সন্ধ্যায় স্ত্রীকে ছুরিকাঘাত, পরদিন সকালে স্বামীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

Published: 9 September 2025

পোস্ট ডেস্ক :


পটুয়াখালীর গলাচিপায় গলায় গামছা পেঁচানো অবস্থায় আলামিন গাজী (৪৫) নামের এক ব্যক্তির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলার পানপট্টি ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের তুলারাম গ্রামের মিজান মিয়ার ঘের পাড়ে একটি গাছ থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

এর আগে সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে স্ত্রী নাজমা বেগমকে (৪৫) অটোরিকশায় ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে একই ইউনিয়নের বাঁশতলা এলাকায় ছুরিকাঘাত করে রাস্তায় ফেলে রেখে পালিয়ে যান আলামিন গাজী।

মৃত আলামিন গাজীর বাড়ি বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার কালেখারবেড় গ্রামে।

তার বাবার নাম মিজান গাজী ও মায়ের নাম নাছিমা বেগম।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৭টার দিকে স্ত্রী নাজমা বেগমকে (৪৫) অটোরিকশায় ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে নিয়ে যায় আল আমিন। পরে পানিপট্টি ইউনিয়নের বাঁশতলা এলাকায় কাজী বাড়ির সামনের রাস্তায় গেলে নাজমাকে ছুরিকাঘাত করে রাস্তায় ফেলে রেখে পালিয়ে যান তিনি। পরে স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় নাজমাকে উদ্ধার করে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।

বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন।
অন্যদিকে, ঘটনার পর আল আমিনের অটোরিকশাটি পানপট্টি বোয়ালিয়া বেড়িবাঁধের পূর্বপাশে গাজী বাড়ির সামনে বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে বিধ্বস্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। স্ত্রীকে ছুরিকাঘাতের পর থেকে আল আমিন নিখোঁজ ছিলেন। ঘটনার একরাত পর আজ মঙ্গলবার সকালে পানপট্টির তুলারাম গ্রামের মিজান মিয়ার ঘের পাড়ে একটি গাছে আল আমিনের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

স্থানীয়রা জানায়, নাজমা বেগমের বাবার নাম জলিল মিস্ত্রি (বিশ্বাস)। তিনি ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা হলেও নাজমা ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাঁশতলা এলাকায় বসবাস করতেন। মুরগির ফার্ম পরিচালনা করে জীবিকা নির্বাহ করতেন তিনি। নাজমার আগেও দুটি বিয়ে হয়েছিল। প্রথম স্বামীর ঘরে তার এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।

প্রায় দুই মাস আগে প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে নাজমা ও আল আমিনের বিয়ে হয়। চার বছর আগে কাজের সূত্রে বাগেরহাট থেকে গলাচিপায় আসেন আল আমিন। গলাচিপায় প্রায় দুই বছর কাজ করে তিনি (আল আমিন) নিজ বাড়ি খুলনায় ফিরে যান। তবে এর মধ্যে নাজমার সঙ্গে পরিচয় থেকে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই সূত্রে ফিরে এসে তাদের বিয়ে হয় এবং একসঙ্গে সংসার করছিল। এরমধ্যে নাজমার প্রথম স্বামীর ছেলে সজল আল আমিনের জন্য একটি অটোরিকশা কিনে দিয়েছিল, যা চালিয়েই তাদের সংসার চলছিল।
গলাচিপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আশাদুর রহমান বলেন, পারিবারিক ও দাম্পত্য কলহের জেরে তার স্ত্রী নাজমাকে সোমবার সন্ধ্যায় ঘুরতে নিয়ে গিয়ে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। এরপর মঙ্গলবার সকালে আল আমিনের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় গলাচিপা থানায় একটি ইউডি মামলা করা হয়েছে। আল আমিনের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তদন্তের পর ঘটনার কারণ জানানো হবে।