পুরনো পেশায় ফিরে যাবেন ড. ইউনূস
পোস্ট ডেস্ক :
বাংলাদেশে আগামী নির্বাচন শেষ করে পুরনো কাজে ফিরতে চান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বিশ্বজুড়ে তিনি সামাজিক ব্যবসা ছড়িয়ে দেয়ার যে আন্দোলন শুরু করেছেন, তাতে তিনি উপভোগ করেন। বৃটেনের বিখ্যাত ইকোনমিস্ট ম্যাগাজিনের কান্ট্রি অব দ্য অ্যাওয়ার্ড পাওয়ায় তাকে অভিনন্দন জানিয়ে একটি সাক্ষাৎকার নেন পত্রিকাটির কর্তৃপক্ষ। সংক্ষিপ্ত ওই সাক্ষাৎকারে শান্তিতে নোবেলজয়ী এই বাংলাদেশি দেশে এ বছর ছাত্রদের নেতৃত্বে গণঅভ্যুত্থানের ভূয়সী প্রশংসা করেন। বলেন, এই তরুণ সমাজ একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে চায়। তরুণ সমাজ আমাদের বিশ্বকেও বদলে দিতে পারেন। ইকোনমিস্টের পক্ষ থেকে তার দিকে প্রশ্ন ছোড়া হয়- এই পুরস্কারের জন্য অভিনন্দন প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনুস। প্রতি বছর আমরা বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত দেশকে এ পুরস্কার দিয়ে থাকি। বাংলাদেশ সবার শীর্ষে আসায় আপনার অনুভূতি কি? জবাবে ড. ইউনূস বলেন, আমরা আনন্দিত। গর্বিত যে- বাস্তবেই আমরা বড় পরিবর্তন করেছি। ছাত্রদের গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। তখন থেকে আমরা বলে আসছি যে, আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ সৃষ্টি করতে চাই। তার কাছে আবার জানতে চাওয়া হয়- বিপ্লব কখনো কখনো খারাপ ফল নিয়ে আসে। বাংলাদেশের বাইরের মানুষের বাংলাদেশ নিয়ে উদ্বেগ আছে। আমেরিকা এবং ভারতীয় কর্মকর্তারা সতর্ক করেছেন যে, ইসলামপন্থি উগ্রপন্থিরা বাংলাদেশে ফেরত আসছে বলে ঝুঁকি আছে। এ বিষয়ে আপনি কি বলবেন? ড. ইউনূস বলেন, আমি আপনাকে নিশ্চয়তা দিতে পারি যে, তা মোটেও ঘটছে না। তারা অতি উদ্যমী তরুণ। তারা ধর্মের দিক দিয়ে নিরপেক্ষ। তারা একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে চান। তরুণ সমাজ আমাদের বিশ্বকে বদলে দিতে পারেন। এটা শুধু একটি দেশ বা অন্য আরেকটি দেশের বিষয় নয়। বাংলাদেশ যেটা করেছে সেটা একটা উদাহরণ। তা হলো- এই তরুণ প্রজন্ম কতটা শক্তিধর। আসুন তাদের দিকে মনোযোগ দিই। বিশেষ করে তরুণীদের দিকেও দৃষ্টি দিতে হবে। তারাও বাংলাদেশের গণঅভ্যুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। দেশে অন্যদের মতোই তারা ফ্রন্টলাইনে কাজ করেছেন। তাদের দিকেও আমাদের দৃষ্টি দেয়া উচিত। আমাদেরকে দৃষ্টি দিতে হবে তরুণ, তরুণীদের দিকে এবং নিশ্চিত করতে হবে যে- তাদের স্বপ্নপূরণ হয়েছে। এটা করার জন্য তাদের সুযোগ আছে। তাদের সক্ষমতা আছে। গণঅভ্যুত্থানে প্রকৃতপক্ষে অংশ নিয়েছেন, নেতৃত্ব দিয়েছেন তরুণদের মধ্যে তিনজন। তাদের আমার কেবিনেটে নেয়া হয়েছে। তারা আমার কেবিনেট সদস্য। তারা চমৎকার কাজ করছেন। তাদের সক্ষমতা রয়েছে। তারা বিগত শতাব্দীর তরুণ নন। তারা এই শতাব্দীর তরুণ। অন্য যেকোনো ব্যক্তির মতোই তারা সক্ষম। ড. ইউনূসের কাছে এ পর্যায়ে জানতে চাওয়া হয়- আপনি যে কাজ করেন তার চেয়ে পুরো ভিন্ন একটি অবস্থানে অর্থাৎ সমঝোতার স্থানে নিয়ে আনা হয়েছে। সামনে নির্বাচনের পর আপনি কী করবেন বলে স্থির করেছেন? ড. ইউনূস বলেন, আমাকে আসলে আমার কাজ থেকে সরিয়ে আনা হয়েছে। এ কাজে আমাকে জোর করা হয়েছে। আমি তো আমার কাজ করছিলাম। তা উপভোগ করছিলাম। এজন্যই আমি প্যারিসে ছিলাম। আমাকে প্যারিস থেকে টেনে আনা হয়েছে কিছু করার জন্য। সুতরাং আমি আমার পুরনো দায়িত্বে ফিরে যেতে পারলে খুশি হবো, যে কাজ আমি করেছি। আমার সারা জীবন এটা উপভোগ করেছি। তরুণ সমাজ এই কাজকে ভালোবাসেন। ফলে আমি আমার টিমের কাছে ফিরে যাবো এবং সারা বিশ্বে এ কাজ ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছি- করবো।