বিক্ষোভে উত্তাল ফিলিপাইন
পোস্ট ডেস্ক :

এবার দুর্নীতির বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে ফিলিপাইনের জনগণ। রোববার দেশটির রাজধানী ম্যানিলায় বিক্ষোভ করেছেন দেশটির হাজার হাজার ছাত্র-জনতা। বলা হচ্ছে বন্যা নিয়ন্ত্রণে সরকারি বরাদ্দে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের দুর্নীতি হয়েছে। বিক্ষোভ দমনে এখনও কঠোর না হলেও সতর্ক অবস্থানে আছে সরকার। পুলিশের পাশপাশি সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। সরকারের তরফে বলা হয়েছে, ‘লাল সতর্কতা’ হিসেবে সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা।
এতে বলা হয়, সম্প্রতি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ইন্দোনেশিয়ায় মারাত্মক সহিংসতা হয়েছে। সেখানে পুলিশি সহিংসতা, সংসদ সদস্যদের বেতন বৃদ্ধি এবং ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতির বিরুদ্ধে দেশব্যাপী আন্দোলন হয়েছে। ম্যানিলায় বিক্ষোভকারীরা ফিলিপাইনের পতাকা উড়িয়ে দুর্নীতিবাজদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে। বিক্ষোভকারীদের হাতে ‘আর না, অনেক হয়েছে, ওদের জেলে ঢোকাও’- লেখা ব্যানার ছিল। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বরাদ্দে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত সকলের বিচার দাবি করেছেন তারা।
আন্দোলনে তরুণদের উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মতো। ছাত্র নেতা আলথিয়া ত্রিনিদাদ বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, আমরা দারিদ্র্যে ডুবে আছি এবং আমাদের বাড়িঘর, জীবন ও ভবিষ্যৎ হারাচ্ছি, অথচ তারা আমাদের করের টাকায় বিলাসবহুল গাড়ি, বিদেশ ভ্রমণ এবং বড় বড় কর্পোরেট লেনদেন থেকে বিশাল অর্থ উপার্জন করছে। এটা আমার কাছে খারাপ লাগে। তিনি আরও বলেন, আমরা এমন একটি ব্যবস্থা চাই যেখানে মানুষ আর শোষিত হবে না।
এএফপি তরফে বলা হয়েছে, রোববার সকালে ম্যানিলার লুনেটা পার্কে প্রায় ১৩ হাজার বিক্ষোভকারী জড়ো হয়েছে। জুলাই মাসে প্রেসিডেন্ট ফার্ডিনান্ড মার্কোস জুনিয়র তার বার্ষিক ‘স্টেট অফ দ্য নেশন’ ভাষণে ওই কেলেঙ্কারির কথা তুলে ধরার পর তথাকথিত ‘ভুতুড়ে অবকাঠামো প্রকল্প’ নিয়ে জনমনে ক্ষোভ বাড়তে থাকে। মার্কোস পরে একটি স্বাধীন কমিশন গঠন করেন, যা ৯ হাজার ৮৫৫টি বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের বেশিরভাগ প্রকল্প তদন্ত করবে। এই প্রকল্পগুলোর মোট বরাদ্দ ছিল ৫৪৫ বিলিয়ন (৯ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার) পেসো। জনগণের ক্ষোভ আরেকটি কারণ হচ্ছে- বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের চুক্তি সারাহ ও প্যাসিফিকো ডিসকায়া নামের এক দম্পতিকে দেয়া হয়েছে। যারা অতি বিলাসী জীবন যাপনে অভ্যস্থ। বন্যা নিয়ন্ত্রণের মতো এমন একটি গণপ্রকল্প এই ধনী দম্পতিকে দেয়া জনগণের মধ্যে ক্ষোভ বাড়িয়ে দিয়েছে।
আন্দোলনের ওপর গভীর নজর রাখছে সরকার। সতর্কতা স্বরূপ আগে থেকেই সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। মার্কোস গত সোমবার বলেন, এই কেলেঙ্কারির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার জন্য তিনি জনগণের উপর মোটেও অসন্তুষ্ট নন। বিক্ষোভকারীদের শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। তবে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এদিকে ম্যানিলা থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক বার্নাবি লো জানান, এই প্রতিবাদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিভিন্ন খ্রিস্টান চার্চ। ক্যাথলিক চার্চগুলোর নেতৃত্বে একত্রিত হয়েছে ফিলিপাইনের জনগণ।




