বাংলাদেশে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকের প্রাণহানি এবং  সৃষ্ট অস্থিরতা-সহিংসতায় লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের ক্ষোভ-নিন্দা

Published: 21 July 2024

Press release

বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতির সংস্কার দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ঘিরে দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়া সহিংসতায় শতাধিক প্রাণহানি এবং সর্বশেষ কারফিউ জারির মতো ভয়াবহ পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাব । ক্লাবের পক্ষ থেকে এই উদ্বেগের বিষয়টি লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাই কমিশনার সাইদা মুনা তাসনিমের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারকে অবগত করা হবে।

 

প্রেস ক্লাব সভাপতি মুহাম্মদ জুবায়ের, সাধারণ সম্পাদক তাইসির মাহমুদ ও কোষাধ্যক্ষ সালেহ আহমেদ এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, যে কোনো সাধারণ মানুষের মতো শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ করার গণতান্ত্রিক অধিকার রয়েছে । কিন্তু আমরা বিস্ময়ের সাথে লক্ষ্য করেছি, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হিসেবে সরকারের কোটানীতি সংস্কারের দাবীতে আন্দোলন করতে গিয়ে তারা ব্যাপক বাধার সম্মুখীন হওয়ার পাশাপাশি ন্যাক্কারজনক আক্রমণ ও অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে । বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদেরও মারমুখী হতে দেখা গেছে। সব মিলিয়ে সৃষ্ট অনাকাঙ্ক্ষিত সহিংসতা নিয়ে আমরা চরমভাবে উদ্বিগ্ন এবং এর বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। একই সাথে আমরা আশা করছি, সরকার দ্রুততার সাথে বিষয়টির সুষ্ঠু ও সন্তোষজনক সমাধানে উদ্যোগী হবে, যাতে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহতার দিকে ধাবিত হতে না পারে।

বিবৃতিতে বলা হয়, এই ঘটনায় ইতোমধ্যে শতাধিক প্রাণ ঝরে গেছে । শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের পাশাপাশি অন্তত দুজন সাংবাদিকের প্রাণহানি হয়েছে। শত শত মানুষ আহত হওয়াসহ ব্যাপক রাষ্ট্রীয় সম্পদেরও ক্ষতি সাধিত হয়েছে। একই সাথে ‘ইন্টারনেট ব্লাক আউট’-এর ঘটনা আমাদেরকে শঙ্কিত করেছে।

 

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, এই পরিস্থিতিতে বিশ্ব মিডিয়ায় প্রকাশিত নেতিবাচক চিত্র যেমন রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুন্নের কারণ হয়েছে একই সাথে জাতি হিসেবেও আমাদের লজ্জিত করেছে। শুধু তাই নয়, যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশী কমিউনিটিতেও এর প্রভাব পড়েছে। অধিকার আদায়ের আন্দোলন যেমন দেশজুড়ে জাগরণ সৃষ্টি করেছে, তেমনি আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ ও জানমালের ব্যাপক ক্ষতিসাধন চরম ভীতির সৃষ্টি করেছে । উদ্ভুত পরিস্থিতির সংবাদ করতে গিয়ে বিলেতে বাংলা মিডিয়ার সাংবাদিকরাও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন।

 

লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাব নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতার মাধ্যমেই জাতি হিসেবে আমরা সর্বসাধারণের মত প্রকাশ, শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ ও মিছিল-সমাবেশের অধিকারসহ নানা সার্বজনীন মানবাধিকার নিশ্চিত করি। আমরা জোরালোভাবে আশা করি, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো সবার মৌলিক গণতান্ত্রিক অধিকারে আর বাধা হয়ে দাঁড়াবে না। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, সরকার, রাষ্ট্রের বিভিন্ন ফোর্স এবং দেশের আপামর মানুষ স্বাধীনতার মূল নীতিগুলোকে সত্যিকার অর্থে মর্যাদা দেবেন । সবার সহযোগিতা ও দায়িত্বশীল ভূমিকায় চলমান সংকট ও অস্থিরতার অবসান ঘটবে।

 

প্রেস ক্লাব নেতৃবৃন্দ সহিংস ঘটনায় নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করে তাঁদের শোকসন্তপ্ত পরিবার পরিজনের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন । যারা আহত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তাদের আশু সুস্থতা কামনা করেন।

লন্ডন, ২০ জুলাই ২০২৪।