রংপুরে ৫ জঙ্গি আটক

Published: 4 December 2021

পোস্ট ডেস্ক :


দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করে একটি খেলনা প্রস্তুতকারক কম্পানিতে কোয়ালিটি চেকারের চাকরি নেন আহিদুল ইসলাম আহিদ ওরফে পলাশ। ২০১৫ সালে জেএমবিতে যোগ দেন। চাকরির আড়ালে চলতে থাকে তার দাওয়াতি কার্যক্রম। এক পর্যায়ে আঞ্চলিক নেতা হতে বায়াত গ্রহণ করেন। পরে জেএমবি‘র রংপুর অঞ্চলের সামরিক শাখার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি।

তার মাধ্যমেই রংপুর অঞ্চলে জেএমবি’র সামরিক শাখার কার্যক্রম পরিচালনা হয়ে আসছিল। আহিদুল তার সামরিক শাখার সদস্যদের সহযোগিতায় আইইডি তৈরি, আইইডি তৈরির প্রশিক্ষণ ও নাশকতামূলক হামলার প্রস্তুতি নিয়েছিল। জেলখানায় অন্তরীন থাকা শীর্ষ জঙ্গিদের আদালতের নিয়ে যাওয়া-আসার পথে হামলার মাধ্যমে মুক্ত করার পরিকল্পনা ছিল তাদের। এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নের আগেই আহিদুলসহ জেএমবি’র সামরিক শাখার পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

শনিবার (৪ ডিসেম্বর) বিকেলে র‌্যাব-১৩ এর রংপুর সদর দপ্তরে এক ব্রিফিংয়ে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

ব্রিফিংয়ে বলা হয়, র‌্যাবের সাইবার মনিটরিং সেল অনলাইনে নীলফামারীতে জঙ্গিদের সন্দেহজনক গতিবিধি লক্ষ করে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকাল ১১টা পর্যন্ত র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-১৩ এর অভিযানে নীলফামারীর সদরের মাঝিপাড়া থেকে জেএমবি’র রংপুর অঞ্চলের সামরিক শাখার প্রধান আহিদুল ইসলাম আহিদ ওরফে পলাশসহ (২৬) পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। আহিদুল ইসলাম সদর উপজেলার উত্তর মুশরত কুখাপাড়া এলাকার মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে।

গ্রেপ্তার অন্য সহযোগিরা হলেন, নীলফামারী সদর উপজেলার পশ্চিম কুচিয়া মোড় পাঠান পাড়া গ্রামের ওয়াজুদ্দীনের ছেলে ওয়াহেদ আলী ওরফে আব্দুর রহমান (৩০), দক্ষিণ বালাপাড়া গ্রামের তছলিম উদ্দিনের ছেলে পল্লী চিকিৎসক আব্দুল্লাহ আল মামুন ওরফে সুজা (২৬), উত্তর মুশরত কুখাপাড়া গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে জাহিদুল ইসলাম জাহিদ ওরফে যোবায়ের (২৭) ও সোনারাই কাচারীপাড়া গ্রামের রজব আলীর ছেলে নুর আমিন সবুজ(২৮)।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গ্রেপ্তারকৃত জঙ্গিরা জেএমবির সামরিক শাখার সদস্য। সামরিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে তারা নাশকতার পরিকল্পনা করেছিল। ২-৩ মাস আগেও জঙ্গি আহিদুলের বাড়িতে আইইডি তৈরি করা হয়। কিন্তু বোমা তৈরির সময় গভীর রাতে বিষ্ফোরিত হয়ে আহিদুলের বাড়িতে আগুন ধরে যায়। তারা ইন্টারনেটে বিভিন্ন ওয়েবপেজ দেখে কিভাবে বোমা তৈরি করতে হয় সে বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছিল।

তিনি বলেন, ঘটনাস্থল থেকে বোমা তৈরির সরঞ্জাম, রাসায়নিক দ্রব্য, একটি পিস্তল, একিট ম্যাগাজিন পাঁচ রাউন্ড গুলি ও অন্যান্য সরঞ্জামাদিসহ একটি শক্তিশালী আইইডি জব্দ করা হয়। পরে আইইডি নিষ্ক্রিয় করে র‌্যাবের বোমা ডিসপোজাল ইউনিটের একটি টিম।

র‌্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা জানায়, তারা অনলাইনে রংপুর অঞ্চলের আমিরের নির্দেশানায় বেশ কয়েকদিন থেকে আইইডি তৈরি করে শরীফের বাড়িতে রাখছিল। রংপুর অঞ্চলের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার প্রায় ২০-২৫ জনকে জঙ্গি সংগঠনে অন্তভূক্ত করেছেন তারা। তাদের মধ্যে কয়েকজন অটোচালক ও টেইলার রয়েছেন।