১১ লাখ গাজাবাসীকে সরে যেতে ইসরাইলের আল্টিমেটাম

Published: 13 October 2023

পোস্ট ডেস্ক :


ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় বসবাসরত প্রায় ১১ লাখ বাসিন্দাদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ওয়াদি গাজার দক্ষিণে সরে যেতে বলেছে ইসরায়েল। আগামী দিনগুলোয় সামরিক অভিযানের কথা জানিয়ে এমন আল্টিমেটাম দিয়েছে তারা।

ইসরায়েলের মুখপাত্র জোনাথন কনরিকাস সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে বলেছেন, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের ‘মানবিক পদক্ষেপের’ অংশ হলো প্রাথমিকভাবে সরিয়ে নেওয়ার আদেশ। আমাদের লক্ষ্য জীবন বাঁচানো। বেসামরিকরা আমাদের শত্রু নয়।

পোস্টে তিনি আরও বলেন, সামরিক বাহিনী গাজা উপত্যকায় লক্ষ্যবস্তুতে হামলার কারণে বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা কমিয়ে আনতে চায় এবং আন্তর্জাতিক সশস্ত্র সংঘাতের আইনের প্রতি সম্পূর্ণরূপে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

এর আগে জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক জানিয়েছিলেন, ইসরায়েল যে দাবি করেছে তাতে ওই অঞ্চলের অন্তত ১১ লাখ অধিবাসীকে সরে যেতে হবে। যা গাজার জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক। জাতিসংঘ ইসরায়েলকে এ আল্টিমেটাম প্রত্যাহারের জন্য জোরালো দাবি জানিয়েছে।

এদিকে, দখলদার ইসরায়েলের এমন আল্টিমেটামকে ‘ভুয়া প্রোপাগান্ডা’ বলে আখ্যা দিয়েছে হামাস। সেই সঙ্গে গাজাবাসীকে এই ‘ফাঁদে’ না নিয়ে নিজ নিজ অবস্থানে থাকতে বলেছে তারা।

গত ছয় দিনে ফিলিস্তিনে অন্তত ছয় হাজার বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে গাজা উপত্যকায় এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৫৩৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এরমধ্যে বৃহস্পতিবারের হামলায় অন্তত ১৫০ জন প্রাণ হারিয়েছেন।

গাজার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নিহতদের মধ্যে ৪৪৭ শিশু ও ২৪৮ নারী ছাড়াও ১০ জন স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছে। এছাড়াও অধিকৃত পশ্চিম তীরে মৃতের সংখ্যা ৩১ এ পৌঁছেছে। সেই সঙ্গে ৬০০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছে। সবমিলিয়ে গত ছয় দিনে অন্তত ৬ হাজার ৬১২ জন বেসামরিক ফিলিস্তিনি নাগরিক আহত হয়েছেন।

 

জাতিসংঘ বলছে- সাম্প্রতিক সময়ের এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত ৪ লাখ ২৩ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছে। সংস্থাটির মানবিক বিষয়ক সমন্বয়ের কার্যালয় (ইউএনওসিএ) জানিয়েছে, গাজায় বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা বৃহস্পতিবার আরও ৮৪ হাজার ৪৪৪ জন বেড়েছে। ফলে বর্তমানে এই সংখ্যা ৪ লাখ ২৩ হাজার ৩৭৮ এ পৌঁছেছে।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। এর জবাবে গাজার শাসক গোষ্ঠীটিকে ‘মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়ার’ প্রতিজ্ঞা করে পাল্টা অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েল। ইতোমধ্যেই গাজার বিদ্যুৎ, পানি, খাবার সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এর ফলে ভয়াবহ মানবিক সংকট তৈরি হয়েছে উপত্যকাটিতে।