নেপালের হাসপাতালে হাসপাতালে রক্তের জন্য হাহাকার
পোস্ট ডেস্ক :

নেপালে চলমান সরকারবিরোধী বিক্ষোভে আহতদের চিকিৎসার জন্য রক্তের চাহিদা তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠছে। দেশটির জাতীয় ব্লাড ব্যাংক সেন্ট্রাল ব্লাড ট্রান্সফিউশন সার্ভিসের টেকনিক্যাল কর্মকর্তা সঞ্জীব কুমার যাদব এ তথ্য জানিয়েছেন। -কাঠমান্ডু পোস্ট
নেপালের জাতীয় দৈনিক কাঠমান্ডু পোস্টকে সঞ্জীব কুমার যাদব বলেছেন, “কাঠমান্ডুর হাসপাতালগুলোতে শত শত আহত রোগী ভর্তি হচ্ছেন। তাদের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন হাজার হাজার ব্যাগ রক্ত। আমরা এখন রক্ত সংগ্রহের কাজে খুবই ব্যস্ত আছি।”
রক্তের জন্য বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে বিরতিহীনভাবে তাদের দপ্তরে ফোন আসছে— উল্লেখ করে সঞ্জীব বলেন, “সোমবার সকাল থেকে এ পর্যন্ত আমরা ১ হাজার ২০০ ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ করেছি এবং সেগুলোর মধ্যে ২০০টিরও বেশি ব্যাগ সন্ধ্যার আগেই ন্যাশনাল ট্রমা সেন্টার ও বীর হাসপতাাল পাঠানো হয়েছে। বাকি হাসপাতালগুলোতেও শিগগিরই রক্ত পাঠানোর চেষ্টা চলছে।”
“এবং আশার কথা হলো— শত শত তরুণ-তরুণী স্বেচ্ছায় রক্ত দিতে আসছেন। তাদের কাছ থেকে রক্ত সংগ্রহের জন্য আমাদের প্রতিষ্ঠানের ২০ জন কর্মী সারাক্ষণ তৎপর আছেন।” গত বছর নেপালের সুপ্রিম কোর্ট দেশটিতে সক্রিয় সামাজিক যোগাযোগমগুলোকে সরকারিভাবে নিবন্ধিত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। হাইকোর্টের সেই নির্দেশের ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলির নেতৃত্বাধীন সরকার দেশে সক্রিয় সামাজিক যোগাযোগামাধ্যমগুলোকে নিবন্ধনের জন্য গত ২৮ আগস্ট থেকে ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল।
কিন্তু নির্ধারিত সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরও সরকারিভাবে নিবন্ধন না করায় ফেসবুক, এক্স, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউবসহ ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার। গত ৪ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হয়েছে এ নিষেধাজ্ঞা। এদিকে, সরকারের এই নিষেধাজ্ঞা ব্যাপকভাবে ক্ষুব্ধ করে দেশটির স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া শিক্ষার্থী এবং তরুণ প্রজন্মকে। জেন জি নামে পরিচিত এই তরুণ প্রজন্ম গত ৪ সেপ্টেম্বর থেকেই সরকারের এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছিল।
অবশেষে গতকাল রোববার থেকে শুরু হয় আন্দোলন এবং আজ সোমবার তা রীতিমতো উত্তাল হয়ে ওঠে। রাজধানী কাঠমান্ডুতে কারফিউ অমান্য করে বিক্ষোভে নামেন শিক্ষার্থী-জনতা। বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করতে কাঠমান্ডুর বাণেশ্বরসহ বিভিন্ন এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ২০ জন, আহত হয়েছেন আরও বহু।




