জুলাই সনদে স্বাক্ষর করবে না ৪ বাম দল
পোস্ট ডেস্ক :

বিদ্যমান সংবিধানের চার মূল নীতিকে বাদ দিয়ে জুলাই সনদ হলে সেই সনদে স্বাক্ষর করবে না চার বাম দল। দলগুলোর নেতারা বলছেন, আদালতে প্রশ্ন করা যাবে না এমন বিষয়ে অঙ্গীকার করতে হয় এমন সনদে স্বাক্ষর করা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। বৃহস্পতিবার পল্টনের মুক্তি ভবনে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল বাসদ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী) ও বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল বাংলাদেশ জাসদ যৌথভাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন দলের নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনের শিরোনাম ছিল ‘কেন আমরা জুলাই সনদে স্বাক্ষর করতে পারছি না’। এতে জুলাই সনদে স্বাক্ষর না করার ৭টি কারণ তুলে ধরা হয়।
লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ। জুলাই সনদে স্বাক্ষর না করার কারণগুলো সম্পর্কে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, যেসব বিষয়ে ঐক্যমত্য হবে, কেবল সেসব বিষয়েই স্বাক্ষর নেয়া যেতে পারে। ভিন্নমতগুলো অতিরিক্ত হিসেবে সনদে সংযুক্ত থাকতে পারে। সনদে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার ইতিহাস এবং বাংলাদেশের রাজনৈতিক আন্দোলনের ইতিহাস সঠিকভাবে উপস্থাপিত হয়নি। এ বিষয়ে সংশোধনী দিলেও ঐক্যমত কমিশন সেগুলো সন্নিবেশিত করেনি। নোট অব ডিসেন্টগুলো কীভাবে সংবিধানে যুক্ত হবে তাও বোধগম্য নয়। জুলাই সনদ নিয়ে কেউ আদালতের শরণাপন্ন হতে পারবে না এটা নাগরিকের মৌলিক অধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকারের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। স্বাধীনতার ঘোষণা ডিক্লারেশন অব ইনডিপেন্ডেন্সে এবং প্রোক্লেমেশন অব ইনডিপেনডেন্স বাদ দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে, যা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ভিত্তি। সেটা বাদ দিলে বাংলাদেশের অস্তিত্বই থাকে না।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সংবিধানের ১০৬ অনচ্ছেদে সুপ্রিম কোর্টের রেফারেন্স নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হওয়ার কথা পূর্বে পাঠানো খসড়া সনদে উল্লেখ থাকলেও চূড়ান্ত সনদে ১০৬ অনুচ্ছেদের কথা বাদ দেয়া হয়েছে। বিশেষ করে সংবিধানে বিদ্যমান চার মূল নীতি গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও জাতীয়তাবাদ বিকৃত করা হলে সেই সনদে তারা স্বাক্ষর করবে না।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন, বাসদের (মার্কসবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা, বাংলাদেশ জাসদের স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. মুশতাক হোসেন। এ সময় সিপিবির সভাপতি সাজ্জাদ জহির চন্দন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্সসহ অন্য দলের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এক প্রশ্নের জবাবে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গণফোরামের সঙ্গে তাদের কথা হয়েছে। গণফোরাম সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থাকলেও এসব দাবির সঙ্গে ভিন্নতা থাকলে তারাও জুলাই সনদে স্বাক্ষর করবে না। তবে জুলাই সনদে স্বাক্ষরের সঙ্গে আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই।




