প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং বললেন বঙ্গবন্ধুর ‘সোনার বাংলা’ গড়তে পাশে আছে চীন

Published: 17 March 2021

পোস্ট ডেস্ক : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তীর যৌথ উদযাপন অনুষ্ঠানে দেয়া ভিডিও বার্তায় চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং বলেছেন- ৫০ বছর আগে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠাকারী বাঙ্গালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এমন একজন মানুষ ছিলেন যিনি তাঁর সারাটা জীবন দেশের মানুষের জন্য উৎসর্গ করে গেছেন।

আজ তাঁর কীর্তিকে দেশের মানুষ শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছে। তিনি যে ‘সোনার বাংলা’র স্বপ্ন দেখেছিলেন আজও বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষকে তাদের জাতীয় পুণরুজ্জীবনের জন্য তা উৎসাহ দেখিয়ে যাচ্ছে। জাতীয় পুনজাগরণের চীনা স্বপ্নের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার স্বপ্ন দারুণভাবে মিল রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কাঙ্খিত সোনার বাংলার স্বপ্ন পূরণে চীন বাংলাদেশের পাশে আছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম দেশ যে চীনের বেল্ট এন্ড রোড ইনিশিয়েটিভে স্বাক্ষর করেছে। এই সহযোগিতামূলক সম্পর্ক দুই দেশের জনগণের জন্য সত্যিকার অর্থেই লাভজনক হবে। চীনা প্রেসিডেন্ট বলেন, বঙ্গবন্ধু প্রণীত ‘সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারও প্রতি বৈরিতা নয়’ নীতিটি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির মূল ভিত্তি হিসাবে দাঁড়িয়ে আছে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু চীনা জনগণের এক পুরানো ও ভালো বন্ধু।
১৯৫২ এবং ১৯৫৭ সালে চীন সফরকালে তিনি মাও সেতুং এবং চৌ এন-লাইসহ সেই প্রজন্মের বহু নেতার সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়েছিলেন। চীনের সঙ্গে আজকের স্বাধীন বাংলাদেশ তথা এ অঞ্চলের মানুষের সম্পর্কের ভিত্তি যে বঙ্গবন্ধুর সেই দুই ঐতিহাসিক সফর সেটি বুঝাতে গিয়ে প্রেসিডেন্ট শি একটি চীনা প্রবাদ উল্লেখ করেন। বলেন, কুয়া থেকে জল খাওয়ার সময় ভুলে যেও না এটি কে খুঁড়েছিল। আগের প্রজন্মের চীনা নেতাদের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু তথা বাংলাদেশের সম্পর্কের বিষয়টিও তেমন। নেতারা এ সম্পর্ক বিকাশে কী করেছিলেন তা আমাদের সর্বদা স্মরণে রাখতে হবে। একই সঙ্গে চীন-বাংলাদেশ বন্ধুত্বের সেই খুঁটি বা লাঠিটি ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছেও পৌঁছে দিতে হবে। চীনা প্রেসিডেন্ট বলেন, স্বাধীনতার পাঁচ দশকে বাংলাদেশের মানুষ তাদের দৃঢ় বিশ্বাস এবং অঙ্গীকারের প্রতি অবিচল থেকেছে এবং একের পর এক চ্যালেঞ্জের উপর বিজয়ী হয়েছে। তিনি বলেন, বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সংস্কার ও উন্নয়নের দিকে মনোনিবেশ করেছে এবং দ্রুত গতিতে সেই লক্ষ্য পূরণে এগিয়ে চলেছে। দেশটির প্রবৃদ্ধি প্রতিবছর ছয় শতাংশেরও বেশি বাড়ছে। বাংলাদেশ তার নিজের মানুষের জীবনকে আরও উন্নত করেছে এবং বিশ্বের দারিদ্র্য হ্রাসে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী হিসেবে একটি সমৃদ্ধ ও অগ্রগতিশীল বাংলাদেশকে নিয়ে চীন আনন্দিত। তিনি বলেন, চীন ও বাংলাদেশ সবসময়ই বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী ছিল, প্রাচীন সিল্ক রোড সহস্রাব্দ জুড়ে বিস্তৃত বন্ধুত্বের সাক্ষী হিসাবে দাঁড়িয়ে আছে। যেহেতু ৪৬ বছর আগে চীন ও বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে, আমাদের উভয় পক্ষ একে অপরের সাথে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সমান আচরণ করেছে। দুই দেশ একে অপরকে সমর্থন করছে এবং একসঙ্গে অগ্রগতি করছে। আজ, উভয় দেশই পুনরুজ্জীবন এবং উন্নয়নের এক গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে রয়েছে।