সিলেটে ৮ দলের সমাবেশে ডা. শফিক
সিলেটে ৮ দলের সমাবেশে ডা. শফিক
যারা নির্বাচনের জন্য বেহুঁশ ছিলেন তাদের কেউ কেউ ভিন্ন সুরে কথা বলছেন
পোস্ট ডেস্ক :

যারা নির্বাচন-নির্বাচন করে জনগণকে বেহুঁশ করে ফেলেছিল, তাদের কেউ কেউ ভিন্ন সুরে কথা বলতে শুরু করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, ফ্যাসিস্ট পালালেও ফ্যাসিবাদের কালো ছায়া দেশ থেকে হারিয়ে যায়নি। একদল ১৭ বছর এদেশে ফ্যাসিবাদ কায়েম রেখেছিল। এখন নতুন করে আরেক দল সেই ফ্যাসিবাদ ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। শনিবার বিকালে সিলেটের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে ইসলামী ও সমমনা ৮ দলীয় জোটের বিভাগীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি ও গণভোট আয়োজনসহ ৫ দফা দাবিতে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। আয়োজনে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর শীর্ষ নেতারা এ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য রাখেন। সমাবেশে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, যারা নানা বাঁকা পথে ক্ষমতায় যাবার প্রচেষ্টায় আছে তাদেরকে বলবো, বন্ধু জনগণ তোমাদের লাল কার্ড দেখিয়ে দিয়েছে। যে আকাঙ্ক্ষায় অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতা প্রাণ দিয়েছে সে আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে পূর্ণ একমত আট দল। সব দেশপ্রেমিক ও ইসলামী দলগুলোর প্রতি আহ্বান, কোনো অপরাধী দলের সঙ্গী না হয়ে ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে আসুন। আমরা আপনাদের বুকে জড়িয়ে নেবো। তিনি বলেন, যারা নতুন জুলুমকারী হয়ে উঠেছেন তাদেরকে অচিরেই কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে।
খেলাফতে মজলিসের আমীর মাওলানা আব্দুল বাছিত আযাদের সভাপতিত্ব সমাবেশে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমীর মাওলানা মামুনুল হক বলেন, গত ১৭ বছর সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত সময় পার করেছে দেশের ইসলামপন্থীরা। যে ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদ উৎখাতে জনগণ প্রাণ দিয়েছে তা আর ফিরে আসবে না। তিনি বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনা সমুন্নত রাখতে গণভোটে ‘হ্যাঁ’ জয়যুক্ত করার বিকল্প নেই। যারা না ভোটের পক্ষে প্রচারণা চালাবে তাদের জনগণ প্রত্যাখ্যান করবে। আমাদের বিভাগীয় কর্মসূচি দেখে একটি দলের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। তারা এখন নির্বাচন পেছানোর পাঁয়তারা করছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, সাত বিভাগীয় সমাবেশের পর এটা প্রমাণিত হয়েছে যে জনগণ আমাদের পাঁচ দফার সঙ্গে একমত। জুলাই অভ্যুত্থানের পর রাষ্ট্র সংস্কার, ফ্যাসিস্টদের বিচার আর সুষ্ঠু নির্বাচন ছিল গণআকাঙ্খা। কিন্তু সেই আকাঙ্ক্ষার কবর রচিত হয়েছে বলেই আমাদের রাস্তায় নামতে হয়েছে। তিনি বলেন, যারা চাঁদাবাজি, দুর্নীতি আর অপরাধে নিমজ্জিত তাদেরকে আগামী নির্বাচনে জনগণ প্রত্যাখ্যান করবে।
সমাবেশের সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সিলেট মহানগর শাখার নায়েবে আমীর ড. নুরুল ইসলাম বাবুল। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিলেট মহানগর জামায়াতের আমীর ফখরুল ইসলাম। সমাবেশে অতিথি হিসেবে আরো বক্তব্য রাখেন ইসলামী ঐক্যজোটের আমীর মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের অধ্যক্ষ মাওলানা সরওয়ার কামাল আজিজী, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির সহসভাপতি রাশেদ প্রধান এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির সভাপতি এডভোকেট আনোয়ারুল ইসলাম চাঁন। সভাপতির বক্তব্যে খেলাফত মজলিসের আমীর মাওলানা আব্দুল বাসিত আজাদ বলেন, ভোট দিলেই দায়িত্ব শেষ হবেনা। ভোট রক্ষা করতে হবে। আমাদের বিশ্বাস দেশের সকল ইসলামী এবং দেশপ্রেমিক দলও আমাদের সঙ্গে যোগ দেবে। আমরা অনেক দল ও জোট দেখেছি। এবার ইসলামকে ক্ষমতায় নিতে জোট করেছি। জুলাই শহীদের আশা আকাঙ্ক্ষা পূরণে ৮ দলের যুগপৎ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন- খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় মহাসচিব মাওলানা আহমদ আবদুল কাদের, জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মাছুম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ প্রফেসর মাওলানা মুহাম্দ ইউনুছ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সিনিয়র নায়েবে আমীর মাওলানা রেজাউল করিম জালালী, নেজামে ইসলাম পার্টির সিনিয়র নায়েবে আমীর মাওলানা আব্দুল মজিদ আতাহারি, জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের ও জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট-জাগপার সহ-সভাপতি ও মুখপাত্র ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধান।




