হ্যাকারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলো মেটা
পোস্ট ডেস্ক :
মেটার অধিনে থাকা সোশ্যাল মিডিয়াগুলোতে সক্রিয় হ্যাকারদের দেড় হাজারের বেশি একাউন্ট নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা হ্যাকারদের শায়েস্তা করতে উঠে পড়ে লেগেছে। এরই অংশ হিসাবে হ্যাকারদের পরিচালিত একাউন্ট ও পেজগুলো শনাক্ত করে নিষিদ্ধ করেছে কোম্পানিটি। এসব একাউন্ট থেকে বিশ্বজুড়ে ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষকে নজরদারি করা হতো। এসব নজরদারির আসল টার্গেট ছিলেন একশরও বেশি দেশের সাংবাদিক, অধিকারকর্মী ও ভিন্ন মতাবলম্বীরা। এ খবর দিয়েছে আল-জাজিরা।
মেটা জানিয়েছে, নিষিদ্ধ করা পেজগুলো ব্যবহার করেই মূলত টার্গেটের থেকে তথ্য হাতিয়ে নেয়া হতো। আর এসব অ্যাকাউন্ট ও পেজ ব্যবহার করত সাতটি প্রতিষ্ঠান। সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন আইনপ্রণেতারা বিশ্বজুড়ে নজরদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দেশটির সরকারকে চাপ দিতে শুরু করেছেন।
এমন পদক্ষেপের অংশ হিসেবে ইসরাইলের আড়িপাতার সফটওয়্যার নির্মাতাপ্রতিষ্ঠান এনএসও গ্রুপের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এনএসওর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছে মেটাও। এ প্রসঙ্গে মেটার নিরাপত্তা নীতি নির্ধারনি বিভাগের প্রধান নাথানিয়েল গ্লেইচার বলেন, এনএসওর মতো শুধু একটি প্রতিষ্ঠান নয়, আড়িপাতার জন্য সফটওয়্যার তৈরি করতে যেসব প্রতিষ্ঠান কাজ করে থাকে সেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
এই দফায় যেসব প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তারমধ্যে রয়েছে ইসরাইলি কোম্পানি ব্ল্যাক কিউব। এই প্রতিষ্ঠানটিকে ব্যবহার করেছিলেন ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের ঘটনার দায়ে সাজাপ্রাপ্ত হলিউডের প্রভাবশালী প্রযোজক হার্ভি ওয়াইনস্টিন। ভারতের বেলট্রক্স নামের একটি প্রতিষ্ঠানের নাম এসেছে। এছাড়া নজরদারির সঙ্গে যুক্ত ইসরাইলের আরও কয়েকটি কোম্পানির নামও এসেছে। এগুলো হচ্ছে, কবওয়েবস টেকনোলজিস, কগনাইট, ব্লুহোয়াক সিআই। এ ছাড়া উত্তর মেসিডোনিয়ার সাইট্রক্স ও চীনের আরেকটি প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টও মুছে দিয়েছে ফেসবুক।
যদিও এসব কোম্পানিগুলো বরাবরই দাবি করে আসছে যে, তাদের এই নজরদারির আসল টার্গেট হচ্ছেন সন্ত্রাসীরা। এমন দাবির প্রেক্ষিতে কয়েক মাস ধরে ব্যাপক অনুসন্ধান চালিয়েছে মেটা। এতেই দেখা গেছে, এই নজরদারির উদ্দেশ্য হচ্ছে সাংবাদিক ও অধিকারকর্মীদের তথ্য হাতিয়ে নেয়া। বিশ্বজুড়ে থাকা কর্তৃত্ববাদী সরকারগুলোর সমালোচকদের তথ্যও বিক্রি করে এসব কোম্পানি। তারা হ্যাকিং এর মাধ্যমে টার্গেটের তথ্য হাতিয়ে নেন। আবার কখনো ভুয়া প্রোফাইল তৈরি করে টার্গেটের বিশ্বাস অর্জন করেন। এরপর তাকে ফাঁদে ফেলেন। টার্গেটের ফোন ও কম্পিউটার থেকে তথ্য চুরিও করে থাকেন হ্যাকাররা। নিরবে চালু করে দেন মোবাইলের মাইক্রোফোন, ক্যামেরা ও ট্রাকিং।