিজেদের স্মৃতিচারণ করলে উপস্থিত শ্রোতারা মনমুগ্ধ হয়ে শুনেন।
বাংলাদেশ টিচার্স এসোসিয়েশন লন্ডনে বাঙালি সমাজের শিক্ষা আন্দোলনে ও মেইনস্ট্রিম স্কুলে বাঙালি শিক্ষক নিয়োগে এক বিরাট অবদান রেখে চলেছে। যার প্রেক্ষিতে হাজারো শিক্ষক এ দেশের স্কুল গুলোতে কাজ করছেন।

নতুন প্রজন্মের কাছে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস পৌঁছে দেয়ার জন্য টিচার্স এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যে অচিরেই একাত্তরের স্মৃতিচারণমূলক একটি বই প্রকাশ করবে বি টি এ।

আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করেন প্রবীণ রাজনীতিবিদ সুলতান মো: শরীফ, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ডক্টর কবির চৌধুরী ( বাংলাদেশ থেকে) , শিক্ষাবিদ ডক্টর সামসুল হক (বাংলাদেশ থেকে), বাংলাদেশ হাই কমিশন লন্ডন থেকে ডেপুটি হাই কমিশনার মোহাম্মদ জুলকারনাইন, মুক্তিযোদ্ধা তোফাজ্জল করিম ( আমেরিকা থেকে), মুক্তিযোদ্ধা দেওয়ান গৌস সুলতান – ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যালামনাই ঢাকা ইউনিভার্সিটি, মোহাম্মদ আব্দুর রকিব FCA- সাধারণ সম্পাদক ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই, শাহগীর বক্ত ফারুক- সাবেক সভাপতি ও বি বি সি সি আই উপদেষ্ষ্টা, মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদ হাসান MBE, কমিউনিটি নেতা নাঈম উদ্দিন রিয়াজ, গ্রেটার সিলেট কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আতাউর রহমান, এ এফ এম শামসুদ্দোহা – সাবেক সভাপতি বি টি এ ( বাংলাদেশ থেকে) , কাউন্সিলর হুমায়ুন কবির, কমিউনিটি নেতা মির্জা আসহাব ব্যাগ ও মফিজুর রব।

বাংলাদেশ টিচার্স এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে আলোচনায় অংশ গ্রহণ করেন, লন্ডন এন্টারপ্রাইজ একাডেমির প্রিন্সিপাল আসিদ আলী, এডভোকেট শাহ ফারুক আহমেদ, ইকবাল হোসেন – সাবেক সাবেক সাধারণ সম্পাদক, কোষাধক্ষ্য মিসবাহ আহমেদ, সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি মনজুর রেজা চৌধুরী এবং কার্যকরী কমিটির সদস্য মুনজেরিন রশিদ ।

আলোচনা সভার শেষে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় । সাবেক সভাপতি মোস্তফা কামাল মিলনের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন, সাবেক ডিপ্লোম্যাট ডক্টর শ্যামল চৌধুরী, বিখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী তারেক সৈয়দ (বাংলাদেশ থেকে) সৈয়দ জুবায়ের, মজিবুল হক মনি, ইকবাল হোসেন, মিসবাহ আহমেদ, সাইদা চৌধুরি, রেহানা খানম, সওদা মোমিন, রূবি হক ও মুনজেরীন রশিদ প্রমুখ। অনুষ্ঠান শেষে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় এবং করোনা ভাইরাসে রোগমুক্তির জন্য দোয়া পরিচালনা করেন মুক্তিযোদ্ধা মোঃ মমিনুল ইসলাম ফারুকী।