পাঁচ মাসে হাফেজ সিয়ামের চোখে বিশ্ব জয়ের স্বপ্ন

Published: 17 December 2021

পোস্ট ডেস্ক :


সিয়াম বিন হায়াতুল্লাহর বয়স মাত্র নয় বছর। এই বয়সেই বড় এক কীর্তি গড়ে দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। মাত্র পাঁচ মাসে পবিত্র কোরআন মুখস্থ করে রীতিমতো হয়ে উঠেছে ‘বিস্ময়বালক’। কুমিল্লা শহরের মোগলটুলী এলাকার আন-নূর তাহফিজুল কুরআন মাদরাসার এই শিক্ষার্থীর অন্তরে কুরআন আর চোখে স্বপ্ন নিজেকে বিশ্বমানের হাফেজ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার। শিক্ষকদের প্রত্যাশা, সিয়ামের মেধার সঠিক পরিচর্যা করতে পারলে সে সাফল্যের শিখরে পৌঁছতে পারবে।

সিয়ামের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার লোনা গ্রামে। বাবা মোহাম্মদ হায়াতুল্লাহ সৌবি আরব প্রবাসী। নিজের কীর্তি নিয়ে সিয়াম যুগান্তরকে বলে— প্রথমে আমি বাবা-মা এবং শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। আমার চেষ্টার পাশাপাশি তাদের পরিশ্রম ও ত্যাগ ছাড়া এই সাফল্য অর্জন করতে পারতাম না। আমার বাবা-মা অনেক খুশি। আমার মা এখন গর্ব করে বলেন যে, আমি হাফেজের মা।

হাফেজ হওয়ার পেছনে সিয়ামেরও যথেষ্ট ত্যাগ রয়েছে। সিয়াম জানায়— মাদরাসার আনুষ্ঠানিক ছুটি ছাড়া আমি বাড়িতে যাই না। কারণ, মাদরাসায় থাকলে নামাজ, পড়ালেখা সব সময়মতো করতে পারি। বাড়ি গেলে যদি পড়া ভুলে যাই, সেজন্য মাদরাসাতেই থাকার চেষ্টা করি।

উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে একজন বড় আলেম হতে চায় সিয়াম। তার স্বপ্ন নিজেকে আন্তর্জাতিকমানের হাফেজ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা। বড় আলেম হয়ে ইসলাম ও দেশের সেবা করতে চায় সে। সবার কাছে সে দোয়াপ্রার্থী।

মাদরাসার প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা আবদুস সালাম আইয়ূবী বলেন, শুধু সিয়াম নয়, সব শিক্ষার্থীদের আমরা সমানভাবে পরিচর্যা করি। আল্লাহ তায়ালার বিশেষ রহমত ছাড়া এত কম সময়ে হাফেজ হওয়া সম্ভব না। সিয়ামকে নিয়ে আমাদের পরিকল্পনা আছে। আন্তর্জাতিক হিফজ্ প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার যোগ্য হিসাবে ওকে গড়ে তুলব।

ভাইস প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা মাহদী হাসান বলেন, হেফজ শুরুর মাসখানেকের মধ্যে আমরা সিয়ামের বিশেষ প্রতিভা টের পাই। পরে ওর প্রতি আরও যত্নশীল হই। শুরু থেকেই সে চার-পাঁচ পৃষ্ঠা মুখস্ত শোনাতো। এমনকি দিনে ১৫ পৃষ্ঠা পর্যন্তও শুনিয়েছে। আগে-ভাগে বুঝতে পারলে আরও কম সময়েই সে হাফেজ হতে পারত। তার সাফল্যে অন্য শিক্ষার্থীরাও এখন উৎসাহ পাচ্ছে।

২০১৯ সালের ১৫ জুন প্রতিষ্ঠিত আন-নূর তাহফিজুল কুরআন মাদরাসায় মোট শিক্ষার্থী ১৫০ জন। আটজন শিক্ষকসহ মোট স্টাফ ১৪ জন।