হবিগঞ্জে সংবাদদাতা :

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে পুলিশের উপস্থিতিতে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে শহরজুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। শুক্রবার (২৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে শহরের নতুন বাজার মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, গত ৫ ডিসেম্বর হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোশারফ হোসেন বাপ্পী ও সাধারণ সম্পাদক ফয়জুর রহমান রবিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে নবীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটিতে নাজিম উদ্দৌলা চৌধুরীকে আহ্বায়ক, সজীব খান, সৈকত আহমেদ, ইমরান রেজাকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়।

কমিটি ঘোষণার পরপর কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দলীয় প্যাডে জাহিদুল ইসলাম রুবেলকে আহ্বায়ক করে অপর একটি কমিটির কাগজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছাড়িয়ে পড়ে। এর পর থেকে পাল্টাপাল্টি কমিটিকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এ নিয়ে শহরে উভয় পক্ষের পৃথক শোডাউন লক্ষ করা যায়।
তবে নাজিম উদ্দৌলা চৌধুরীকে আহ্বায়ক করে দেওয়া কমিটি বৈধ বলে জানায় জেলা ছাত্রলীগ। এ নিয়ে কয়েক দিন ধরে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে আসছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার দুপুরে নবীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক নাজিম উদ্দৌলা চৌধুরী ও তার লোকজন জুয়েল ম্যানশনের সামনে অবস্থান নেয়। অপরদিকে জাহিদুল ইসলাম রুবেলের নেতৃত্বে অপর একটি পক্ষ শহরের রাজা কমপ্লেক্সের সামনে অবস্থান নেয়। দুপুর থেকে শহরজুড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। বিকেলে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটিকে স্বাগত জানিয়ে নবীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক নাজিম উদ্দৌলা চৌধুরীর নেতৃত্বে নবীগঞ্জ পৌর ও কলেজ শাখার নেতৃবৃন্দ আনন্দ মিছিল বের করে। মিছিলটি নবীগঞ্জ শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে নতুন বাজার মোড়ে পথসভায় মিলিত হয়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতিতে জাহিদুল ইসলাম রুবেল গ্রুপের নেতাকর্মীরা দেশি অস্ত্র নিয়ে নাজিম উদ্দৌলা চৌধুরী ও তার নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করে। পরে উভয় গ্রুপের নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে চার-পাঁচজন নেতাকর্মী আহত হন। তবে তাৎক্ষণিক তাদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।

জাহিদুল ইসলাম রুবেল অভিযোগ করে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বিএনপি-জামায়াতের নাশকতার পরিকল্পনার বিরুদ্ধে আমরা শহরে অবস্থান নিই। এ সময় নাজিম উদ্দৌলার নেতৃত্বে আমাদের ওপর হামলা করা হয়। পরে আমরা তাদের প্রতিহত করি। ’

এদিকে নাজিম উদ্দৌলা চৌধুরী বলেন, ‘জেলা ছাত্রলীগের দিকনির্দেশনায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটিকে স্বাগত জানিয়ে আমরা মিছিল করি। মিছিল শেষে নতুন বাজার মোড়ে পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় জাহিদ রুবেলের নেতৃত্বে তার অনুসারীরা আমাদের ওপর হামলার চেষ্টা করে। আমরা তাদের প্রতিহত করে ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়। ’

নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি (তদন্ত) গোলাম মুর্শিদ সরকার বলেন, ‘ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সামান্য ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। তবে পুলিশ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। ’