‘করোনা রিলিফ বিলে স্বাক্ষরে প্রস্তুত আছি’
পোস্ট ডেস্ক : করোনা-রিলিফ বিল নিয়ে আবারো সুর পাল্টালেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার বিকেলে এক বার্তায় ট্রাম্প পুনরায় করোনা-প্রণোদনা বিল নিয়ে ডেমক্র্যাটদের সাথে চলমান আলোচনা থেকে তার অর্থমন্ত্রী স্টিভেন মুনুচিনকে সরে আসার নির্দেশ দিয়েছিলেন। ৩ নভেম্বরের নির্বাচনে তিনি জয়ী হবার পরই বড় অংকের একটি প্রণোদনা বিল পাশের অঙ্গীকারও করেছিলেন। এমন বক্তব্য প্রদানের পরই শেয়ার মার্কেটে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছিল। রিপাবলিকান সিনেটররাও হতাশায় পড়েছিলেন। কারণ, করোনায় বিপর্যস্ত আমেরিকানরা গভীর আগ্রহে রয়েছেন এককালিন অর্থ সহায়তার পাশাপাশি সাপ্তাহিক বেতন ভাতার জন্যে। বিশেষ করে ক্ষুদ্র ব্যবসা ঘুরে দাঁড়ানো এবং হাসপাতাল-শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সৃষ্ট সংকট কাটিয়ে উঠার ক্ষেত্রে সেই প্রণোদনা বিলের প্রয়োজন অপরিসীম বলে ট্রাম্পের অর্থনৈতিক উপদেষ্টারাও অভিমত পোষণ করেছেন।
এমনি একটি পরিস্থিতির মধ্যেই মঙ্গলবার দিবাগত রাতে আরেক টুইট বার্তায় ট্রাম্প নাগরিকদের জন্য এককালিন ১২০০ ডলারের আরেকটি চেক (করোনার প্রকোপ শুরুর সময় অথাৎ গত এপ্রিলে প্রথম করোনা-স্টিমুলাস বিল পাশের পর প্রত্যেক নাগরিককে সরাসরি ১২০০ ডলারের চেক পাঠানো হয়েছিল) এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য পে-চেক প্রটেকশন প্রণোদনা বিলে তিনি স্বাক্ষরে প্রস্তুত রয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন।
ট্রাম্প সেখানে বলেছেন, এয়ারলাইন্সের পে-রোল সহযোগিতার জন্য ২৫ বিলিয়ন ডলার, ক্ষুদ্র ব্যবসার কর্মজীবীদের পে-চেক প্রটেকশন কর্মসূচির জন্য ১৩৫ বিলিয়ন ডলারের অনুমোদন দিতে প্রস্তুত রয়েছি। সিনেট ও প্রতিনিধি পরিষদের দ্রুত এ অর্থ-অনুদানের অনুমোদন দেয়া উচিত বলেও উল্লেখ করেছেন ট্রাম্প।
প্রসঙ্গত, প্রতিনিধি পরিষদের ডেমক্র্যাট স্পিকার ন্যান্সি পেলসির সাথে ট্রাম্পের প্রতিনিধির চলমান আলোচনায় মাথাপিছু ১২০০ ডলারের চেক নিয়ে কোন মতদ্বৈততা নেই। সেখানে বড় সংকট দেখা দেয় সাপ্তাহিক বেকার ভাতার পরিমাণ নিয়ে। রিপাবলিকানরা চাচ্ছেন ৩০০ ডলার। অপরদিকে ডেমক্র্যাটরা সর্বশেষ একটি বিল পাশ করেছেন, সেখানে সাপ্তাহিক বেকার ভাতা ৬০০ ডলার ধার্য রয়েছে। গত মার্চে পাশ হওয়া প্রথম করোনা রিলিফ বিল অনুযায়ী ৩১ জুলাই পর্যন্ত বেকার ভাতা পাচ্ছিলেন (ফেডারেল থেকে) সাপ্তাহিক ৬০০ ডলার করে। সেটি বন্ধ হওয়ায় এখনও যারা বেকার তাদেরকে কঠিন এক সংকটে দিনাতিপাত করতে হচ্ছে। তেমনি একটি পরিস্থিতিকে জিইয়ে রেখে ৩ নভেম্বরের নির্বাচনের বৈতরণী পাড়ি দেয়া সম্ভব হবে না বলে হোয়াইট হাউজে রিপাবলিনরা বার্তা পাঠানোর কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে ট্রাম্পের সুর পাল্টালো বলে অনেকের ধারণা।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের জুলাই থেকে অর্থমন্ত্রী স্টিভেন মুনিচিন ও প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির মধ্যে ওই আলোচনা শুরু হয়েছিল। হাসপাতালে থাকাবস্থায় ট্রাম্প সংশ্লিষ্ট সকলকে করোনা প্রণোদনা বিল নিয়ে দ্রুত সমঝোতার আহবান রেখেছিলেন। এমন আলোচনার মধ্যেই ডেমক্র্যাটরা ১৫ মে পাশ করা তাদের ৩.৪ ট্রিলিয়ন ডলারের প্রণোদনা বিলের পরিমাণ কমিয়ে ২.২ ট্রিলিয়ন করে গত সপ্তাহে আরেকটি বিল পাশ করেছেন। সমঝোতার স্বার্থে এই বিল পাশের পর ট্রাম্পের সরে পড়ার ঘোষণায় সকলেই হতভম্ব হন। ট্রাম্প আলোচনা বাতিলের ঘোষণা দেয়ার পর এক ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ায় ডেমক্র্যাট প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জো বাইডেন বলেছেন, ট্রাম্প মার্কিন জনগণের দিকে ‘পিছন ফিরে দাঁড়িয়েছেন’।