জীবনে মরণে তোমায় কি ভুলিতে পারি?

Published: 19 May 2025

– শফি আহমেদ

নিমিষের তরে নিশ্চিত মরণ যে মরে,

তুলে দিলো মৃত্যুহীন অমর-মালা তারে।

এক চুমুকেই পিয়ে নিল সে অমরা —

ওই পরম অনন্য, অবিনাশী অমৃত সুধা।

 

কাল-মহাকাল, সর্বকালের সব ভিন্ন পরতে,

একযোগে উঠিল নেচে চিরঞ্জীবী ছন্দে।

বাজিল বীণা ওই মরে-ও-অমর কঙ্কালে —

সৃজনরাত্রির প্রথম সুরে।

 

কালের জমাট হিয়া,

ভাসায় ডেউয়ের ভেলা।

অতল সাগরের নিভৃত হৃদয়বিন্দু,

পরানে বহে নীলিমার নীল-ময়ূরী

ওই অন্তরতম জলবিন্দু

এলো শতছন্দে — গীতোচ্ছ্বাসে, সুবিন্দু।

সিন্ধুপুরে জলসা-ঘরের সুরপরী,

অধরে ধরিল মহাসিন্ধুর বাঁশরী —

সে যে প্রথম ধ্বনিই, সুরেলা সয়ম্ভরী!

 

ঐ যে বিন্দু জলে ভাসে সাগর, ভাসে পূর্ণ শশী,

গহন তলানিতে নীলপদ্ম ছায়া।

নীলে নীলাকার নীলাম্বরী —

কার সাধ্য ছোঁবে ওই অস্পরা কুমারী ,

ওই চির-অধরা, জলপরী।

 

সাগর-দিঘল তাহুরা-সরাব পানে,

ব্যাকুল সব পিয়াসী মহারথী —

তুমি এলে, অশীম পারের আজব সাকি,

এক চুমুকে ঢেলে দিলে — মরনে অমৃত মাধুরী।

 

সূরু হতে সারা, সব এলো নয়ন জুড়ি,

তোমার হাতেই এলো কবর-খোঁড়া কুড়ি।

এক মুঠো আলগা মাটি —

প্রাণ হয়ে উঠলে এই মরণাপন্ন পরানে তুমি,

তবু দিলে না তাকে — হতে সলিল সমাধি।

জীবনে মরণে, তোমায় কি ভুলিতে পারি?