১৫ দিনের মধ্যে ‘জুলাই প্রোক্লেমেশন’ ঘোষণার দাবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের
পোস্ট ডেস্ক :
আগামী ১৫ দিনের মধ্যে জুলাই প্রোক্লেমেশন ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। মঙ্গলবার বিকালে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে এই দাবি জানান তারা। ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে ছাত্র-জনতা এই কর্মসূচিতে অংশ নেন।
সমাবেশস্থলে যোগ দিয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, আমাদের সংগ্রাম শেষ হয় নাই। খুনিরা, খুনিদের দোসরা এখনো ঘুরে বেড়ায়। এই খুনিদের বিচার হতে হবে। বিচার না হলে আমরা নিজেদের মাফ করতে পারব না। কেন আমরা শুনবো এক হাত থেকে আরেক হাতে সিন্ডিকেট যাচ্ছে। আপনারা কী করছেন? হাত ভেঙ্গে দিচ্ছেন না কেন? অন্তর্বর্তী সরকারকে বলতে চাই, এই দেশের হাজার হাজার মানুষের ঘামের টাকা ফিরিয়ে আনতে হবে। গোপালগঞ্জে এখনো কীভাবে আমাদের উপর হামলা হয়? পুলিশদের বলব, নিরাপত্তা না দিতে পারলে আপনাদের পদে থাকার দরকার নাই। আমরা দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ চাই, আহত যোদ্ধাদের চিকিৎসা চাই।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক নুসরাত তাবাসসুম বলেন, যেসকল দালাল লুকিয়ে আছে তাদের মুক্ত করুন। যেদেশের বিপ্লবীদের নিরাপত্তা নাই, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। আহতদের সুচিকিৎসা ও শহীদ পরিবারের সম্মান নিশ্চিত করতে হবে। অতিদ্রুত আমাদের প্রোক্লেমেশন দিতে হবে। নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, বাংলাদেশের মানুষ নতুন সংবিধান চায়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যখন জুলাই প্রোক্লেমেশনের জন্য রাজপথে তখন সরকার দায়িত্ব নিয়েছে। অবিলম্বে জুলাই প্রোক্লেমেশন জানুয়ারির ১৫ তারিখের মধ্যে ঘোষণা করতে হবে।
সমন্বয়ক রিফাত রশীদ বলেন, এখনো খুনি হাসিনার বিচার হয় নাই। খুনি হাসিনাকে এনে অবিলম্বে বিচার করতে হবে। অলিতে গলিতে ছাত্রলীগ, যুবলীগ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ঘাপটি মেরে বসে আছে। তাদের বিচার করতে হবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়বো না। সমন্বয়ক মাহিন সরকার বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে প্রশ্ন করতে চাই সিসিটিভি ফুটেজ থাকা সত্ত্বেও যেসব পুলিশ ছাত্র-জনতার উপর গুলি করেছে কেনো তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। ভিডিও ফুটেজ থাকার পরও কেন লাশ কবর থেকে তোলা হবে। এই বিপ্লব শুধু ছাত্রদের বিপ্লব নয়। শ্রমিকরা বুক পেতে দিয়েছিলেন বন্দুকের সামনে তবুও তাদের বৈষম্য দূর হয় নাই। আজকে দ্রব্যমূল্য কমে নাই। আমাদের ভাইদের উপর আক্রমণ করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কী করেন? বিডিআর বিদ্রোহ নিয়ে কেন এত টালহাবানা। বিচারিক প্রক্রিয়ায় আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। বিভিন্ন দল সুশীলতা করে। কিন্তু চাঁদাবাজি করে কারা?
আহত শিক্ষার্থী আতিকুল গাজী বলেন, ভারত সরকারকে বলতে চাই এটা খুনি হাসিনার দেশ না। আমরা খুনি হাসিনাকে ফাঁসির দড়িতে ঝুলাবো। রাজনৈতিক দল নির্বাচনের জন্য পাগল হয়েছে। আমরা নির্বাচনের জন্য রক্ত দেই নাই। আগে সংস্কার পরে নির্বাচন। শহীদ মীর মুগ্ধর বাবা বলেন, ৫ই আগস্ট শেখ হাসিনা হেলিকপ্টার দিয়ে ভারতে পালিয়েছে। তখনতো এই সরকার ছিল না। ৮ই আগস্টে এই সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর অন্যরা কীভাবে পালালো? মীর মুগ্ধসহ যারা শহীদ হয়েছে, যারা আহত হয়েছে তাদের বিপ্লবী যোদ্ধার স্বীকৃতি দেয়ার দাবিও জানান তিনি।