মিয়ানমারে জরুরি অবস্থার সময় বাড়ালো জান্তা

Published: 31 January 2025

পোস্ট ডেস্ক :


পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে মিয়ানমারের জরুরি অবস্থা আরও ছয় মাস বৃদ্ধি করেছে দেশটির জান্তা সরকার। গত এক দশকে কখনই দেশটির গণতন্ত্র সুসংহত অবস্থায় টিকে থাকেনি। নড়বড়ে গণতান্ত্রিক অবস্থার মধ্যে চার বছর আগে দেশে সামরিক শাসন জারি করে মিয়ানমারের সেনা বাহিনী। এরপর থেকে দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে বিদ্রোহী গ্রুপগুলোর সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত রয়েছে তারা। ইতিমধ্যেই রাখাইন রাজ্যের বেশিরভাগ অঞ্চলের দখল নিয়েছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। দেশটিতে এখন গৃহযুদ্ধ চলছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, শান্তিতে নোবেল পাওয়া ও গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত অং সান সুচির সরকারকে উৎখাত করে দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে নিয়ে গেছে জান্তা সরকার।

এর মধ্যেই এ বছর দেশে জাতীয় নির্বাচন করার পরিকল্পনা করছে তারা। তবে সমালোচকরা বলছেন আন্তর্জাতিক চাপ থেকে বাঁচতে এটা কৌশল হিসেবে নিয়েছে জান্তারা। তারা নিজেদের ক্ষমতা ধরে রাখতে একটি প্রহসনের নির্বাচন দিয়ে জনগণের সঙ্গে উপহাস শুরু করেছেন। দেশে আরও ছয় মাসের জরুরি অবস্থা জারি করে এমআরটিভি পরিচালিত একটি টেলিগ্রাম চ্যানেলে জান্তা সরকার বলেছে, সাধারণ নির্বাচন সফলভাবে অনুষ্ঠিত করতে তাদের এখনও অনেক কাজ বাকি আছে। একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য স্থিতিশীলতা এবং শান্তি বজায় রাখা প্রয়োজন।

এদিকে এখনও নির্বাচনের কোনো তারিখ নির্ধারণ করেনি তারা। তবে তারা এ বিষয়ে পরিকল্পনা নিয়ে আগাচ্ছে। এছাড়া দেশে বিদ্রোহীদের প্রতিহত করতেও বেশ লড়াই করতে হচ্ছে তাদের। বিদ্রোহীদের সঙ্গে লড়াই জারি রেখে দেশে নির্বাচন দেয়া জান্তার জন্য বেশ কঠিন হতে পারে। কেননা বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো বেশ শক্তিমত্তার সঙ্গেই জান্তাকে মোকাবিলা করছে।

দীর্ঘসময় ধরে চলা এই গৃহযুদ্ধে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে দেশটির সাধারণ জনগণ। আনুমানিক ৩০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। তাদের মতে দেশটির মোট জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশের মানবিক সহায়তার প্রয়োজন। বারবার সকল পক্ষের মধ্যে সংলাপ করার আহ্বান জানাচ্ছে বিশ্ব মানবাধিকার এই সংস্থাটি। দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করে সেখানের সকল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করে নির্বাচনের জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞা প্রকাশ করেছে জান্তা। নিষিদ্ধ দলগুলো এই নির্বাচন বয়কটের পরিকল্পনা করছে এবং বিশ্বের পর্যবেক্ষক দেশগুলোকেও নির্বাচনের ফলাফল অস্বীকার করার আহ্বান জানিয়েছে। তাদের দাবি জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে প্রহসনমূলক নির্বাচন করতে যাচ্ছে জান্তা।