টাইটানিক ট্রাজেডিতে নিহত যাত্রীর স্বর্ণঘড়ি নিলামে সাড়ে ২৮ কোটিতে বিক্রি

Published: 23 November 2025

পোস্ট ডেস্ক :


টাইটানিক ট্রাজেডিতে নিহত এক ধনাঢ্য যাত্রীর মৃতদেহ থেকে উদ্ধার হওয়া একটি স্বর্ণের ঘড়ি নিলামে ১৭ লাখ ৮০ হাজার পাউন্ডে বিক্রি হয়েছে। বাংলাদেশি টাকায় যার মূল্য প্রায় সাড়ে ২৮ কোটি টাকা। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।

এতে বলা হয়, সময়কাল ১৯১২ সাল। ওই বছরের ১৪ এপ্রিল বরফখণ্ডের সঙ্গে সংঘর্ষে গভীর আটলান্টিক সাগরে তলিয়ে যায় তৎকালীন সময়ের সর্ববৃহৎ যাত্রীবাহী জাহাজ টাইটানিক। জাহাজটি সাউদাম্পটন থেকে নিউইয়র্কে যাওয়ার পথে এই দুর্ঘটনার শিকার হয়। এতে অন্তত ১৫০০ যাত্রী প্রাণ হারান। নিহতদের মধ্যে ছিলেন স্ট্রাউস নামের এক ধনাঢ্য ব্যক্তি ও তার স্ত্রী আইডা। পরে তাদের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। সেসময় স্ট্রাউসের শরীরে ১৮ ক্যারেট স্বর্ণের একটি জুলস জুরগেনসেন পকেটঘড়িও পাওয়া যায়। ঘড়িটি এতদিন স্ট্রাউস পরিবারের কাছেই সংরক্ষিত ছিল। শনিবার উইল্টশায়ারের ডেভাইজেস শহরে হেনরি অ্যালড্রিজ অ্যান্ড সন নিলামঘরে এটি বিক্রি হয়।
আইজিডর স্ট্রাউস ছিলেন একজন মার্কিন ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ। টাইটানিক ডুবির রাতে তার স্ত্রী আইডা একটি লাইফবোটে ওঠার সুযোগ প্রত্যাখ্যান করেন। কারণ তিনি স্বামীকে একা রেখে যেতে চাননি। আইডার দেহ উদ্ধার করা যায়নি।

ঘড়িটি থেমে যায় রাত ২টা ২০ মিনিটে। ঠিক সেই মুহূর্তে যখন টাইটানিক ঢেউয়ের নিচে তলিয়ে যায়। ধারণা করা হয়, এটি ছিল ১৮৮৮ সালে আইজিডরের ৪৩তম জন্মদিনে আইডার উপহার। পরে ঘড়িটি পরিবারের উত্তরাধিকারসূত্রে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে এসেছে এবং তার প্রপৌত্র কেনেথ হলিস্টার স্ট্রাউস ঘড়িটির যান্ত্রিক অংশ মেরামত ও পুনরুদ্ধার করান।

নিলামকারী অ্যান্ড্রু অ্যালড্রিজ বলেন, ঘড়িটির বিশ্বরেকর্ডমূল্য টাইটানিকের গল্পের প্রতি মানুষের দীর্ঘস্থায়ী আগ্রহেরই প্রমাণ। তিনি আরও বলেন, প্রতিটি যাত্রী ও ক্রুর ছিল ভিন্ন ভিন্ন গল্প। যা ১১৩ বছর পরও এসব স্মারকের মাধ্যমে বলা হয়। স্ট্রাউস দম্পতি ছিলেন সত্যিকারের যুগল। ৪১ বছরের দাম্পত্যের পরেও আইডা স্বামীকে ছেড়ে যাননি। এই রেকর্ডমূল্য তাদের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধার প্রতিফলন।

এর আগে গত বছর আরএমএস কারপাথিয়ার ক্যাপ্টেনকে উপহার দেয়া আরেকটি স্বর্ণঘড়ি নিলামে বিক্রি হয়েছে। যেটির মূল্য ছিল ১.৫৬ মিলিয়ন পাউন্ড। স্ট্রাউসের ঘড়িটি বিক্রির আগ পর্যন্ত সেটাই ছিল সর্বোচ্চ মূল্যের।