ব্রিটেনে শরণার্থী সংকটে নতুন চ্যালেঞ্জ
পোস্ট ডেস্ক :
ব্রিটেনে আশ্রয় প্রার্থনার প্রাথমিক দাবি প্রত্যখ্যান করে দিয়েছে দেশটির সরকার। তবে এতে আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা কমেনি। বরং গত দুই বছরে এই সংখ্যা বেড়েছে পাঁচ গুণ। ব্রিটেনের হোম অফিসের তথ্য বলছে, এখনও ৪২ হাজার আশ্রয়প্রার্থী তাদের আপিল শুনানির জন্য অপেক্ষা করছেন। রিফিউসি কাউন্সিল জানিয়েছে এভাবে অল্প সময়ের মধ্যে আশ্রয় প্রার্থনার সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় শরণার্থী ব্যবস্থার ওপর নেতিবাচক চাপ পড়েছে। তারা সতর্ক করে বলেছে, কার্যকরি পদক্ষেপ না নিয়ে শুধুমাত্র এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সংকট স্থানান্তরিত করছে সরকার। কেননা দেশটিতে এখনও ৪০ হাজারের বেশি আশ্রয়প্রার্থী হোটেলে বাস করছে। এই পরিস্থিতিতে শরণার্থী সংকট মোকাবিলা করা সরকারের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।
এতে বলা হয়, হোম অফিস থেকে জানানো হয়েছে, শরণার্থীদের প্রাথমিক দাবির বিষয়ে শুনানির পরিমাণ দ্বিগুণ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আরও বেশি কোর্ট সেশন আয়োজন করতে প্রয়োজনীয় তহবিল বরাদ্দ করা হয়েছে। তবে এসব পদক্ষেপের পরও শরণার্থী সংকট মোকাবিলায় সরকার কার্যকরী ভূমিকা নিতে পারেনি বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। শরণার্থী হোটেল ব্যবহারের অবসান এবং নতুন আইন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তারা।
সরকারের এক মুখপাত্র বলেছেন, তারা শরণার্থী হোটেল ব্যবহার বন্ধ করতে এবং থাকার খরচ কমানোর জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে, তিনি উল্লেখ করেছেন যে এই প্রক্রিয়া ধীরে ধীরে বাস্তবায়িত হবে।
রিফিউজি কাউন্সিল দাবি করেছে, পূর্ববর্তী কনজারভেটিভ সরকারের প্রবর্তিত আইন পরিবর্তনের কারণে এখন আরও বেশি শরণার্থীর দাবি প্রত্যাখ্যাত হচ্ছে। এই নতুন আইনের মাধ্যমে শরণার্থী হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার প্রক্রিয়া অনেক কঠিন হয়ে উঠেছে। জাতীয়তা এবং সীমান্ত আইন (ন্যাশনাল অ্যান্ড বর্ডারস অ্যাক্ট) কার্যকর হওয়ার পর, গত বছরের দ্বিতীয়ার্ধে কেবল ৪০ শতাংশ আফগান শরণার্থীকে থাকার অনুমতি দেয়া হয়েছে। এর আগে, আফগানদের জন্য প্রায় সকল শরণার্থী দাবি গ্রহণ করা হতো, কিন্তু নতুন আইনের মাধ্যমে এই হার কমিয়ে আনা হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে আশ্রয় চেয়ে প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন এমন অনেক শরণার্থী বর্তমানে সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করার পরিকল্পনা করছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। বর্তমানে শরণার্থী হোটেলগুলোতে আফগানদের সংখ্যাই বেশি। গত দুই বছরে ডিঙ্গি নৌকা দিয়ে বৃটেনে যেসব শরণার্থী প্রবেশ করেছেন, তাদের মধ্যে আফগানদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।
রিফিউজি কাউন্সিলের চিফ এক্সিকিউটিভ এনভার সোলোমন সঠিক এবং ন্যায্য সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, প্রথমবারের সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণই শরণার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে, যাতে তারা দেশের বিভিন্ন সম্প্রদায়ে অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। যাদের বৃটেনে থাকার অধিকার নেই, তাদের সসম্মানে দেশে ফিরিয়ে দেওয়া উচিত বলেও মনে করেন তিনি। এছাড়া দাতব্য সংস্থাটি উল্লেখ করেছে যে, যারা এখনও আপিল প্রক্রিয়ায় আছেন তাদের জন্য বাসস্থানের প্রয়োজন। তারা সতর্ক করেছে যে, যদি পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকে, তবে হোটেল ব্যবস্থাপনার খরচ এই বছর ১.৫ বিলিয়নে পৌঁছাতে পারে।