বুরজান চা বাগানে শ্রমজীবী মানুষের মাঝে আরডিএফ -এর রমাদান ফুড প্যাক বিতরন

Published: 12 March 2025

সিলেটের খাদিম ন্যাশনাল পার্ক সংলগ্ন বুরজান চা বাগানে আরডিএফ (রুরাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন গ্লোবাল)-এর উদ্যোগে শ্রমজীবী মানুষের মাঝে রমাদান ফুড প্যাক-২০২৫ বিতরণ করা হয়েছে। ১০ মার্চ ২০২৫ অনুষ্ঠিত এই মানবিক কার্যক্রমে বুরজান, খাদিম, চোরাগাঙ ও কালাগুল চা বাগানের ২৩০ জন শ্রমজীবী মানুষের মধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়। এর মধ্যে ১১১ জন পুরুষ ও ১১৯ জন নারী ছিলেন।
বুরজান চা বাগানের গভীরে একটি খোলা মাঠে এই বিতরণ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়। শ্রমিকদের দুরবস্থা বিবেচনায় নিয়ে আরডিএফ এই বিশেষ সহায়তা নিয়ে আসে, যাতে তারা রমাদান মাসে কিছুটা স্বস্তির সঙ্গে দিন কাটাতে পারেন। প্রতিটি ফুড প্যাকে ছিল ১৫ কেজি চাল, ২ লিটার রান্নার তেল, ২ কেজি ছোলা, ২ কেজি আলু, ২ কেজি পেঁয়াজ, ২ কেজি মসুর ডাল, ২০০ গ্রাম পাউডার দুধ, ২০০ গ্রাম চা পাতা, ১ কেজি চিনি, ১ কেজি ময়দা, ১ কেজি লবণ, ১ কেজি খেজুর এবং ২০০ গ্রাম ভিটামিন সি ড্রিংক।


এই কার্যক্রমের সার্বিক তত্ত্বাবধান করেন আরডিএফ বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি প্রতিনিধি আব্দুন নুর। উপস্থিত ছিলেন আরডিএফ এর ইউকে প্রতিনিধি, বিশিষ্ট সাংবাদিক মাহবুব রহমান। এছাড়া সার্বিক দায়িত্ব পালন করেন চা বাগানের প্রতিনিধি, তরুন সমাজকর্মী সুহেল আহমেদ, আরডিএফ এর প্রকল্প কর্মকর্তা হানিফ আহমেদ এবং প্রকল্প কর্মকর্তা মাসুম আহমেদ চৌধুরী। তাদের সক্রিয় সহযোগিতায় পুরো বিতরণ কার্যক্রম নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয়।
এছাড়া এই উদ্যোগ সফল করতে নিরলস পরিশ্রম করেছেন স্বেচ্ছাসেবকরা। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন আলামিন, সুজন, রাশেদ, লিমন, রাসেল, আবদুল, সুমন এবং আরও অনেকে। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের কারণেই প্রকৃত দরিদ্র ও অসহায় মানুষদের হাতে এই সহায়তা পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে চা শ্রমিকরা নিয়মিত মজুরি না পাওয়ায় দুর্বিষহ পরিস্থিতির মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। বাগানগুলোর লোকসানের অজুহাত দেখিয়ে কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের পারিশ্রমিক না দেয়ায় এবং শ্রমিকরাও বিকল্প কাজ খুঁজে না পাওয়ায় কষ্টে দিন পার করছেন। এমন পরিস্থিতিতে আরডিএফ এই মানবিক উদ্যোগ নেয়, যার মাধ্যমে ২৩০ জন শ্রমিক সহায়তা পেয়েছেন।


এই উদ্যোগ সম্পর্কে আরডিএফ চেয়ারম্যান তালহা চৌধুরী বলেন, “রমাদান মানবতার মাস। শ্রমজীবী ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। আমরা চাই, কেউ যেন অভুক্ত না থাকে। ভবিষ্যতেও আমরা এই উদ্যোগ অব্যাহত রাখব।”
শ্রমিকদের মুখে হাসি ফোটানো এবং তাদের দৈনন্দিন দুশ্চিন্তা কিছুটা কমিয়ে আনা এই উদ্যোগের প্রধান লক্ষ্য। পুরো রমাদান মাসজুড়ে এই খাদ্য সহায়তা তাদের জীবনযাত্রাকে কিছুটা স্বস্তিদায়ক করবে বলে আশা করা হচ্ছে।