সাগরে ভাসছে দুই শতাধিক মানুষ
পোস্ট ডেস্ক :

কক্সবাজারের টেকনাফ উপকূল হয়ে সাগরপথে মালয়েশিয়াগামী একটি ট্রলার সাগরে বিকল হয়ে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। ট্রলারটিতে দুই শতাধিক যাত্রী রয়েছে। এতে ৫০ জন বাংলাদেশি এবং উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্পে বসবাসরত রোহিঙ্গা নাগরিক রয়েছে। রোহিঙ্গা নাগরিকদের মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে বলে জানা গেছে।
ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়া ট্রলারটি চার দিন ধরে সাগরে ভাসমান রয়েছে। অনিশ্চিত দুর্ঘটনার আশঙ্কায় যাত্রীদের সবাই কান্নাকাটি শুরু করেছে। ট্রলারে থাকা বাংলাদেশি স্থানীয় যুবকদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
মালয়েশিয়াগামী ইঞ্জিন বিকল ট্রলারে থাকা বাংলাদেশিদের বেশির ভাগ টেকনাফ, উখিয়া ও বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাসিন্দা। টেকনাফ সদর ইউনিয়নের হাবিরছড়া গ্রামের বাসিন্দা মো. কবির বলেন, ‘আমার ছেলে আকতার ফারুক (১৭) এ মাসের শুরুতে কাউকে কিছু না জানিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। দু-তিন দিন খোঁজাখুঁজির পর বন্ধু-বান্ধবদের কাছে খবর পাই, তারা মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য ট্রলারে উঠেছে। এরপর তিন দিন আগে মালয়েশিয়ায় থাকা এক আত্মীয়র মাধ্যমে ছেলে খবর পাঠিয়েছে, তাদের বহন করা ট্রলারটির ইঞ্জিন সাগরে বিকল হয়ে গেছে। ’
নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, ‘ছিদ্দিক আহমদ (৩০) নামে আমার এক ভাগিনা দালালদের ৪০ হাজার টাকা দিয়ে সাগরপথে মালয়েশিয়া রওনা দিয়েছে। পরে গত বুধবার খবর পাই, তাদের বহনকারী ট্রলারটি ইঞ্জিন বিকল হয়ে সাগরে ভাসছে। এখন আমরা পুরো পরিবার দুশ্চিন্তায় রয়েছি। ’
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘মালয়েশিয়াগামী ট্রলারে স্থানীয় লোকজন থাকার বিষয়টি এখনো কেউ জানায়নি। ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকেও তাঁদের ব্যাপারে কিছু জানানো হয়নি। ’
গতকাল রবিবার সরেজমিনে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের হাবিরছড়া গ্রামে গিয়ে জানা যায়, ওই গ্রামসহ পাশের দরগারছড়া, মিঠাপানিরছড়া ও রাজারছড়া গ্রামের প্রায় ৩৫ জন যুবক ইঞ্জিন বিকল হয়ে যাওয়া মালয়েশিয়াগামী ট্রলারটিতে রয়েছেন। নিজেদের সন্তানদের এমন অবস্থায় তাঁদের ঘরে কান্নার রোল পড়েছে।
ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর দাবি, মালয়েশিয়াগামী ট্রলারটি প্রায় দুই সপ্তাহ আগে টেকনাফ উপকূল থেকে ছেড়েছে। বর্তমানে ট্রলারের সঙ্গে মালয়েশিয়া থেকে আত্মীয়-স্বজনরা স্যাটেলাইট ফোনের মাধ্যমে কথা বলছে। স্যাটেলাইট ফোনে ট্রলার মাঝির দেওয়া তথ্য মতে, তারা ভারতের আন্দামান দ্বীপের কাছাকাছি রয়েছে বলে ধারণা। তাদের অদূরে একটি নৌবাহিনীর বড় জাহাজও দেখা গেছে বলে জানায়। তবে ট্রলারের যাত্রীদের বড় আশঙ্কা ও ভয় হচ্ছে, খাদ্য ও পানযোগ্য পানির সংকট নিয়ে। তাদের খাবার ও পানি প্রায় শেষ হয়ে গেছে বলেও জানিয়েছে। তারা এখন তাদের উদ্ধারে কান্নাকাটি করে দেশে মা-বাবার কাছে খবর পাঠাচ্ছে।




