মেরুদণ্ডহীন ভালো মানুষ মানবাধিকার কমিশনে দরকার নেই : দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য
পোস্ট ডেস্ক :

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নেতৃত্বে মেরুদণ্ডহীন ভালো মানুষকে বসিয়ে দেওয়া যাবে না। মেরুদণ্ডহীন ভালো মানুষ কোনো দিন অন্য কারো জন্য তার মেরুদণ্ড সোজা করতে পারেন না। সে জন্য মেরুদণ্ডহীন ভালো মানুষও দরকার নেই বলে মন্তব্য করেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে নাগরিক প্ল্যাটফরম আয়োজিত ‘খসড়া জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ-২০২৫’ শীর্ষক আলোচনায় তিনি অংশ নেন।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘বিগত সময়ে বাংলাদেশ নখদন্তহীন ও মেরুদণ্ডহীন মানবাধিকার কমিশন পেয়েছে। এবার যেন সেই ভুল আর না হয়।’
তিনি স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, ‘২০০৯ সালের জানুয়ারিতে ড. ফখরুদ্দিন আহমেদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় এই আইনের খসড়া তৈরি হয়। পরবর্তীতে সেই আইনের ভিত্তিতেই কমিশন গঠিত হয় এবং একাধিক চেয়ারম্যান নিয়োগ পান।
তবে ২০২৪ সালের ৭ নভেম্বর অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার কমিশনটি বাতিল করে দেয়। এর ফলে প্রায় এক বছর ধরে দেশে মানবাধিকার কমিশন নেই, যদিও এ সময়ে অন্যান্য কমিশন গঠন করা হয়েছে।’
ড. দেবপ্রিয় বলেন, ‘জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নামে অতীতে যে কমিশনগুলো গঠন করা হয়েছে, তা ছিল কার্যত নখদন্তহীন। যার দাঁতও নেই, কামড়ও দিতে পারে না।
আমরা সেই রকম কমিশন চাই না। আমরা চাই একটি শক্তিশালী কমিশন, যা মানুষের অধিকার রক্ষায় সত্যিকার অর্থে ভূমিকা রাখতে পারবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘নতুন কমিশনের নেতৃত্বে এমন কাউকে বসানো যাবে না, যিনি মেরুদণ্ডহীন ভালো মানুষ হিসেবে পরিচিত। আমাদের প্রয়োজন সৎ, নীতিবান ও সাহসী মানুষ, যারা প্রয়োজনে সরকারের সঙ্গেও লড়াই করতে পারবেন।’
আলোচনায় অংশ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, ‘অতীতে মানবাধিকার কমিশন অনেক ক্ষেত্রে কাজ করলেও পার্বত্য চট্টগ্রামের মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি।
খসড়া আইনে সেই দিকটি উপেক্ষিত মনে হচ্ছে।’
আলোচনায় বাংলাদেশ রিফর্ম ওয়াচের পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রস্তাবিত খসড়ায় দুটি মূল লক্ষ্য রয়েছে দুটি। এক, আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে কমিশনের গঠন, স্বাধীনতা ও কার্যপরিধি বিশ্লেষণ। দুই, খসড়াকে আরো কার্যকর করার জন্য পরামর্শ দেওয়া, যাতে কমিশন নির্ভরযোগ্য অনুসন্ধানী ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারে এবং ভুক্তভোগী ও সংখ্যালঘুদের সুরক্ষায় বাস্তব পদক্ষেপ নিতে পারে।




