পদত্যাগ করলেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান
বিশেষ সংবাদদাতা :
শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করলেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলে জানিয়েছেন অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।
শনিবার (১০ আগস্ট) বেলা আড়াইটায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড পেজ থেকে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় তিনি এ তথ্য জানান।
সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে আইন উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, পরবর্তী (প্রধান বিচারপতি পদত্যাগ) প্রক্রিয়াটা হচ্ছে আইন উপদেষ্টা হিসেবে আমার স্বাক্ষরে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দপ্তরে যাবে। তিনি এখন রংপুর বা সম্ভবত বিমানে আছেন, তিনি নামার পর তার সম্মতি সাপেক্ষে এটা রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। রাষ্ট্রপতি এটা গ্রহণ করলে কার্যকর হবে। এরপর নতুন প্রধান বিচারপতি নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হবে। এ বিষয়ে আমি আর কিছু বলতে চাচ্ছি না।
কে হচ্ছেন নতুন প্রধান বিচারপতি- জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটা আমরা বলবো না, তবে একটা জিনিস বলবো, প্রধান উপদেষ্টার মতামত গ্রহণ করবো। কনসার্ন যারা আছেন তাদের সঙ্গে কথা বলবো। আমার মন্ত্রণালয় থেকে যদি এ বিষয়ে কোনো ভূমিকা রাখার থাকে, চেষ্টা করবো সবচেয়ে যোগ্য, সৎ এবং নিরপেক্ষ একজন মানুষকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেওয়ার।
আন্দোলনকারী ছাত্রদের আপিল বিভাগের আরও কয়েকজন বিচারপতির পদত্যাগের দাবি ছিল- বিষয়ে আসিফ নজরুল বলেন, আপিল বিভাগের আরও যারা আছেন, তাদের পদত্যাগের দাবির কথা আমি শুনেছি। শুনেছি অন্যান্যরাও পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে এখনো পদত্যাগপত্র আইন মন্ত্রণালয়ে আসেনি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক ভিডিও বার্তায় ড. আসিফ নজরুল বলেন, প্রিয় দেশবাসী আপনার সঙ্গে একটি বিশেষ সংবাদ তাৎক্ষণিক শেয়ার করার প্রয়োজন অনুভব করছি। আমাদের প্রধান বিচারপতি কিছুক্ষণ আগে পদত্যাগ করেছেন। ওনার পদত্যাগপত্র এরই মধ্যে আইন মন্ত্রণালয়ে এসে পৌঁছেছে। এটা উপযুক্ত প্রসেসিংয়ের জন্য আমরা কালবিলম্ব না করে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠিয়ে দেবো এবং আশা করবো এটা খুব দ্রুত কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। আপনাদের জন্য আমি আরও জানাচ্ছি আমরা শুধু প্রধান বিচারপতির পদত্যাগপত্রই পেয়েছি। অন্যদের ব্যাপারে কোনো আপডেট নেই। আপনার সবাই শান্ত থাকবেন। দেশের সম্পদ নষ্ট করবেন না। সবাই শান্ত থাকবেন, ধন্যবাদ।
এদিকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি হিসেবে মো. আশফাকুল ইসলামের নাম শোনা যাচ্ছে। তিনি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একজন বিচারপতি হিসেবে বর্তমানে দায়িত্বপালন করছেন।
২০২৩ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ওবায়দুল হাসানকে দেশের ২৪তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি। ২৬ সেপ্টেম্বর তিনি প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
ওবায়দুল হাসান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসএস, এমএসএস ও এলএলবি ডিগ্রি অর্জনের পর ১৯৮৬ সালে জেলা আদালত, ১৯৮৮ সলে হাইকোর্ট বিভাগ এবং ২০০৫ সালে আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। ২০০৯ সালের ৩০ জুন তিনি হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি এবং ২০১১ সালের ৬ জুন স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান ছিলেন।