পোস্ট ডেস্ক :
রোজা ইসলামের অন্যতম রুকন। প্রতি বছর রমজান মাসে প্রাপ্ত বয়ষ্ক সুস্থ মুসলিমের জন্য রোজা রাখা ফরজ। আল্লাহ তাআলা বলেন, হে ঈমানদাররা, তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর করা হয়েছে, যাতে তোমরা খোদাভীতি অর্জন করতে পার। ’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৩)

অনেক কাজ আছে যার কারণে রোজা ভঙ্গ হবে না।

নিম্নে তা তুলে ধরা হলো –

এক. ভুল করে কোনো কিছু খেয়ে ফেললে রোজা ভঙ্গ হবে না [বুখারি শরিফ ১/২৫৯]।

দুই. মশা-মাছি, কীটপতঙ্গ ইত্যাদি অনিচ্ছাকৃত পেটের ভেতর ঢুকে গেলেও রোজা ভাঙবে না [মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা ৬/৩৪৯]।

তিন. অনিচ্ছাকৃত বমি হলে [এমনকি মুখ ভরে হলেও] রোজা ভাঙবে না। তেমনি বমি মুখে এসে নিজে নিজেই ভেতরে চলে গেলেও রোজা ভাঙবে না [তিরমিযী ১/১৫৩]

চার. রোজার কথা ভুলে গিয়ে পানাহার করলে রোজা নষ্ট হবে না। তবে রোজা স্মরণ হওয়ামাত্র পানাহার ছেড়ে দিতে হবে [মুসলিম ১/২০২]।

পাঁচ. দাঁত থেকে রক্ত বের হয়ে পেটের মধ্যে না গেলে রোজা ভাঙবে না [শামী ৩/৩৬৭]। কোনো খাদ্যদ্রব্য বুট বা ছোট ছোলার কম পরিমাণ যদি দাঁতের সঙ্গে লেগে থাকে ও গলার ভেতর চলে যায়, তাহলে রোজা ভাঙবে না [হিন্দিয়া ১/২০২]। হ্যাঁ, দাঁত থেকে বের করে হাতে নিয়ে স্বেচ্ছায় খেয়ে ফেললে রোজা নিশ্চিতভাবে ভেঙে যাবে [হিন্দিয়া ১/২০২]।

ছয়. অতিরিক্ত গরম বা পিপাসার কারণে যদি গোসলের মাধ্যমে শরীরকে ঠাণ্ডা করা হয়, তাহলেও রোজার কোনো ক্ষতি হবে না [হিন্দিয়া ১/২০৩]।

সাত. কুলি করার পর পানির অবশিষ্ট আর্দ্রতা থুথুর সঙ্গে গিলে ফেললে রোজার কোনো ক্ষতি হবে না [হিন্দিয়া ১/২০৩]। ঘাম অথবা চোখের অশ্রুর দু-এক ফোঁটা যদি অনিচ্ছায় মুখে চলে যায়, তাহলে রোজা নষ্ট হবে না [হিন্দিয়া ১/২০৩]।

আট. কানের ময়লা বাইর করার দ্বারাও রোজা ভাঙবে না [মারাকিল ফালাহ ৩৪২]। যদি পান খাওয়ার পরে খুব ভালোভাবে কুলি করার পরও রোজা অবস্থায় থুথুর সঙ্গে লাল রং বের হয়, তাহলে কোনো সমস্যা নেই [হিন্দিয়া ১/২০৩]।

নয়. নাক এত জোরে সাফ করা, যার ফলে কফ গলার মধ্যে চলে যায়, তাহলেও কোনো সমস্যা নেই [দুররে মুখতার ৩/৩৭৩]।

দশ. রোজা অবস্থায় আতর বা ফুলের ঘ্রাণ নিলেও কোনো সমস্যা নেই [মারাকিল ফালাহ, ৩৬১]। শরীর বা মাথায় তেল ব্যবহার করলে রোজা ভাঙবে না, বরং তা বৈধ [মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক ৪/৩১৩]।

এগারো. রোজা অবস্থায় অনিচ্ছাকৃত মুখের মধ্যে ধুলাবালি ঢুকে গেলে রোজা ভাঙবে না [দুররে মুখতার ৩/৩৬৬]। যদি রোজাদারের গোসল করার সময় অথবা বৃষ্টিতে ভেজার সময় কানের মধ্যে অনিচ্ছায় পানি চলে যায়, তাহলে সর্বসম্মতিক্রমে রোজা নষ্ট হবে না [ফাতহুল কাদীর ২/৩৪৭]।

সুস্থ অবস্থায় রোজার নিয়ত করার পর যদি অজ্ঞান, অচেতন বা পাগল হয়ে যায়, তাহলে রোজা নষ্ট হবে না [সুনানে কুবরা বায়হাকি ৪/২৩৫]।