ফাঁদে ফেলে গৃহবধূকে বিয়ে করেন কবিরাজ, ছেলেকে দিয়ে ধর্ষণ
পোস্ট ডেস্ক :
নীলফামারীর জলঢাকায় চিকিৎসা নিতে আসা এক গৃহবধূকে ফাঁদে ফেলে বিয়ে করার অভিযোগ উঠেছে মিজানুর রহমান (৫০) নামের এক কবিরাজের বিরুদ্ধে। পরে ওই নারীর কাছ থেকে মুক্তি পেতে নিজের ছেলে ও তার বন্ধুদের দিয়ে ধর্ষণ করান বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারীর মা বাদী হয়ে মামলা করলে কবিরাজ মিজানুর রহমান ও তার ছেলে মনিবুর রহমানকে (২৫) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ভুক্তভোগী ওই নারী রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে চিকিৎসাধীন।
কবিরাজ মিজানুর জলঢাকা উপজেলার বগুলাগাড়ী ব্রিজপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
মামলায় অন্য আসামিরা হলেন কবিরাজের দ্বিতীয় ছেলে কাল্টু মামুদ (২২), প্রথম স্ত্রী মনিজা বেগম (৪৫) ও বড় ভাই তইবুর রহমান (৫৬)। এ ছাড়াও পাঁচজনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়।
মামলা সূত্রে জানা যায়, দুই বছর আগে ওই নারী অসুস্থ হয়ে জলঢাকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য আসেন। সেখানে যাওয়া-আসার পথে কবিরাজ মিজানুর রহমানের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। মিজানুর ওই নারীকে কবিরাজি চিকিৎসার ফাঁদে ফেলে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এর এক পর্যায়ে ওই নারীর পরিবারকে বোঝানো হয় তার (নারীর) স্বামীকে তালাক না দিলে কোনো চিকিৎসা কাজে আসবে না। কবিরাজের কথা বিশ্বাস করে মেয়েকে রোগমুক্তির আশায় বিবাহবিচ্ছেদ ঘটায় তার পরিবার। পরে মিজানুর চিকিৎসার নামে ও বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ওই নারীর সঙ্গে দৈহিক সম্পর্ক করেন।
এক পর্যায়ে ভুক্তভোগী নারীর চাপের মুখে পড়ে উপজেলার রাজারহাট কাজি অফিসে গিয়ে গত ৯ সেপ্টেম্বর তাকে বিয়ে করেন। এরপর একটি ভাড়া বাসায় ভুক্তভোগীকে রেখে নির্যাতন করে আসছিলেন কবিরাজ। পরে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে ভাড়া বাসায় যাওয়া বন্ধ করে দেন কবিরাজ। স্থানীয়দের সহযোগিতায় জলঢাকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন তিনি। চিকিৎসাধীন অবস্থায় কবিরাজ স্বামী মিজানুরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে ৬ অক্টোবর সন্ধ্যায় কবিরাজের বাড়িতে যান তিনি। তখন কবিরাজ, তার স্ত্রীসহ অন্য সদস্যরা মিলে তাকে শারীরিক নির্যাতন করে বাড়ির বাইরে বের করে দেন। সেখান থেকে মিজানুরের ছেলে মনিবুর রহমান আত্মীয়ের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার নাম করে ওই নারীকে বাড়ির অদূরে তিস্তা সেচ ক্যানেলের পাশে অজ্ঞাতপরিয় আরো পাঁচজন মিলে ধর্ষণ করে অচেতন অবস্থায় রেখে পালিয়ে যান। গভীর রাতে তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ভুক্তভোগী ওই নারীর মামা হাফিজুর রহমান জানান, ধর্ষণের ঘটনায় একমাত্র কবিরাজের ছেলেকে চিনতে পেরেছে আমার ভাগিনি। অন্য আরো চার থেকে পাঁচ জন ছিলেন বলে জানিয়েছেন। এ ঘটনায় তার মা বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার বাদী বলেন, ‘ভণ্ড ওই মিজানুর চিকিৎসার নামে আমার মেয়ের সাজানো সংসার নষ্ট করেছে। শেষে চাপের মুখে বিয়ে করলেও অনেক নির্যাতনের পর তাড়াতে না পেরে অপবাদ চাপাতে ছেলেকে দিয়ে ওই ধর্ষণের ঘটনা ঘটিয়েছেন। আমি এর বিচার চাই। ‘
জলঢাকা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ কবীর বলেন,’কবিরাজ মিজানুর ও তার ছেলে মনিবুরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে। ‘