দ্বীপ কেড়ে নিয়েছে পাকিস্তান
পোস্ট ডেস্ক : সিন্ধু প্রদেশের ভুন্ডার ও ডিঙি দ্বীপ চীনের কাছে পাকিস্তান বিক্রি করে দিচ্ছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
সম্প্রতি রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ এবং পাকিস্তান দ্বীপপুঞ্জ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (পিআইডিএ) সিদ্ধান্ত অনুসারে, সিন্ধু প্রদেশের আঞ্চলিক পানি দিয়ে চীনের দ্বারা অনুর্বর দ্বীপগুলো বিকাশের লক্ষ্যে একটি সংস্থা গঠন করেছে পাকিস্তান। আর সেই অধ্যাদেশের ব্যাপারে পাকিস্তানের আদালতে চ্যালেঞ্জ করাও যাবে না।
জানা গেছে, পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশ সে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে সমৃদ্ধ উপকূলীয় বেল্ট। এটি ৩৩৮ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত, ম্যানগ্রোভের বৃহত্তম অঞ্চলগুলোর একটি এবং বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম ব-দ্বীপ।
সিন্ধুতে ছোট-বড় তিনশ দ্বীপ রয়েছে। সেখানকার ভুন্ডার দ্বীপ স্থানীয়দের কাছে বুন্দল নামে পরিচিত। এর পাশেই রয়েছে ডিঙি দ্বীপ। ১২ হাজার একর জমির ওপর রয়েছে টুইন দ্বীপটি।
পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার সবসময় চায় সংবিধান মেনে সিন্ধু উপকূলীয় অঞ্চল দখল করতে। কিন্তু সিন্ধু সরকার কিংবা জনগণের অনুমতি ব্যতীত সেখানে কোনো মেগা প্রকল্প চালুর অধিকার ফেডারাল সরকারের নেই। পাকিস্তানের সংবিধানের ১৭২ নম্বর অনুচ্ছেদেই তা বলা হয়েছে।
কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন সিদ্ধান্ত কেবল সংবিধানের পরিপন্থী নয়, বরং আন্তর্জাতিক সম্মেলন ও চুক্তিরও বিরুদ্ধে। এতে করে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে। ঐতিহাসিকভাবে সিন্ধি জাতি ও তাদের জমির ওপর হস্তক্ষেপ এটি।
এর আগেও ওই দুই দ্বীপ কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার। ২০০০ এবং ২০০৬ সালে পারভেজ মোশাররফের আমলে এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। তবে সিন্ধু প্রদেশের জনগণ কড়া পদক্ষেপের মাধ্যমে তা রুখে দেয়।
২০১৯ সালে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান চীন সফরে যান। সেখানে তিনি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে কিছু চুক্তি করেন। সেসব চুক্তির একটি হলো ডিয়ামের ভাশা ডাম; সিন্ধু প্রদেশের জনগণ এরই মধ্যে ওই প্রকল্প প্রত্যাখ্যান করেছে। তবে কেন্দ্রীয় সরকার এখনো সিন্ধু প্রদেশের জনগণের দাবি এড়িয়ে যাচ্ছে।
সেই চুক্তির অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ভুন্ডার দ্বীপ এবং সিন্ধু উপকূলীয় বেল্ট। পাকিস্তান ও চীনের মধ্যকার চুক্তির অধীনে ভুন্ডার ও ডিঙি দ্বীপে বড় ধরনের অর্থায়নের মাধ্যমে হংকংয়ের মতো শহর বানাতে চায় চীন। এই চুক্তি এখনো গোপন করে রাখা আছে।
সিন্ধু প্রদেশের জনগণের ভয় হলো- এই দ্বীপ এবং উপকূলীয় বেল্ট সম্ভবত চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। ওই অঞ্চলে চীনাদের উপস্থিতিও বাড়ছে।