পরিবার-এর সংজ্ঞা বদলে যাওয়াতে বলি হচ্ছেন কারা? 

Published: 26 June 2025

                       

Dr Zaki Rezwana Anwar FRSA

পরিবার শব্দটির আইনগত সংজ্ঞা পাল্টে যাচ্ছে সমাজ বিবর্তনের সাথে সাথে। আগে আমরা পরিবার বলতে বুঝতাম একজন ঔরসজাত পিতা আর একজন গর্ভধারিণী মাকে নিয়ে যে পরিবার হয় সেটিকে।  সাহিত্যে বা রোজকার কথনে ‘মা’ শব্দটি উচ্চারিত হলেই বলা হত ‘গর্ভধারিণী মা’। তবে বর্তমান সমাজে শুধুমাত্র এই সংজ্ঞাটি দিলে আপনার সংজ্ঞাটি ‘politically incorrect’ হবে। রাজনৈতিক বা আইনগত সংজ্ঞা অনুযায়ী এখন আর বাবা মা বলতে ঔরসজাত বাবা আর গর্ভধারিনী মাকে বোঝায় না। এ যেন অন্য এক জগতে প্রবেশ করেছে পৃথিবী। দু’জন পুরুষের যুগল বা দু’জন নারীর যুগল থেকে নানা উপায়ে আজকাল পরিবারের ডালপালা বিস্তার লাভ করছে।

এই পরিবর্তিত ধারণার সাথে সাথে আমাদের কল্পনা শক্তির যা গতি তার চাইতেও দ্রুত গতিতে অনেকের জ্ঞানের আড়ালে বেড়ে চলেছে  অনেকের ভাষায় এক ধরনের শিশু ব্যবসা। বেড়ে চলেছে  নানা ধরনের, নানা উপায়ের সারোগেট শিশুর সংখ্যা। সারোগেসি অর্থাৎ নিজের জন্যে নয় অন্যের জন্যে গর্ভে সন্তান ধারণ এখন একটি ক্রমবর্ধমান গ্লোবাল ট্রেড হিসাবে বিস্তার লাভ করছে।

অতীতে যেসব সারোগেসি হত সেগুলোতে যে নারী গর্ভে সন্তান ধারণ করতেন তাদের নিজস্ব ডিম্বানু ব্যবহার করা হত যেমনটি দেখানো হয়েছিল ভারতীয়  হিন্দী ‘দুসরি দুলহান’ মুভিতে।  কিন্তু বর্তমানে সে ধরনের সারোগেসির সংখ্যা কমে আসছে। বর্তমানে যে ধরনের সারোগেসি জনপ্রিয়তা পাচ্ছে তা হচ্ছে, জেষ্টেশনাল সারোগেসি অর্থাৎ অচেনা একজন নারীর ডিম্বানুর সাথে অন্য আরেকজন পুরুষের শুক্রাণু মিলিয়ে ভ্রুণ তৈরি করে সেই ভ্রুণ সারোগেট নারীর দেহে প্রবেশ করানো হয় যে ক্ষেত্রে ভ্রুণের সাথে ঐ সারোগেট নারীর কোনো জেনেটিক সম্পর্ক থাকেনা। এ যেন একজন নারীর শরীরের ভেতরটা একটি অফিস কক্ষ আর সেটি ভাড়া নেওয়ার মত হয়ে দাঁড়িয়েছে বিষয়টি। অর্থাৎ  সারোগেট  নারীর দেহ ব্যবহৃত  হচ্ছে অন্য একটা দম্পতির জন্যে – সেই দম্পতি হতে পারেন পুরুষ ও নারী অথবা  দু’জন পুরুষ। অফিস কক্ষ কিছুদিন ভাড়া নিয়ে অফিস ছেড়ে চলে গেলে অফিসের কোনো স্থায়ী পরিবর্তন হয়না কিন্তু একজন নারীর শরীর কি তা-ই? গর্ভধারণের দীর্ঘ সময়ে একজন নারীর শরীরের যে পরিবর্তন হয়, তাঁর শরীরের নির্যাসটুকু শুষে নিয়ে ভূমিষ্ঠ শিশুটিকে নিয়ে গেলেই কি তার শরীর আগের মত হয়ে যায়?

প্রশ্ন হচ্ছে এর চাহিদা হঠাৎ ক’রে এত বেড়ে যাচ্ছে কেন? কেন এই শিশু ব্যাবসা বিশ্বব্যাপী এত দ্রুত সম্প্রসারিত হচ্ছে?

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এর প্রথম এবং প্রধান কারণ হচ্ছে, একই লিঙ্গের দুই পুরুষ যুগলের সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই ব্যবসার দ্রুত সম্প্রসারণ ঘটছে। বৃটেনে যেসব যুগল এই উপায়ে সন্তান নিচ্ছেন তাঁদের শতকরা প্রায় ৬৫ ভাগই দুই পুরুষের যুগল। দুই পুরুষের যুগল হলে একজনের শুক্রাণু এবং কোনো নারী ডোনারের ডিম্বানু ব্যবহার ক’রে ভ্রুণ তৈরি ক’রে সারোগেট নারীর শরীরে প্রবেশ করানো হয়। দ্বিতীয়ত কর্মজীবি অনেক নারী সন্তান নেওয়াকে পিছিয়ে দেন এবং পরে অনেকের মধ্যে ইনফার্টিলিটি দেখা দেয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে ১৭.৫% নারী ইনফার্টিলিটিতে ভুগছেন, অর্থাৎ প্রতি ছ’জনে একজন ইনফার্টিলিটিতে ভুগছেন। এদের ক্ষেত্রে যদি IVF চিকিৎসা কার্যকরী না হয় তখন তারা সারোগেসির দিকে আকৃষ্ট হবেন। তৃতীয়ত: সেলিব্রিটি যারা এতই ধনী যে তাঁরা অন্য এক ফ্যান্টাসি জগতে বাস করেন – তাঁরাও বেছে নেন এই সারোগেসি বাণিজ্যকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ধনাঢ্য মডেল প্যারিস হিল্টন ও কীম কার্ডাশিয়ান – তাঁরা সবাই এই সারোগেসি বাণিজ্যের মাধ্যমেই সন্তান লাভ করেন, নিজেদের সন্তান গর্ভধারণের মাধ্যমে নয়।

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়াতে সারোগেসির আধুনিক প্রযুক্তি থাকায় এবং সারোগেসি আইন বেশ শিথিল হওয়ায় ক্যালিফোর্নিয়া এখন বিশ্বের সারোগেসি ক্যাপিটেল হয়ে দাঁড়িয়েছে। পৃথিবীর একশোরও বেশী দেশ থেকে ক্যালিফোর্নিয়াতে সারোগেসির জন্যে মানুষ এসেছে এবং এই উপায়ে জরায়ু ভাড়া নিয়ে শিশু কিনে নিয়েছে বললে শুনতে খারাপ লাগলেও খুব  বেশী ভুল বলা হবেনা। যুক্তরাষ্ট্রের একজন ডাক্তার সম্প্রতি জানিয়েছেন এটি এত দ্রুত বিস্তার করছে যে তিনি তাঁর ক্যারিয়ারে কম করে হলেও আট হাজারটি সারোগেট সাইকেল সম্পন্ন করেছেন। ১৯৯৮ সালে বিশ্বে প্রথম দুই পুরুষ যুগলের জন্যে সারোগেসি সাইকেল সম্পন্ন করা হয় ক্যালিফোর্নিয়াতে। বর্তমানে সারোগেসির জন্যে  ক্যালিফোর্নিয়াতে একটি যুগল ১০০ থেকে ১৫০ হাজার ডলার ব্যায় করেন। এর মধ্যে বেশিরভাগই খরচ হয়ে যায় এজেন্ট, আইনজীবী, ডাক্তার, নার্স ও ব্যবস্থাপকদের পিছনে । সবার খরচ মিটিয়ে একজন সারোগেট নারী পেয়ে থাকেন প্রায় ৩০ হাজার ডলার। তবে প্রথমবার এই পদ্ধতি সফল হলে দ্বিতীয়বারের সারোগেসিতে ঐ নারী কিছুটা বেশী অর্থ হাতে পান।

মানুষের কল্পনার চাইতে দ্রুত গতিতে এই সারোগেসি বাণিজ্য কিভাবে এবং কেন দেশের গন্ডি ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে পরিণত হল?

আজকাল অফ সিজনে অনলাইনে তুলনামূলক কম দামে  বিমানের টিকেট কেনার সুযোগ ও অনুন্নত দেশে সস্তায় সারোগেট নারীর প্রাপ্যতা  – সব কিছু মিলিয়ে সারোগেসি দ্রুত একটি গ্লোবাল বাণিজ্যে পরিণত হয়েছে। এই বাণিজ্যের সাথে যুক্ত হয়েছে নানা ফটকাবাজ মুনাফালোভী এইজেন্ট। গোটা বিশ্বে এ পর্যন্ত কতজন সারোগেট শিশু জন্ম নিয়েছে তার সঠিক সংখ্যা বের  করা কঠিন, কারণ হাতে গোণা কয়েকটি দেশ ছাড়া সব দেশ থেকে ড্যাটা পাওয়া যায়না। তবে সারা বিশ্বে সারোগেট শিশুর সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। ২০২২ সালে বিশ্বে ১৫ বিলিয়ন ডলারের এই ধরনের শিশু বাণিজ্য হয়েছে এবং আগামী ১০ বছরে এর পরিমাণ ১৪০ বিলিয়নে পৌঁছুতে পারে।

পৃথিবীর সব দেশে আইন বা সামাজিক অনুভূতি এক নয়। যেমন জর্জিয়া, ইউক্রেন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে অর্থের বিনিময়ে সন্তান ধারণকে বৈধ গণ্য করলেও এ ধরনের  বাণিজ্যিক সারোগেসি বহু দেশে আইন বহির্ভূত, যেমন, চীন, জার্মানি, তুরস্ক, ফ্রান্স ও ইটালী। তাই এসব দেশে কেউ সারগেসি পদ্ধতিতে সন্তান চাইলে ভ্রমণ করতে যান অন্য দেশে যেখানে সারোগেসি সম্ভব।

পৃথিবীর বহুদেশে এই সারোগেসি বাণিজ্যকে অমানবিক ও শিশু পাচারের সাথে তুলনা করা হচ্ছে। সম্প্রতি ইটালীতে কনজারভেটিভ রাজনৈতিক দল এই বাণিজ্যের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেও অনেকে এটিকে অর্থনৈতিক লাভের যুক্তি দেখাচ্ছেন। কিছুদিন আগেও ভারত ছিল সারোগেসির জন্যে একটি জনপ্রিয় দেশ, কিন্তু সম্প্রতি ভারত সরকার বলছে, তারা আর বিদেশীদের জন্যে সারোগেসি বাণিজ্যের অনুমতি দেবে না। তারপর থাইল্যান্ড ও লাউসের দিকে এই বাণিজ্য প্রসারিত হয়।

থাইল্যান্ডে সরকারীভাবে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের অনুমতি না থাকলেও অবৈধ উপায়ে এই বাণিজ্য অব্যাহত রয়েছে। বিভিন্ন দেশে আইনের ভিন্নতা বহু অর্থলোভী মুনাফাখোর এইজেন্টদের জন্যে আন্তঃদেশীয় বাণিজ্যের এক সুবর্ণ সুযোগ ক’রে দিয়েছে। আর এই অনিয়ন্ত্রিত সারোগেসি বাণিজ্যতে ঝুঁকি ও ক্ষতির স্বীকার হচ্ছেন নারীরা।

আগ্রহী যুগলরা সারোগেসি সুবিধে পেতে অন্য দেশে যাওয়ার কারণ শুধুই কি আইনী বাধা? না, এর সঙ্গে অর্থনৈতিক বিষয়টিও জড়িত রয়েছে।

এই শিশু বাণিজ্যের পেছনে খরচ হয় বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন রকম। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যেখানে খরচ পড়ে সর্বনিম্ন ১০০ হাজার ডলার, সেখানে গ্রীসে এর খরচ পড়ে ৮০ হাজার ডলার আবার জর্জিয়াতে খরচ পড়ে ৪০/৫০ হাজার ডলার। এভাবে সারোগেসি যেন এক শিশু কেনার বাজারে দর কষাকষির বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এক্ষেত্রে প্রত্যেক দেশেই লভ্যাংশের বড় অংশটি চলে যায় এইজেন্টদের পকেটে। বহু ক্ষেত্রে অল্প মূল্যে বিকিয়ে দেওয়া হয় একজন নারীর শরীরকে, বিশেষ ক’রে এর স্বীকার হন স্বল্পোন্নত দেশগুলোর প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর নারীরা।

আমরা অনেকেই হয়তো জানিনা, ইউক্রেন যুদ্ধের আগে ইউক্রেনকে বলা হত সারোগেসি হাব। ইউক্রেনে বিদেশীদের সারোগেসিতে কোনো আইনী বাধা ছিল না। তাছাড়া সেদেশে খুব অল্প সময়ের মধ্যে গড়ে উঠেছিল আই ভি এফ ক্লিনিক এবং জনবহুল একটি দেশ হওয়াতে ইউক্রেনে সারোগেট নারীর প্রাপ্যতা নিয়েও সমস্যা ছিল না। চীন, বৃটেন, জার্মানি, ইটালী, বুলগেরিয়া ও ফ্রান্সের বহু শিশুদের গর্ভে ধারণ করেছে ইউক্রেনের নারীরা। কেবলমাত্র একটি দেশ ইউক্রেনেই  যুদ্ধের আগে প্রতি বছর বিদেশীদের জন্যে আড়াই হাজার সারোগেট শিশুর জন্ম দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে অর্ধেকই ছিল চীনা শিশু কারণ চীনে সারোগেসি একেবারে অবৈধ।

কিছু কিছু দেশ যেমন লাউস, গুয়েতেমালা, কেনিয়া – এসব দেশ যেখানে আইন খুবই অস্পষ্ট সেসব দেশে সারোগেসি বাণিজ্য চলছে অনিয়ন্ত্রিতভাবে যেখানে সারোগেট নারীদের কোনো ধরনের রক্ষাকবজ  নেই। ফলে তারা শোষণের  স্বীকার হচ্ছেন প্রচন্ডভাবে।  এই সারোগেট নারীদের যদি কোনো কারণে এবর্শন বা গর্ভপাত হয়ে যায় তাহলে তাদের আর কোনো অর্থই দেওয়া হয় না। এই সুযোগটি নিয়ে কেনিয়া সহ বেশ কয়েকটি আফ্রিকার দেশে অর্থলোভী এইজেন্টরা বুকিং মানি পকেটে নিয়ে সারোগেট নারীদের মাঝ পথে ভয় দেখিয়ে গর্ভপাত করিয়ে একটি কানা কড়িও না দিয়ে বিদায় করে দেয়। সম্প্রতি এক অনুসন্ধানী সাংবাদিক দেখিয়েছেন কিভাবে নাইরোবির কাছে ডানডোরা অঞ্চলে লেখাপড়া না জানা সুবিধেবঞ্চিত বহু নারী এই দুর্ভাগ্যের স্বীকার হয়েছেন এবং কিভাবে বহু নারী গর্ভাবস্থায় প্রয়োজনীয় চিকিৎসা না পেয়ে বাকী জীবনের জন্যে শারীরিক ক্ষত নিয়ে বেঁচে আছেন। এমনও দৃষ্টান্ত রয়েছে যেখানে এই অর্থলোভী দালালরা গর্ভপাত করানোর পরে গর্ভের মৃত শিশুটির অংশবিশেষ শরীরের মধ্যে রেখে দিয়ে চিকিৎসা ছাড়াই অনেক দরিদ্র সারোগেট নারীকে বিদায় ক’রে দিয়েছে। আফ্রিকার বহু দেশ যেখানে প্রসব সংক্রান্ত মৃত্যু ও প্রসব সংক্রান্ত নানাবিধ সমস্যার হার (maternal mortality & morbidity) বেশী সেসব দেশে সারোগেট নারীদের জীবনে নেমে আসে বাড়তি দুর্ভোগ।

বাস্তবতা হল সামাজ বিবর্তনের এই নতুন ধারা যেখানে নারী পুরুষের যুগলের বাইরেও নানা ধরনের পরিবারের নানা ধরনের সংজ্ঞা রয়েছে সেখানে কারো পছন্দ হোক আর না-ই হোক সারোগেট বাণিজ্য বেড়েই চলবে – এই‌ সারোগেসিকে কোনোভাবেই বন্ধ করা যাবেনা। কাজেই অবধারিত ক্রমবর্ধমান বাণিজ্যকে কিভাবে নিয়ন্ত্রিত করা যায় এবং কিভাবে নারীর শারীরিক ঝুঁকি কমিয়ে আনা যায় তার জন্যে বিশ্বব্যাপী  নারীবান্ধব আইনের  প্রয়োজন।

সারোগেসি একটি গ্লোবাল বাণিজ্যে পরিণত হলেও দেশ ভেদে আইনের ভিন্নতা দূর করা এতটা সহজসাধ্য কাজ নয়। যেমন বৃটেনে যুগলরা সারোগেট শিশুদের আইনি মালিকানা বা আইনী অধিকার  পেতে গলে ছ’মাস সময় দিতে হয়। এর মধ্যে যে কেউ ঐ শিশুর  মালিকানা হারাতে পারেন‌। বৃটেনে সারোগেট নারীদের অর্থ প্রাপ্তির বিষয়টিও এখনো সুস্পষ্ট নয় যদিও তাঁদেরকে প্রেগনেন্সি এলাওয়েন্স দেওয়া হয়। বৃটেনে সারোগেসিকে অনেকটা পরোপকার হিসেবে দেখানো হয়। ক্যানাডা ও অষ্ট্রেলিয়াতেও একই নিয়ম। তবে বৃটেনের আগ্রহী যুগলের প্রায় ৭০ ভাগই অন্য দেশে যায় এই শিশু বাণিজ্যের জন্যে।

এত কিছুর পরও যে প্রশ্নটি  থেকে যায় তা হচ্ছে এই সারোগেট  শিশুদের জেনেটিক মা কে আর সারোগেট মা-ই বা কে? এ প্রশ্নগুলোর উত্তর এত সহজ নয় – এ নিয়ে বিশ্বব্যাপী কোনো আইন নেই। এই শিশুদের কোন বয়সে এসব তথ্য জানানো হবে বা আদৌ জানানো হবে কিনা সেসব বিষয়েও রয়েছে নানা মতবিরোধ। এ এক অনাগত অদ্ভুত অবস্থার মুখে পড়তে যাচ্ছে বিশ্বের বহু অনাগত শিশু‌; আর সেই সাথে অনিয়ন্ত্রিত সারোগেসির কারণে বিশ্বের বহু নারী পড়তে থাকবেন স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে; স্বীকার হতে থাকবেন আর্থিক শোষণের; আর বিপন্ন হতে থাকবে তাঁদের জীবন। এই সত্যটি আমরা ক’জনা হৃদয়ঙ্গম করছি?

………………………………….

লেখক একজন চিকিৎসক, জনপ্রিয় সিনিয়র সংবাদ পাঠক, কলামিষ্ট ও পাবলিক স্পীকার