থাইল্যান্ডের বৌদ্ধমঠে যৌন কেলেঙ্কারির অভিযোগ! ১১ ভিক্ষুর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ
পোস্ট ডেস্ক :
পবিত্র বৌদ্ধ মঠে যৌন সম্পর্ক, তারপর ব্ল্যাকমেইল করে মঠের তহবিল থেকে বিপুল অর্থ আত্মসাৎ—এমনই এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা সামনে আসতেই তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে থাইল্যান্ডজুড়ে। ঘটনায় জড়িত রয়েছেন অন্তত ১১ জন বৌদ্ধ ভিক্ষু। পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে, এদের মধ্যে ৯ জন ভিক্ষু একটি নারীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন মঠের মধ্যেই, আর পরে সেই ভিডিও ব্যবহার করে ব্ল্যাকমেইল করতে শুরু করেন ওই নারী। অভিযুক্ত ওই নারীর নাম উইলাওয়ান এমসাওয়াত।
পুলিশ জানিয়েছে, তিনি বৌদ্ধ ভিক্ষুদের সঙ্গে গোপনে সম্পর্ক গড়ে তুলে সেই সময়ের অন্তরঙ্গ মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি করতেন। এরপর ভিডিও ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ব্ল্যাকমেইল শুরু করতেন। সম্মানহানির আশঙ্কায় অভিযুক্ত ভিক্ষুরা তার দাবি মেনে নিতেন।
সূত্রের খবর, মঠের দানের তহবিল থেকেই প্রতি মাসে বড় অঙ্কের অর্থ পাঠানো হত এমসাওয়াত-এর অ্যাকাউন্টে। তদন্তে জানা গেছে, ১২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি অর্থ তুলে দেওয়া হয়েছে ওই নারীর অ্যাকাউন্টে। পরিস্থিতি এতটাই গুরুতর হয়ে ওঠে যে, থাইল্যান্ডের রাজা মহা বাজিরালংকর্ণ স্বয়ং পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হন। তার জন্মদিনের রাজকীয় অনুষ্ঠানে সমস্ত ভিক্ষুদের আমন্ত্রণ বাতিল করে দেওয়া হয়। তিনি স্পষ্ট জানান, “এই অবস্থায় তাদের উপস্থিতি জনআস্থার পরিপন্থী।
পাশাপাশি, ন্যাশনাল অফিস অব বুদ্ধিজম এবং সংঘ সুপ্রিম কাউন্সিল অভিযুক্ত ভিক্ষুদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। ইতিমধ্যেই তাদের সন্ন্যাস-পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে এবং মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। ঘটনার গভীরতা বিচার করে গঠন করা হয়েছে বিশেষ টাস্কফোর্স।
প্রসঙ্গত, থাইল্যান্ডে বৌদ্ধ ধর্মের প্রভাব অত্যন্ত গভীর। দেশের প্রায় ৯৫ শতাংশ মানুষ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী এবং একজন ভিক্ষুকে ব্রহ্মচর্য মেনে চলা, সমাজসেবা ও আত্মসংযমে জীবন কাটানোর শিক্ষা দেওয়া হয়। এমন পরিস্থিতিতে এই ঘটনায় ধর্মীয় বিশ্বাসে ভাঙন ধরেছে বলেই মত সাধারণ নাগরিকদের একাংশের।




