পদত্যাগ করলেন ইউজিসির আলোচিত সদস্য আলমগীর
বিশেষ সংবাদদাতা :
অবশেষে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) সেই আলোচিত সদস্য প্রফেসর মুহাম্মদ আলমগীর পদত্যাগ করেছেন। ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে তিনি পদত্যাগ করেন।
রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) সকালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদের কাছে তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেন।
পদত্যাগপত্রে তিনি লেখেন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের পূর্ণকালীন সদস্য পদে দ্বিতীয় মেয়াদে কর্মরত আছি। ব্যক্তিগত কারণে উক্ত পদে আমার পক্ষে দায়িত্ব পালন সম্ভব হচ্ছে না বিধায় আমি অদ্য ৮ সেপ্টেম্বর উল্লিখিত সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করছি এবং আমি আমার পূর্বের কর্মস্থল খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে অধ্যাপকের (গ্রেড-১) মূল পদে আগামী ৯ সেপ্টেম্বর পুনঃযোগদান করব।
গত ১৬ জুলাই রাতে হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে ইউজিসি। বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার সৃষ্টি হয়। ইউজিসি তদারককারী সংস্থা, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধে এমন ঘোষণা দিতে পারে না বলে প্রতীয়মান হয়। বিষয়টি খোদ ইউজিসির কর্মকর্তারাও স্বীকার করেন।
বিষয়টি নিয়ে অধ্যাপক আলমগীর অবশ্য সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীকে দুষছেন। তিনি বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কোনো লিখিত নির্দেশনা আমাদের কাছে ছিল না। মন্ত্রী (মহিবুল হাসান চৌধুরী) ফোন করে বললেন, বন্ধ করে দিতে হবে। আমরা বাধ্য ছিলাম, সেটা মানতে। আইনের ব্যত্যয় হয়তো হয়েছে। তবে আমাদের কিছু করার ছিল না।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ইউজিসি চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেন প্রফেসর ড. কাজী শহীদুল্লাহ। এরপর আলমগীরকে চেয়ারম্যানের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তাকে এ দায়িত্ব দেওয়ার পর বিক্ষোভ করেন ইউজিসির কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। তাদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে আন্দোলন করেন কুয়েট সাবেক শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী প্রকৌশলীরা।
তাদের অভিযোগ আলমগীর ভিসি থাকাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা কর্মচারীদের নির্যাতন করেন।
প্রসঙ্গত, কোটা সংস্কার আন্দোলন যখন তুঙ্গে তখন ১৬ জুলাই মধ্যরাতে হঠাৎ দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তদারকি প্রতিষ্ঠান মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে সব শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়। তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে সমন্বয় করে এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করেন ইউজিসির তৎকালীন চেয়ারম্যানের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা প্রফেসর মুহাম্মদ আলমগীর।