যেভাবে পরীমনির সঙ্গে সখ্য গড়ে উঠেছিল সাকলায়েনের
পোস্ট ডেস্ক :
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গোলাম সাকলায়েন ঢাকাই চলচ্চিত্রের আলোচিত অভিনেত্রী পরীমনির সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কের কারণে চাকরি হারাচ্ছেন। অভিনেত্রীর সঙ্গে সম্পর্কের সময় গোয়েন্দা-গুলশান বিভাগের এডিসির দায়িত্বে ছিলেন তিনি।
শোবিজ অঙ্গনের আলোচিত মুখ পরীমনির সঙ্গে সাকলায়েনের সম্পর্কের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর নানা সমালোচনা ও চর্চা শুরু হয়। এ অবস্থায় পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্টে (পিওএম) বদলি করা হয় তাকে। তারপর ঝিনাইদহ ইনসার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে বদলি করা হয় সাকলায়েনকে।
পরীমনিকাণ্ডে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাকলায়েনকে বাধ্যতামূলক অবসর
জানা যায়, ঢাকার অদূরে তুরাগতীরে বহুল আলোচিত বোট ক্লাব মামলার তদন্ত তদারক কর্মকর্তা ছিলেন পুলিশের বড় কর্মকর্তা সাকলায়েন। ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে করা পরীমনির মামলার তদন্ত চলার সময় নায়িকা পরীমনির সঙ্গে সখ্য গড়ে ওঠে তার।
র্যাবের হাতে পরীমনি গ্রেফতারের পর গোয়েন্দা পুলিশের ঊর্ধ্বতন এ কর্মকর্তার সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতার বিষয়টি আলোচনায় উঠে আসে। তাদের অন্তরঙ্গ সম্পর্ক নিয়ে চলে নানা গুঞ্জন।
পরীমনির গাড়ি চালক নাজির হোসেন সেই সময় একটি বেসরকারি টেলিভিশনের কাছে ঘটনার বর্ণনা দেন।
২০২১ সালের আগস্ট মাসে পরীমনি-সাকলায়েনকে নিয়ে একটি সিসিটিভি ফুটেজ ফাঁস হয়েছে। সেখানে দেখা যায়, রাজাবাগ পুলিশ অফিসার্স কলোনির মধুমতি ভবনের গেটের সামনে ১ আগস্ট সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে একটি সাদা গাড়ি এসে থামে। লাল রংয়ের টি-শার্ট পরিহিত একজন প্রথমে নামেন। এরপর কোলে একটি কুকুরসহ সাদা রংয়ের জামা পরে নামেন নায়িকা পরীমনি।
রিসিপশনে থাকা সদস্যদের কাছ থেকে চাবি নিয়ে দুজন লিফটে প্রবেশ করেন। পরে গাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়া হয় একটি ট্রলি ব্যাগ। প্রায় ১৮ ঘণ্টা পর রাত দেড়টার দিকে ওই ভবনের সামনে আবার আসে পরীমনির গাড়ি। কিছুক্ষণ পর বেরিয়ে যাওয়ার সময় পরীমনির পরনে ছিল কালো রংয়ের পোশাক।
পরীমনির গাড়িচালক নাজির জানান, সকালে গিয়ে আমি চলে আসছিলাম, আবার রাতে গিয়ে নিয়ে আসছি।
বনানীর বাসা থেকে যখন সাকলায়েন গেলেন তখন তিনি কী পরা ছিলেন- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সাকলায়েন সাহেব সিভিল ড্রেস (প্যান্ট-শার্ট) পরা ছিলেন।
এর আগেও হাতিরঝিল এলাকায় একই গাড়িতে তারা দুজন সময় কাটিয়েছেন, ঘোরাঘুরি ও মদপান করেছেন বলে জানান নাজির।
বোট ক্লাব মামলার তদন্ত করতে গিয়ে পরীমনির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) গুলশান বিভাগের এডিসি গোলাম সাকলায়েন। বিপুল মাদকসহ পরীমনিকে গ্রেফতারের পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদে এমনটাই জানতে পেরেছেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।
জিজ্ঞাসাবাদে পরীমনি জানিয়েছেন, নিয়মিত কথা বলতে বলতে একপর্যায়ে গোলাম সাকলায়েনের সঙ্গে সম্পর্ক হয়ে যায় তার। এরপর তারা নিয়মিত গাড়ি নিয়ে ঘুরতে যেতেন। এমনকি সাকলায়েন তার বাসায় নিয়মিত অবাধে যাতায়াত করতেন।
সাকলায়েন পরীমনির সম্পর্কের ঘটনায় পুলিশের যে তদন্ত হয় সেখানেও দুজনের সম্পর্কের রসায়ন বেরিয়ে এসেছে। এতে উঠে এসেছে সাকলায়েনই শুধু পরীর বাসায় যেতেন না। সাকলায়েনের স্ত্রীর বাসায় না থাকলে পরীমনি তার বাসায় নিয়ে সময় কাটাতেন। সাকলায়েনের বাসায় পরীর ১৭ ঘণ্টা সময় কাটানোর ঘটনাও ঘটেছে।
পরীমনির জন্মদিনে সাকলায়েনের উপস্থিতি ও তাকে নিয়ে নায়িকার নাচগানের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সাকলাইন এসবই করেছেন তার পেশাগত দায়িত্বের বাইরে।