বাংলাদেশের ইলিশ আসার খবরে পশ্চিমবঙ্গে সকলে খুশি
পোস্ট ডেস্ক :

পশ্চিমবঙ্গের মানুষের কাছে বাংলাদেশের পদ্মার ইলিশের আলাদা চাহিদা রয়েছে। এবার পুজোর মরসুমে বাংলাদেশের ইলিশ আসবে কিনা তা নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিল সকলের মধ্যে। তবে সোমবার বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনুমোদনের খবর এপারে আসতেই সকলের মধ্যে খুশির পরিবেশ দেখা দিয়েছে। মাছ ব্যবসায়ী থেকে সাধারণ মধ্যবিত্ত সকলেই দারুণ খুশি।
গত বছর পুজোর মরসুমে বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রক প্রথমে প্রায় ৩,০০০ টন ইলিশ ভারতে রপ্তানির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু পরে তা কমিয়ে ২,৪২০ টন ইলিশ ভারতে পাঠানোর অনুমতি দিয়েছিল অন্তর্বর্তী সরকার। তবে সময় কম থাকায় সেই পরিমাণ ইলিশ আমদানি করা যায় নি। এ বার ১,২০০ টন রফতানির অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। প্রতি কেজি ইলিশ ন্যূনতম সাড়ে ১২ ডলারে রফতানি করা যাবে বলে জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ সরকার বিদেশে ইলিশ রফতানির প্রথম অনুমতি দিয়েছিল ২০১৯ সালে। তখন থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত পুজোর সময়ে ভারতে ইলিশ পাঠানো হয়েছে। শেখ হাসিনার সরকার ইলিশ রপ্তানির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও দুর্গাপুজোর সময়ে ভারতে ইলিশ রফতানি হয়ে আসছে গত বেশ কয়েক বছর ধরে। তবে গত বছর হাসিনার সরকারের পতনের পরে বাংলাদেশ থেকে ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল। বাংলাদেশ সরকার প্রথমে জানিয়েছিল, উৎসবের মরসুমে ভারতে ইলিশ রপ্তানির বন্ধ রাখা হচ্ছে। অভ্যন্তরীণ চাহিদার কারণেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানানো হয়েছিল। নেপথ্যে অন্য কোনও কারণ নেই বলেও জানিয়েছিল মুহাম্মদ ইউনূসের সরকার। যদিও পরে ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেয় তারা।
পরবর্তী সময়ে ইউনূস সরকার এ-ও জানিয়েছিল, ইলিশের মতো ‘ক্ষুদ্র ইস্যু’ ভারত-বাংলাদেশের কূটনৈতিক এবং অর্থনৈতিক সম্পর্কে কোনও প্রভাব ফেলবে না।
এ বছর অর্ধেক কম এলেও বাংলাদেশের ইলিশ পুজোর উৎসবে পাতে তুলে দিতে পারবেন জেনেই এপারের বাঙালিরা খুশি। কলকাতার এক প্রবীণ অধ্যাপক জানিয়েছেন, অবশেষে ইলিশ আসবে জেনেই ভালো লাগছে। তিনি বলেন, কলকাতার বাজারগুলি ডায়মন্ডহারবার, গুজরাট ও মায়ানমারের ইলিশে ছয়লাব। কিন্তু পদ্মার ইলিশের স্বাদ নেই এই সব ইলিশে।
কলকাতার মানিকতলা ও গড়িয়াহাটের মাছের খুচরো কারবারীরা জানিয়েছেন, কয়েকদিন ধরেই ক্রেতারা বাংলাদেশের ইলিশ আসবে কিনা তার খোঁজ করছিলেন।
অবশ্য এবছরও ইলিশ যাতে বাংলাদেশ পাঠায় সেজন্য অনুরোধ জানিয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনকে চিঠি লিখেছিলেন ইলিশ আমদানি করা সংগঠন ফিস ইমপোরটারস অ্যসোসিয়েশন। অ্যাসোসিয়েশনের সচিব সৈয়দ আনোয়ার মাকসুদ এই চিঠিতে জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশ সরকার দ্রুত ইলিশ রফতানির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিলে ঘোষিত বরাদ্দের ইলিশ আমদানি করা সম্ভব। তাই ফিশ ইমপোরটারস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ সরকারকে পর্যাপ্ত সময় দিয়ে রফতানি বরাদ্দ অনুমোদন দেওয়ার অনুরোধ করেছিল।




