পিবিআই’র তদন্তে ‘ক্লু’ উদ্ঘাটন

পিবিআই’র তদন্তে ‘ক্লু’ উদ্ঘাটন
বড়লেখায় কলেজছাত্রী হত্যা মামলায় স্বামী কারাগারে

Published: 2 February 2021

আব্দুর রব : বড়লেখা নারী শিক্ষা একাডেমী ডিগ্রী কলেজের ছাত্রী ও উপজেলার তালিমপুর ইউপির আখালিমোরা গ্রামের অকিল বিশ্বাসের মেয়ে মাধবী রাণী বিশ্বাস (১৮) হত্যা মামলার ‘ক্লু’ উদ্ঘাটন করেছে পিবিআই (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন)।

ঘটনার দেড় বছর পর তদন্তে বেরিয়েছে অসৎ চরিত্রের স্বামীর প্ররোচনায় আত্মহত্যা করে নিরপরাধ স্ত্রী মাধবী রাণী বিশ্বাস। ২০১৯ সালের ২৮ নভেম্বর স্বামীকে অভিযুক্ত করে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন মৌলভীবাজার পিবিআই’র ইন্সপেক্টর মো. মুরসালিন। সোমবার (১ ফেব্রুয়ারী-২০২১) মৌলভীবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ৫ নং আমলী আদালতে হাজির হয়ে অভিযুক্ত স্বামী অরকুমার বিশ্বাস (২৬) জামিন চায়। বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট বেগম মুমিনুন নেছা তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

জানা গেছে, জুড়ী উপজেলার সায়পুর গ্রামের যুবক অরকুমার বড়লেখা নারী শিক্ষা একাডেমী ডিগ্রী কলেজের ছাত্রী মাধবী রাণী বিশ্বাসকে কলেজ থেকে পালিয়ে নিয়ে বিয়ে করে। বিয়ের ৫ মাস ৮ দিনের মাথায় ২০১৯ সালের ১৯ আগস্ট স্বামীর বাড়িতেই তার রহস্যজনক মৃত্যু ঘটে। তার বাবা অকিল দাস অভিযোগ করেন, স্বামীসহ পরিবারের সদস্যরা মাধবীকে শ্বাসরুদ্ধে হত্যা করেছে। পরে পুলিশ ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের সহযোগিতায় আত্মহত্যার নাটক সাজায়। অবশেষে ঘটনার ৬ দিন পর গত বছরের ২৫ আগষ্ট তিনি মাধবীর স্বামী হরকুমার বিশ্বাস, শ্বশুড় করুণা বিশ্বাস, শ্বাশুড়ি দীপ্তি রানী বিশ্বাস এবং দেবর-ননদসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মৌলভীবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৫ নং আমলী আদালতে পিটিশন মামলা করেছেন। মামলাটি আমলে নিয়ে আদালত মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবেদন দাখিলের জন্য জুড়ী থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে সুস্পষ্ট কারণ উল্লেখ ছাড়াই আত্মহত্যায় কলেজছাত্রীর মৃত্যুর প্রতিবেদন দাখিল করেন। বাদীর না-রাজিতে আদালত মামলাটির তদন্ত ভার পিবিআই’র ওপর ন্যাস্ত করেন।

পিবিআই’র তদন্ত কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর মো. মুরসালিন তদন্তে উল্লেখ করেন, কলেজছাত্রী মাধবী রাণী বিশ্বাসের স্বামী অরকুমার বিশ্বাস বিভিন্ন সময়ে নানাভাবে কু-রুচী ও অশ্লীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। তার নানা অপকর্মের দায় নিরপরাধ স্ত্রীর ওপর চাপানোর কারণে সে তা সহ্য করতে পারেনি। মানসিক যন্ত্রনায় ভোগে শেষ পর্যন্ত আত্মহত্যা করেছে।

বাদী পক্ষের আইনজীবি অ্যাডভোকেট কামরেল চৌধুরী ও অ্যাডভোকেট শওকতুল ইসলাম চৌধুরী জানান, গত সোমবার এ মামলার প্রধান আসামী নিহত মাধবীর স্বামী অরকুমার বিশ্বাস আদালতে হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করে। আদালত তাকে জেল হাজতে প্রেরণের আদেশ দিয়েছেন।