সাংবাদিকের শখের বাগানে চল্লিশ টি লাউ!
বিশেষ সংবাদদাতা :
প্রায় দুই দশক ধরে সাংবাদিকতার সাথে যুক্ত রয়েছেন এহসানুল ইসলাম চৌধুরী শামীম। দেশে যেভাবে সংবাদপত্রের প্রতি নিবেদিতপ্রাণ ছিলেন ঠিক তেমনই প্রবাসেও তিনি খবরের সন্ধানে মগ্ন থাকেন কাজের ফাঁকে। কিন্তু অবসরে অন্য এক শামীম হিসেবে নিজেকে অধিষ্ঠিত করেছেন তিনি। সখের বসে সবজি বাগান তৈরি করে পেয়েছেন সফলতা।
তার তৈরী করা বাগানে লাউ, কুমড়া, শিম, টমেটো, ডাটা, শসা, নাগা মরিচ, কাচা মরিচ, কচু, লেবু, লাল শাক ইত্যাদির বাহার দেখলে মনেই হবে না যে এটি বিলেতের কোন সবজি বাগান বরং ভাবতে হবে এক টুকরো বাংলাদেশ বলে।
দীর্ঘ প্রচেষ্ঠায় নর্থাম্পটনের ইস্ট হান্সবাড়িতে শামীম গড়ে তুলেছেন নানা জাতের সবজির বাগান। শখের তাগিদেই তিনি শুরু করেন বাগান প্রতিষ্ঠার কাজ। নানা জাতের সবজিতে তার বাগানটি আজ পরিপূর্ণ।
এ প্রসঙ্গে সাংবাদিক এহসানুল ইসলাম চৌধুরী শামীম বলেন, ব্রিটেনের মতো জায়গায় লাউ চাষ করা আলাদাই আনন্দ। গাছে এ বছর প্রায় চল্লিশ টি লাউ ধরেছে। শুধু লাউ নয়, নানা ধরনের শাক সবজিতেও ভরপুর তার বাগান। এসব শাক সবজি আত্মাীয় স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের দিয়ে আনন্দ পান তিনি। তার এই সাফল্যের পেছনে লুকিয়ে আছে পলোনেইট প্রক্রিয়া।
শামীম বলেন, লাউ গাছে পলোনেইট করা অবশ্যই দরকার। এটা না করলে গাছে ভালো ফলন হয় না। বাংলাদেশে লাউ গাছে পলোনেইট করার দরকার হয় না। কারন বাংলাদেশে পোকা-মাকড় প্রচুর আছে। কিন্তু ব্রিটেনে পোকা-মাকড় খুব কম। তাই এখানে লাউ গাছে পলোনেইট করা দরকার হয়। লাউয়ের ফুল নিয়ে ছোটো লাউয়ের কলির মধ্যে ঘষে লাগানোকে পলোনেইট করণ বলে। তাছাড়া যত্ন ছাড়া কোন জিনিষ ভালো হয় না। তাই অবশ্যই যত্ন করতে হবে।
উল্লেখ্য বিগত প্রায় দশ বছর ধরে নিয়মিত বাগান করছেন লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের সদস্য, চ্যানেল এস টেলিভিশনের রিপোর্টার এহসানুল ইসলাম চৌধুরী শামীম।
শামীম তার নর্থাম্পটনের ইস্ট হান্সবাড়ির ঘরের পিছনের জমিতে এই বাগান প্রতিষ্ঠা করেছেন। দেশীয় সবজির চাহিদা পুরণ করতেই তার এই উদ্যোগ।
প্রথমে সখের বসে বাগান করলেও এখন এই বাগান পরিচর্যা করা, নানা জাতের সবজির চাষ করা তার নেশায় পরিণত হয়েছে। এ প্রসঙ্গে শামীম বলেন, ছোট বেলা থেকে আমার বাগান করার শখ ছিলো। দেশে থাকার সময় বাড়ির আঙিনায় নানা ধরনের ফুলের গাছ লাগাতাম। পাশাপাশি অব্যবহৃত জমিতে করতাম মৌসুমি সবজির চাষ। ব্রিটেনে আসার পর থেকেই একটি বাগান প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখতাম। কিন্তু করবো করছি বলে আর হয়ে উঠছিলো না। প্রায় দশ বছর পূর্বে মনস্থির করে কাজে লেগে পরি। আমার বাগানে নানা জাতের সবজির পাশাপাশি নানা ধরনের ফুল গাছও লাগিয়েছি। যখন সবজি বাগানে কাজ করি তখন মনে হয় আমি বাংলাদেশে আমার মাতৃভূমিতে আছি। এই ভালোলাগাটাও আমাকে উদ্বুদ্ধ করছে সবজি চাষের প্রতি।
সাংবাদিক এহসানুল ইসলাম চৌধুরী শামীমের বাগানে সারি সারি লাউ দেখে যে কেউ এই লাউয়ের প্রেমে পড়ে যেতে পারেন । করোনার এই মহাকালে এক টুকরো প্রশান্তি ছায়া ঘিরে রেখেছে সাংবাদিক শামীমের শখের বাগান। আর শখের বাগান দেখতে ব্রিটেনের বিভিন্ন স্থান থেকে অনেক বাঙালি ভীড় করেন সাংবাদিক শামীম এর বাড়িতে। অনেক সময় অনেকেই বাগান করার বিষয়ে তথ্য জানতে চান সাংবাদিক এহসানুল ইসলাম চৌধুরী শামীম এর কাছে। বাগান বিষয়ে মানুষের অনেক প্রশ্নের উত্তর দিতে বা মানুষের আগ্রহ অনেক বেশি উপভোগ করেন বলে সাংবাদিক শামীম জানান ।
শুধু শামীমই নন, গত কয়েক বছর ধরে ব্রিটেনের বিভিন্ন শহরে প্রবাসী বাংলাদেশীরা সবজি বাগানের প্রতি ঝুঁকছেন। বলা যায়, ব্রিটেনের বাঙালিদের কাছে দিনে দিনে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে শবজি চাষ।