চ্যালেঞ্জের মুখে টেস্ট এন্ড ট্রেইস, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর হেলথ প্রোটেকশন প্রধানের নিয়োগ

Published: 9 November 2020

পোস্ট ডেস্ক : যথাযথ আইনী প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে ব্রিটিশ পাবলিক সেক্টরের অত্যন্ত সিনিয়র একটি পদে লোক নিয়োগ করায় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এবং হেলথ সেক্রেটারী মেট হেন ককের বিরুদ্ধে আইনী চ্যালেঞ্জের প্রক্রিয়া শুরু করেছে লন্ডনের থিঙ্কট্যাঙ্ক রানিমেড ট্রাস্ট এবং গুড ল প্রজেক্ট।

দুটি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কোনো ধরনের প্রতিযোগিতা এবং খোলামেলা প্রক্রিয়া ছাড়াই প্রচলিত আইনের বিপরীতে গিয়ে টেস্ট এবং ট্রেইসের প্রধান এবং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর হেলথ প্রোটেকশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধানের পদে ব্যারোনেস হার্দিংকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ দুটি পদ থেকে ব্যারোনেস হার্দিংকে বরখাস্ত করার জন্যেও প্রধানমন্ত্রী এবং হেলথ সেক্রেটারী প্রতি আহ্বান জানিয়েছে রানিমেড এবং দ্যা গুল ল প্রজেক্ট।

এক নজরে দেখে নিন কে এই ব্যারোনেস দিদো হার্ডিং?

করোনার মধ্যে সবচাইতে বিতর্কিত হাইপ্রোফাইল ব্যক্তি হলেন ব্যারোনেস দিদো হার্ডিং। ব্যক্তিগতভাবে তিনি ব্রিটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামরনের বন্ধু। ২০১৪ সালে ক্যামরন তাকে হাউস অব লর্ডসের সদস্য নিযুক্ত করেন। দিদো হার্ডিংয়ের স্বামীও টোরি পার্টির বর্তমান এমপি এবং প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের খুব ঘনিস্টজন। দিদো হার্ডিং ছিলেন টক টক গ্রুপের চীফ এক্সিকিউটিভ। টক টকের প্রায় চার মিলিয়ন কাস্টমার সাইবার হামলার স্বীকার হবার পর ২০১৭ তিনি পদ থেকে পদত্যাগ করেন। চ্যালথেনহ্যাম ফ্যাস্টিভ্যালের জকি ক্লাবের বোর্ড মেম্বার দিদো হার্ডিং গত মে মাসে এনএইচএস টেস্ট এন্ড ট্রেইসের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এরপর অগাষ্টে ন্যাশনাল ইনন্সিটিউট ফর হ্যালথ প্রোটাকশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান হিসেবে তাকে নিয়োগ দেন হেলথ সেক্রেটারী মেট হেনকক। সংক্ষিপ্ত পরিসরে এই হলেন দিদো হার্দিং।

সমস্যা কোথায় এবং কেন আইনী চ্যালেন্জ?

প্রথমত, গত মে মাসে টেস্ট এন্ড ট্রেইসের প্রধান হিসেবে ব্যারনেস হার্ডিংকে নিয়োগ নিয়ে যতোটা সমালোচনা হয়েছে তার চাইতে বেশি সমালোচনা হয়েছে টেস্ট এন্ড ট্রেইসিংয়ের ব্যর্থতা নিয়ে। এখানেও আলোচনায় ছিলেন এর প্রধান ব্যারোনেস হার্ডিং। এই খাতে তিনি অদক্ষ বলেই তাকে নিয়ে বেশি সমালোচনা হয়েছে।

এরপর গত অগাস্টে পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ড ভেঁঙ্গে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর হেলথ প্রোটেকশন নামে নতুন সংস্থা গঠনের ঘোষণা দেন হেলথ সেক্রেটারী মেট হেনকক। করোনা মহামারী মোকাবিলায় সরকারের ব্যর্থতাকে পাবলিক ইংল্যান্ডের উপর চাপিয়ে দিয়ে নতুন সংস্থা গঠন করে এর ভারপ্রাপ্ত প্রধান হিসেবেও নিয়োগ দেন ব্যারোনেস হার্ডিংকে।

করোনা মহামারী মোকাবিলায় যেখানে পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ডকে সরকারের উৎসাহ যোগানো উচিত সেখানে তা ভেঙ্গে নতুন সংস্থা গঠন এবং নতুন সংস্থার ভারপ্রাপ্ত প্রধান হিসেবে ব্যারোনেস হার্ডিংকে নিয়োগ নিয়ে আবারও ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে সরকার।পার্লামেন্টে এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। এমপিরা টেস্ট এন্ড ট্রেইসের ব্যর্থতার কথা স্মরন করিয়ে দুই সংস্থার প্রধানের পদ থেকে ব্যারোনেস হার্ডিংকে প্রত্যাহারের দাবী জানান। কিন্তু পার্লামেন্টে ব্যাপক সংখ্যা ঘরিস্টতা নিয়ে আসা বরিস জনসন ইউটার্নে রেকর্ড করলেও ব্যারোনেস হার্ডিংয়ের ক্ষেত্রে দৃঢ় অবস্থানে রয়েছেন।

 

তবে ব্যারোনেস হার্ডিংকে নিয়োগ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হলেও এবার এই নিয়োগের বিপক্ষে আইনী চ্যালেঞ্জের প্রক্রিয়া শুরু করেছে লন্ডনের থিঙ্ক ট্যাঙ্ক রানিমেড ট্রাস্ট এবং গুড ল প্রজেক্ট। রানিমেড ট্রাস্টের ডাইরেক্টর ডক্টর হালিমা খান বলেছেন, করোনা মহামারীতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই দুটি সংস্থার প্রধান হিসেবে ইক্যুয়ালিটি এ্যাক্ট ২০১০ কে অনুসরন করেনি। ইক্যুয়ালিটি এ্যাক্টের ১৪৯ ধারা অনুযায়ী পাবলিক সেক্টরে সিনিয়র পদে নিয়োগের শর্ত পুরন করা হয়নি। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়নি কোথাও। ব্যারোনেস হার্ডিং একজন টোরি এমপি স্ত্রী বরং এটাকেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে এই দুটি নিয়োগের ক্ষেত্রে। এ কারণেই তারা এই নিয়োগের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ নিয়েছেন।

রানিমিড ট্রাস্টেন ডাইরেক্টর ডক্টর হালিমা বেগম মনে করেন, করোনায় অকালে অনেকে জীবন হারিয়েছেন। সবচাইতে বশি ভুক্তভোগি হয়েছে বিএএমই কমিউনিটির মানুষ। প্রতিযোগিতার মাধ্যমে যোগ্য ব্যক্তি নিয়োগ পেলে চিত্র হয়তো ভিন্ন হত বলে মনে করেন তিনি।

যদিও টেস্ট এন্ড ট্রেইসের প্রধান এবং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর হেলথ প্রোটাকশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান হিসেবে বিণা বেতনে কাজ করছেন ব্যারোনেস হার্দিং। তবে ২০১৮ সাল থেকে এনএইচএস ইমপ্রোভমেন্টের চেয়ার হিসেবে সপ্তাহে মাত্র দুদিন কাজ করে বছওে ৬৫ হাজার পাউন্ড বেতন গুনছেন তিনি।