মহাবিশ্বের প্রাচীনতম ছায়াপথ

Published: 8 January 2021

পোস্ট ডেস্ক : মহাবিশ্বের নানা অজানার দিকে আমাদের নজর থাকে সর্বদাই। পৃথিবীর বাইরের জগতে কি রয়েছে? সেখানে কি প্রাণের সঞ্চার হয়েছে কিনা তা নিয়ে আমাদের কৌতুহলের অন্ত নেই।

মহাকাশ গবেষকরা তাই বার বার তাদের গবেষণা চালিয়ে গেছেন। সায়েন্স অ্যালার্টের একটি তথ্য অনুসারে, মহাবিশ্বের জন্ম হয়েছিল প্রায় ১৩ দশমিক ৮ বিলিয়ন বছর আগে। বিখ্যাত বিগ ব্যাং থিওরির কথা আমরা সকলেই জানি। তবে মহাবিশ্বের অন্ধকার সম্পর্কে গবেষকরা আরও তথ্য অনুসন্ধান করতে চান। কোন ছায়াপথ সবার আগে ছিল। সেখানে কি ছিল তা নিয়ে কৌতুহলের শেষ নেই।
গবেষণা থেকে উঠে এসেছে প্রাচীন এবং সবথেকে দূরত্বের একটি ছায়াপথ সম্পর্কে। তাকে খুঁজে পাওয়া গেছে বলেও দাবি করেছেন গবেষকরা।

নেচার এস্ট্রোনমি নামের একটি লেখা থেকে দেখা গেছে এই ছায়াপথের হদিস। টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর নবুনারি কাসিকাওয়া এ বিষয়ে তার ধারণা ব্যক্ত করেছেন। তিনি মনে করেন, ডার্ক এজ শুরু হয়েছিল প্রায় ৩৭৯ হাজার বছর আগে। বিগ ব্যাং হয়েছিল তারও প্রায় ১ বিলিয়ন বছর পরে। গবেষকরা মনে করেন সূর্যের কারণে মহাবিশ্বের এই প্রাচীনতম ছায়াপথটি সহজে দেখা যায়নি। ফলে এর সন্ধান করা যে যথেষ্ট কষ্টের ছিল তা তিনি স্বীকার করেছেন। তবে বর্তমানকালে শক্তিশালী দূরবীনের সহায়তায় এই প্রাচীন ছায়াপথটির সন্ধান করা গেছে। এই ছায়াপথের একটি বৈশিষ্ট্য হিসাবে তিনি বলেছেন, নিজের কাছে আসা যে কোনো ছায়াপথকে সে অতি সহজেই কাছে টেনে নেয়। ফলে সেই ছায়াপথের অস্বিস্ত থাকে না। এভাবেই এই ছায়াপথটি নিজেকে এত বছর ধরে টিকিয়ে রেখেছে। তবে আমাদের ছায়াপথ থেকে কতটা দূরে রয়েছে এই ছায়াপথ তা সন্ধান করতে গবেষকদের প্রথমদিকে বেগ পেতে হয়েছিল।

তবে সেই দূরত্বও প্রায় এখন হাতের মুঠোয়। অনুমান করা হচ্ছে আমাদের ছায়াপথ থেকে এই প্রাচীন ছায়াপথের দূরত্ব প্রায় ১৩ দশমিক ৪ বিলিয়ন আলোকবর্ষ। তবে এই দূরত্ব আরও বেশি হতে পারে বলেও মনে করছেন মহাকাশ গবেষকরা। তাই আমাদের ছায়াপথকে নাগালে পেতে এর আরও বহু বছর সময় লাগবে বলেই মনে করছেন তারা। এই ছায়াপথের সন্ধান করা যে এক বিরলতম ঘটনা সেকথা মনে করছেন মহাকাশ গবেষকরা।

হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের পাশে একটি বিশেষ ক্ষমতাশালী দূরবীন বসানো হয়েছিল যেখান থেকে এই ছায়াপথকে দেখা সম্ভব হয়েছে। এই ছায়াপথের প্রাচীনত্ব অবাক করেছে সকলকেই। ২০২১ সালের ৩১ অক্টোবর আরো একটি শক্তিশালী দূরবীন আবিস্কার করা হবে। সেটা দিয়ে এই ছায়াপথটিকে আরো ভালভাবে দেখা যাবে মনে করছেন গবেষকরা। আমাদের ছায়াপথের বাইরে এই প্রাচীন ছায়াপথটি এখন সকলের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। তবে সেখানে পৃথিবীর মত কোনও গ্রহ রয়েছে কিনা তা এখন সকলের আলোচনার বিষয়। মহাবিশ্বের প্রাচীনত্বের এই হদিসে খুশি সমস্ত গবেষকরাই। এবার আরো এগিয়ে যাওয়ার পালা।