খুলনায় আদালত চত্বরে দু’জনকে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা
পোস্ট ডেস্ক :

খুলনা জেলা ও দায়রা জজ আদালত চত্বরের প্রধান ফটকের সামনে শীর্ষ সন্ত্রাসী হাসিব হাওলাদার (৪০) ও ফজলে রাব্বি রাজন (৩৫) নিহত হয়েছে। নিহত দুই যুবক খুলনা আলোচিত শীর্ষ সন্ত্রাসী পলাশ গ্রুপের সক্রিয় সদস্য। তাদের দু’জনকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করে আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রেনেড বাবু গ্রুপের সদস্যরা।
রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আদালতের সামনে ঘটনাটি ঘটে বলে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন। ঘটনাস্থল থেকে এক রাউন্ড অবিস্ফোরিত গুলি ও একটি এফ জেড মোটরসাইকেলসহ কিছু আলামত উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনাস্থল পুলিশ কর্ডন করে রেখেছে। এ ঘটনার পর পুরা আদালত পাড়ায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল সোনাডাঙ্গা থানার একটি অস্ত্র মামলায় আদালতে হাজিরার দিন ছিল। হাসিব হাওলাদার এবং তার সহযোগী ফজলে রাব্বি রাজন আদালতে হাজিরা দেন। এরপর তারা দু’জন খুলনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের প্রধান ফটকের সামনের কেডি ঘোষ রোডে একটি মোটরসাইকেলে বসে কথা বলছিলেন। নম্বরবিহীন এফ জেড নামের ওই মোটরসাইকেলে বসা অবস্থায় প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসীরা তাদের ওপর হামলা চালায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, এ সময় সার্কিট হাউজের সামনের দক্ষিণ পাশ দিয়ে ৪-৫টি মোটরসাইকেলে ৬ যুবক তাদের চারিদিক থেকে ঘিরে ফেলে কয়েক রাউন্ড গুলি করে। ঘাতক ৪ জনের কাছে অস্ত্র ছিল। এদের মধ্যে দু’জন খুব কাছ থেকে ওই দুই সন্ত্রাসীর মাথা লক্ষ্য করে গুলি চালায়। তারা মাটিয়ে লুটিয়ে পড়লে অপর দু’জন ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপায়। এতে ঘটনাস্থলেই হাসিব হাওলাদার নিহত হয়। আর ফজলে রাব্বি রাজনকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান।
অপর এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, খুলনা জেলা রেঞ্জ ডিআইজির বাস ভবনের সামনে একটি কালো রংয়ের মাইক্রো দাঁড়িয়ে ছিল। ওই দু’যুবককে গুলি এবং কুপিয়ে রেখে যাওয়ার পর সংঘবদ্ধ ওই দুর্বৃত্তের মোটরসাইকেলের বহরের সঙ্গে মাইক্রোটি খুলনা জিলা স্কুলের সামনে দিয়ে কাস্টমঘাট এলাকার দিকে যায়। এ সময়ে গোটা আদালতপাড়া এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন মামলায় হাজিরা দিতে আসা এবং আইনজীবীরা দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করে নিরাপদ আশ্রয় নেন। সূত্রটি জানায়, ঘটনাস্থলে নিহত হাসিব হাওলাদারের লাশ তার সহযোগীরা হাসপাতালে না নিয়ে সরাসরি বাড়ি নিয়ে যায়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ খুমেক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
অপর একটি সূত্র জানায়, নিহত হাসিব এবং রাজন খুলনার শীর্ষ সন্ত্রাসী পলাশ গ্রুপের সদস্য। তাদের দু’জনের নামে হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। এ বছরের ৩০শে মার্চ রাতে যৌথবাহিনীর হাতে সন্ত্রাসী পলাশের সঙ্গে গ্রেপ্তার হয় রাজন এবং হাসিব। পরে তারা আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে বাইরে বের হয়। রোববার থানার একটি অস্ত্র মামলায় আদালতে হাজিরার দিন ছিল। সকালে তারা আদালতে হাজির হয়ে বের হওয়ার সময় দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত হয়। খুলনার অপর শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রেনেড বাবু এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে ওই সূত্রটি দাবি করে। জানতে চাইলে ঘটনাস্থলে উপস্থিত খুলনা থানার এসআই আব্দুল হাই বলেন, সন্ত্রাসীরা হাসিব ও রাজনের মাথা লক্ষ্য করে গুলি করে। ঘটনাস্থলে হাসিবের মৃত্যু হয়। অপর যুবক রাজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় তার সহযোগীরা প্রথমে খুলনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক রাজনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মৃত হাসিবকে সহযোগীরা বাড়িতে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে সেখান থেকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়।




