খাস কালেকশন প্রদানে দু’পক্ষের সংঘর্ষের আশংকা

Published: 15 January 2021

বড়লেখা প্রতিনিধি : হাকালুকি হাওরের নাগুয়া-ধলিয়া জলমহালের ইজারার মেয়াদ ও উচ্চ আদালতে মামলা চলমান অবস্থায় জেলা প্রশাসনের খাস কালেকশন প্রদানে ইজারাদার ও খাস কালেকশনকারী দু’পক্ষ মূখোমূখি অবস্থান নিয়েছে। এর জের ধরে যে কোন সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা রয়েছে।

জানা গেছে, হাকালুকি মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির সভাপতি মির্জান আলী ১৪২২ বাংলা হতে ১৪২৭ বাংলা সন পর্যন্ত ৬ বছরের জন্য হাকালুকি হাওরের নাগুয়া-ধলিয়া জলমহালটি ইজারা নেন এবং বিলের রক্ষণাবেক্ষন শুরু করেন। তিনি এ বিলটি ইজারা নিয়ে চরম বিপাকে পড়েন। জুড়ি নদীর পলি মাটি উক্ত জলমহালে গিয়ে পতিত হয়ে ভরাট হওয়ায় ইজারাদার চরম ক্ষতির সম্মুখিন হন। ফিসিং না করেই ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে ইজারাদার মৎস্যজীবি সমিতি ইজারা মূল্য বিবেচনার জন্য কয়েক দফা জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করেন। প্রতিকার না পাওয়ায় ইজারাদার সমিতির সভাপতি মির্জান আলী গত বছরের ১ অক্টোবর মহামান্য হাইকোর্টে রিট পিটিশন মামলা (মামলা নং-৪৭২৩/২০) করেন। এছাড়াও ক্ষয়-ক্ষতি পুষাতে রেন্ট কমিয়ে আগামী ৬ বছরের জন্য জলমহালটি পুনরায় ইজারা প্রদান করতে ভুমি মন্ত্রণালয়ে আবেদন (নং-৬০৩/২০২০) করেন।

এদিকে উচ্চ আদালতে মামলা চলমান ও ভুমি মন্ত্রণালয়ে আবেদন থাকা স্বত্বেও মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসন গত ১২ জানুয়ারী নাগুয়া-ধলিয়া জলমহালটি স্থানীয় একটি মৎস্যজীবি সমিতির সভাপতি ফৈয়াজ আলীকে ৬ লাখ টাকায় খাসকালেকশন প্রদান করেছে। এদিন স্থানীয় ভুমি কর্মকর্তা পুলিশ নিয়ে জলমহালটি খাসকালেকশনকারীকে বুঝিয়ে দেয়ায় মুল ইজারাদার সমিতির মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।

সরেজমিনে গেলে স্থানীয় লোকজন জানান, গত ৬ বছর ধরে বিলের রক্ষণাবেক্ষন ও দখলে রয়েছে হাকালুকি মৎস্যজীবি সমিতি। বিল ভরাটের কারণে তারা রেন্ট কমানোর জন্য মামলা ও আবেদন নিবেদন করেছেন। করোনার কারণে বিল ফিসিং হয়নি। এরমধ্যে আরেকটি সমিতিকে খাস কালেকশন দেয়ায় দু’পক্ষের মধ্যে চাপা ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেকোন সময় এ দু’সমিতির নেতৃবৃন্দের মধ্যে সংঘর্ষের আশংকা রয়েছে।

হাকালুকি মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির সভাপতি মির্জান আলী জানান, ৬ বছরের জন্য বিলটি ইজারা নিলেও করোনার কারণে ফিসিং করিনি। ইজারা মেয়াদ থাকা ও বিল নিয়ে মামলা চলমান অবস্থায় নোটিশ ছাড়াই অন্য সমিতিকে খাস কালেকশন প্রদান করা হয়েছে। এতে সমিতি মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখিন।

খাস কালেকশনকারী ফৈয়াজ আলী জানান, সরকার তাকে বিলটি খাস কালেকশন দিয়েছে। যেকোন মূল্যে তিনি বিলের দখল নিবেন। মামলা চলমান কিংবা অন্য সমিতির ইজারার মেয়াদ থাকা অবস্থায় খাস কালেকশন প্রদানের ব্যাপার তার দেখার বিষয় নয়।

জেলা প্রশাসক মো. মীর নাহিদ আহসান জানান, হাকালুকি হাওরের নাগুয়া-ধলিয়া বিলটি খাস কালেকশন প্রদান করা হয়েছে। আদালতে মামলা চলমান ও আবেদন নিবেদনের বিষয় তার জানা নেই। এব্যাপারে খোঁজ-খবর নিবেন।