মণিপুরের মাটিতে অশান্তি ছড়াতে অস্ত্র পৌঁছে দিচ্ছে মিয়ানমার
পোস্ট ডেস্ক :
১৩ ডিসেম্বর মণিপুরের ইম্ফল পূর্ব জেলায় জঙ্গি আস্তানা থেকে একটি স্টারলিঙ্ক অ্যান্টেনা এবং রাউটার উদ্ধার করে আসাম রাইফেলসের কর্মীরা। তবে এগুলি একমাত্র নিষিদ্ধ আইটেম ছিল না, যা মিয়ানমার থেকে পাচার করা হয়েছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। সেই বিকেলে বাহিনী একটি MA 4 অ্যাসল্ট রাইফেলও উদ্ধার করে, যা মিয়ানমারে তৈরি এবং সাধারণত মিয়ানমার সেনাবাহিনী ব্যবহার করে। সেনার কর্মকর্তারা বলছেন যে তারা বিস্মিত নন কারণ গত পাঁচ থেকে ছয় মাস ধরে তারা মণিপুরে জঙ্গি ও তাদের আস্তানা থেকে মিয়ানমারে তৈরি বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র ও অন্যান্য সরঞ্জাম উদ্ধার করছে। বাহিনী মিয়ানমারের তৈরি বুলেটপ্রুফ ভেস্ট এবং সীমান্ত দিয়ে পাচার করা সামরিক পোশাকও উদ্ধার করেছে। গত সপ্তাহে, বাহিনী ‘মেড ইন বার্মা’ চিহ্নিত অন্তত সাতটি পিস্তল, পাঁচটি মিয়ানমারের তৈরি আর্মি MA4 রাইফেল এবং একটি AK-47 উদ্ধার করেছে। কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীর একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, উদ্ধারকৃত পিস্তল ভারতে তৈরি হয় না। একজন বেসামরিক ব্যক্তি এটিকে আলাদা করতে সক্ষম নাও হতে পারে, কিন্তু যেহেতু আমরা মিয়ানমারের তৈরি জিনিসগুলি পুনরুদ্ধার করতে অভ্যস্ত, তাই আমরা পার্থক্য করতে পারি। মিয়ানমারের পিস্তলের গ্রিপ ভিন্ন আকৃতির। কিছু পিস্তলে ‘মেড ইন বার্মা’ চিহ্নও রয়েছে। মনিপুরে অস্ত্রের এত প্রাচুর্য থাকা সম্ভব না।’
স্টারলিঙ্ক অ্যান্টেনা এবং রাউটার উদ্ধারের দু’দিন আগে রাজ্যের চান্দেল জেলায় একটি কর্ডন এবং অনুসন্ধান অভিযানের সময় বাহিনী একটি AK-47 রাইফেলও জব্দ করেছিল। গত ১৯ মাস ধরে জাতি হিংসায় দগ্ধ মণিপুর। হিংসায় লাগাম টানতে একদিকে যেমন বিপুল পরিমাণে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে গোটা মণিপুরে অন্যদিকে মিয়ানমার সীমান্তকে সিল করতে তৎপর হয়েছে কেন্দ্র।মিয়ানমারের সঙ্গে ১৬৪৩ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে ভারতের। এর মধ্যে শুধু মণিপুরে রয়েছে ৩০ কিলোমিটার। এই গোটা অঞ্চলে কাঁটাতারের বেড়া লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। জায়গায় জায়গায় বাড়ানো হয়েছে নজরদারি। তারপরও চোরাপথে চলছে অস্ত্রের যোগান। একজন অফিসার বলছেন, ‘এমন কিছু ঘটনা ঘটেছে যেখানে আমরা শুধু কয়েকটি নয়, কয়েক ডজন ভেস্ট এবং ইউনিফর্ম উদ্ধার করেছি। যদিও অস্ত্রাগার থেকে বুলেটপ্রুফ ভেস্ট লুট করা হয়েছিল, তবে আমরা জঙ্গি শিবির থেকে যেগুলি উদ্ধার করেছি তা মিয়ানমার থেকে পাওয়া। এই জঙ্গিদের সীমান্তের ওপারেও ঘাঁটি রয়েছে, তাই এই ধরনের আইটেমগুলি সংগ্রহ করা কোনও সমস্যা নয়।’