বহু আত্মত্যাগে নতুন দেশ পেয়েছি, এটা ধরে রাখতে হবে : আমীর খসরু
বিশেষ সংবাদদাতা :
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বহু আত্মত্যাগের পর নতুন স্বাধীন দেশ পেয়েছি, এটা ধরে রাখতে হবে।
রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এক মাস কেমন গেল, কেমন যেতে পারতো’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এবি পার্টি এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, নতুন বাংলাদেশে আমাদের কারো মধ্য শঙ্কা নেই। কারণ শেখ হাসিনা পালানোর পর দেশের মানুষের মনোজগতে বিরাট পরিবর্তন হয়েছে। সেটা আমাদের আমাদের বুঝতে হবে। এই মনোজগত হলো বাংলাদেশের মানুষ এখন তার কথা বলার অধিকার গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পেতে চায়। দেশের রাজনৈতিক অর্থনৈতিক সামাজিকভাবে ক্ষেত্রে সমানভাবে অংশগ্রহণ করতে পারে সেই অধিকার চায়। বাংলাদেশের মানুষকে যে মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়ার ওয়াদা করেছিলাম গত ১৫ বছরের বক্তৃতায়, তা আমাদের করতে হবে। কারণ এই দেশের মালিক হচ্ছে জনগণ। এই মালিকানা কেড়ে নিয়েছে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকার।
দুঃস্বপ্নের সময় পার করেছেন জানিয়ে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, শেখ হাসিনা পলায়নের পরে দেশে যে পরিবর্তন হয়েছে, সেটা মনোজগতে ধারণ করতে হবে। রাজনৈতিক অর্থনৈতিক সামাজিকভাবে সকলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড চাই। তরুণদের প্রত্যাশা আকাঙ্ক্ষা বুঝতে হবে। যারা এটা বুঝবে না আগামীর রাজনীতিতে তাদের জায়গা হবে না।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে কাজগুলো সম্পূর্ণ করতে হবে। এই মুহূর্তে জাতীয় ঐক্যের বিকল্প নেই। যে শক্তি দেশকে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে। সেই শক্তিকে যদি পরাজিত করতে হয়, জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে যে ঐকমত্য সৃষ্টি হয়েছে সেটাকে অক্ষুণ্ন রাখতে হবে।
আমীর খসরু বলেন, এই আন্দোলনে যারা জীবন দিয়েছে ,পঙ্গু হয়েছে চাকরি হারিয়েছে, গুম হয়েছে, ব্যবসা হারিয়েছে তাদের ত্যাগের বিনিময়ে আমরা এই জায়গায় দাঁড়িয়ে আছি।
তিনি বলেন, যারা বাংলাদেশের মালিক তারা সিদ্ধান্ত নেবে বাংলাদেশ কিভাবে চলবে। আমরা যারা রাজনীতি করি আমরা তাদের কাছে বলবো তাদের জন্য আমরা কি করতে চাই। কারণ সাধারণ মানুষ সিদ্ধান্ত নেবে বাংলাদেশ কিভাবে চলবে।
আমীর খসরু আরও বলেন, দেশের বর্তমান ৬৫ শতাংশ মানুষের বয়স ৩৫ বছরের নিচে। এই মানুষগুলো দেশ নিয়ে কি ভাবছে তাদের প্রত্যাশা কি তাদের আকাঙ্খা কি এটা আমরা যারা রাজনীতি করি তারা বুঝতে হবে। এটা যারা বুঝবে না আমি দুঃখের সাথে বলছি আগামীদিনের রাজনীতিতে তাদের কোন জায়গা থাকবেনা।
এই চিন্তা মাথায় রেখে আজকে যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রয়েছে তাদের সহযোগিতা করতে চাই। আমরা রাজনীতি করি অনেক কথা বলি অনেক বক্তব্য দেই। যার যার প্রেক্ষাপট থেকে কথা বলা লাগে। আজকের অন্তবর্তীকালীন সরকারকে জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে সকলকে সহযোগিতা করতে হবে। আমরা যত কথা বলি এই মূহুর্তে জাতীয় ঐক্যর কোন বিকল্প নাই। বিগতদিনে যারা এই বাংলাদেশকে ধ্বংস করেছে তা জাতীয় ঐক্য এর মাধ্যমে ফিরিয়ে নিয়ে আসতে হবে।
তিনি বলেন, জনগণ কী ভাবছে? তাদের প্রত্যাশা ও আকাঙ্ক্ষা কী? আমরা যারা রাজনীতি করি আমাদের তা জানতে হবে। এটা যারা বুঝবে না, আগামী দিনের রাজনীতির প্রেক্ষাপটে তারা খুব বেশি এগোতে পারবে না। আজ যে অন্তর্র্বতী সরকার আছে তাদের সহযোগিতা করতে চাই।
জনগণ দেশের মালিকানা ফিরে পেয়েছে উল্লেখ করে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, শেখ হাসিনা এবং তার পরিবার যে দেশের মালিকানা কেড়ে নিয়েছিল জনগণ সেই মালিকানা ফিরে পেয়েছে। এখন যারা বাংলাদেশের মালিক তারাই সিদ্ধান্ত নেবে বাংলাদেশ কীভাবে চলবে। আর আমরা যারা রাজনীতি করি, আমরা তাদের কাছে গিয়ে বলবো, আমরা তাদের জন্য কী করতে চাই। আমরা কী পরিবর্তন চাই। কোনো ব্যতিক্রম হওয়ার সুযোগ নেই।
আমাকে সকালে মান্না ভাই বলেছেন, কেমন আছেন? আমি বলছি, এক মাস তিন দিন আগে থেকে ভালো আছি। কারণ তার আগে আমি জেলে ছিলাম। আমরা গত ১৭ বছর থেকে ভুগছি। আজ আমরা মুক্ত দেশ পেয়েছি, মুক্ত আবহাওয়া পেয়েছি। কারও কোনো শঙ্কা নাই। এই যে মুক্ত দেশ পেয়েছি এটাকে ধরে রাখতে হবে। শেখ হাসিনা পালানোর পর মানুষের মনজগতে পরিবর্তন হয়েছে। মানুষ এখন পরিপূর্ণভাবে সব ফিরে পেতে চায়।
সেমিনারে এবি পার্টির আহ্বায়ক কর্নেল মশিউর রহমান বলেন, এই সরকার বিপ্লবের মাধ্যমে তৈরি হয়েছিলো। ফলে এই সরকারের নাম হওয়া দরকার ছিলো বিপ্লবী সরকার। বিপ্লবী সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সরকারের বিপ্লবী সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।