ট্রাম্পের হুমকির পর গ্রিনল্যান্ডে সেনা পাঠাতে পারে ফ্রান্স
পোস্ট ডেস্ক :
কানাডা ও পানামার পর এবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের নজর পড়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় দ্বীপ গ্রিনল্যান্ডের ওপর। দ্বীপটি কেনার জন্য ট্রাম্প যে মরিয়া মনোভাব দেখিয়েছেন তাতে হতভম্ব ন্যাটো সঙ্গীরাও। গ্রিনল্যান্ড বিক্রি না করলে মিলিটারি পাওয়ারের মাধ্যমে তা দখলের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেননি তিনি। যা দেখে ট্রাম্পকে সতর্ক করেছে জার্মানি ও ফ্রান্স। ট্রাম্পের একের পর এক হুঙ্কারের জেরে বরফের চাদরে ঢাকা গ্রিনল্যান্ডে এবার সেনা পাঠানোর পরিকল্পনা করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। ফলে গ্রিনল্যান্ড ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ‘উত্তর আটলান্টিক চুক্তি সংগঠন’ (নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজ়েশন বা নেটো) ভেঙে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
ট্রাম্পের বারবার গ্রিনল্যান্ড দখলের হুমকির মুখে ফ্রান্স সেখানে সেনা পাঠানোর চিন্তা-ভাবনা করছে। এ নিয়ে ডেনমার্কের সঙ্গে ফ্রান্সের আলোচনাও হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ-নোয়েল ব্যারোট। ফ্রান্সের সুড রেডিওতে এক সাক্ষাৎকারে ব্যারোট জানান, ডেনমার্কের সঙ্গে সেনা মোতায়েন নিয়ে ফ্রান্স আলোচনা করছে। তবে এখনই এই সামরিক ব্যবস্থা নেয়ার ইচ্ছা ডেনমার্কের নেই।
তবে ব্যারোট বলেন, ‘ডেনমার্ক যদি সাহায্যের জন্য আহ্বান জানায়, তাহলে ফ্রান্স সাহায্য করতে এগিয়ে যাবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ইউরোপের সীমান্ত সার্বভৌম, তা উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব ও পশ্চিম যাই হোক না কেন। কেউ তাদেরকে আমাদের সীমান্তের সঙ্গে সমস্যা সৃষ্টি করতে দেবে না।’
বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি মুখ খোলেন ইইউ-এর মিলিটারি কমিটির চেয়ারম্যান রবার্ট ব্রিগার। জার্মান সংবাদপত্র ‘ওয়েল্ট অ্যাম সোন্ট্যাগ’কে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘গ্রিনল্যান্ডে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সেনাবাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে বিবেচনা করা উচিত।’ তার এই মন্তব্যের পরই আমেরিকা ও ইউরোপের ‘বন্ধু’ রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘাতের আশঙ্কা তীব্র হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
গত ২৫ জানুয়ারি জার্মান সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয় ব্রিগারের সাক্ষাৎকার। সেখানে তিনি বলেছিলেন, ‘গ্রিনল্যান্ডে ইইউ-ভুক্ত দেশগুলো সেনা পাঠালে একটা বার্তা দেয়া যাবে। বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপটির আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় সেটা হবে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।’
ট্রাম্পের ক্রমবর্ধমান হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে ডেনমার্ক ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে ইতিমধ্যেই বৈঠক করেছে। ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ‘গ্রিনল্যান্ড বিক্রির জন্য নয়। এর মালিক এখানকার বাসিন্দারা’। ট্রাম্পের হুমকি মোকাবিলায় ডেনমার্ক আর্কটিক অঞ্চলে প্রতিরক্ষা শক্তিশালী করতে ২০০ কোটি ইউরো বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছে। সূত্র: পলিটিকো