কুলাউড়ায় ৮ দফা দাবিতে ট্রেন অবরোধ
কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) উপজেলা সংবাদদাতা

দীর্ঘ আড়াই মাস সিলেট বিভাগ জুড়ে মানববন্ধন কর্মসূচির পর শনিবার ২৭ সেপ্টেম্বর কুলাউড়ায় অবস্থান ধর্মঘট পালন করে আন্দোলনকারীরা। সকাল ১১টায় কুলাউড়া জংশন স্টেশনে অবরোধ কর্মসূচি শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। এসময় সিলেট থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী আন্ত: নগর পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেন আধাঘণ্টা আটকা পড়ে। পরে রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার আশ্বাসে ১৫ দিনের জন্য কর্মসূচি স্থগিত করা হয়।
৮ দফা দাবি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক আজিজুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং অপর সমন্বয়ক আতিকুর রহমান আখই ও সাংবাদিক নাজমুল বারি সুহেলের পরিচালনায় অবস্থান ধর্মঘট চলাকালে বক্তব্য দেন সাবেক এমপি ও জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা নওয়াব আলী আব্বাস খান, উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি জয়নাল আবেদীন বাচ্চু, সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সজল, উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মো. জাকির হোসেন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুল হক খান সাহেদ, সাংবাদিক খালেদ পারভেজ বখ্শ, ৮ দফা দাবি বাস্তবায়ন সিলেটের সমন্বয়ক আমিন উদ্দিন, কুলাউড়া ব্যবসায়ী সমিতির যুগ্ম সম্পাদক আলমাছ পারভেজ তালুকদার, ভাটেরা বণিক সমিতির সভাপতি আকমল হোসেন তালুকদার, বিএনপি নেতা সিপার আহমেদ, সাংবাদিক মাহফুজ শাকিল, এইচ ডি রবেল, রফিকুল ইসলাম মামুন, সাইফুল ইসলাম সিদ্দিকী, সংগঠক সামছুদ্দিন বাবু, আব্দুল মজিদ, ছাত্র সমন্বয়ক শামীম আহমদ প্রমুখ।
এদিকে অবস্থান ধর্মঘট চলাকালে সিলেট থেকে ছেড়ে আসা আন্ত :নগর পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেন কুলাউড়া স্টেশনে আসলে বিক্ষোভকারীরা ট্রেনটি অবরোধ করেন। আধঘণ্টা ট্রেন আটকে থাকার পর কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: মহি উদ্দিন, কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো: ওমর ফারুক, রেলওয়ে থানার ওসি জাহাঙ্গীর হোসেন, স্টেশন মাস্টার রোমান আহমদের নেতৃত্বে পুলিশ, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্য ও বিজিবির সদস্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আন্দোলনকারীদের সাথে কথা বলেন। এসময় ৮ দফা দাবির বিষয়টি রেলওয়ের ডিআরএম মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আরিফ আগামী ১৫ দিনের মধ্যে কুলাউড়া এসে আন্দোলনকারীদের সাথে আলোচনা করে দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দেন। তখন জনদুর্ভোগের কথা চিন্তা করে আধা ঘণ্টা পর ধর্মঘট স্থগিত করে নেন আন্দোলনকারীরা। পরে অবরোধে আটকা পড়া পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেন নির্দিষ্ট গন্তব্যের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে।বাংলাদেশ ভ্রমণ
সভায় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে বক্তারা বলেন, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ দাবির ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। তখন একযোগে গোটা সিলেটে ট্রেন অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
বক্তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আড়াই মাস থেকে শান্তিপূর্ণ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। কিন্তু রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এই আন্দোলনে কোনো ধরনের প্রতিকার না করায় আমরা কঠোর আন্দোলনের ডাক দিতে বাধ্য হয়েছি। রেল যোগাযোগের ক্ষেত্রে সিলেট বিভাগ সবসময় বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। সিলেট বিভাগের রেললাইন সবচেয়ে বেশি অবহেলিত ও উন্নয়ন বঞ্চিত। সারাদেশের তুলনায় সিলেট বিভাগ উন্নয়নের ক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে। অথচ রেল বিভাগ আয়ের ক্ষেত্রে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ যদি ৮ দফা দাবি বাস্তবায়নে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ না করেন শুধু অবস্থান ধর্মঘট নয় আগামীতে গোটা সিলেট জুড়ে রেল অবরোধের ডাক দেয়া হবে।
উল্লেখ্য, ইতোমধ্যে কুলাউড়া জংশন স্টেশনসহ বিভিন্ন বন্ধ রেলস্টেশনে, সিলেট রেলস্টেশন, শ্রীমঙ্গল, ভাটেরা, টিলাগাঁও, লংলা রেলস্টেশনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। দাবি আদায়ে রেলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে স্মারকলিপিও দেয়া হয়।




