জি-৭: চীন ও রাশিয়া?
পোস্ট ডেস্ক :
বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলোকে ১০০ কোটি ডোজ করোনাভাইরাসের টিকা দেয়ার প্রত্যয় ঘোষণা করলেও বিশ্লেষকরা মনে করছেন, চীন ও রাশিয়ার বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর বিষয়টিই জি-৭ জোটের মূল লক্ষ্য। সিনজিয়াং এবং হংকং ইস্যুতেও বিবৃতি দিয়েছে জি-৭ গোষ্ঠী, যার বিরুদ্ধে নিন্দা জানিয়েছে চীন।
জি-৭ শীর্ষ সম্মেলন শেষে নিউইয়র্ক টাইমস মন্তব্য করেছে, ‘The Group of 7 summit ended on Sunday with a joint communiqué from the world’s wealthiest large democracies, who presented a mutual front against China and Russia.’
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে এবং বিশ্বপরি মন্ডল নিয়ে পর্যবেক্ষণকারীদের মন্তব্যে জি ৭ সন্মেলন শেষে যে বিষয়গুলো উঠে এসেছে, তাতে দেশগুলোর জাতীয় স্বার্থের প্রতিধ্বনি যেমন রয়েছে, রয়েছে আন্তর্জাতিক নেতৃত্ব ধরে রাখার প্রত্যয়।
জি-৭ সন্মেলনের নির্যাস প্রকাশ করতে গিয়ে বিশ্বমিডিয়া যেসব বিষয় পেয়েছে, তাহলো:
১. বৈশ্বিক কর ব্যবস্থার অনুকূল কাঠামো নির্ধারণের প্রচেষ্টা।
২. গণতান্ত্রিক মতাদর্শের বিকাশ ঘটানোর মাধ্যমে নিজেদের রাজনৈতিক প্রাধান্য বজায়ের প্রত্যাশা।
৩. চীন ও রাশিয়ার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকার প্রত্যয়।
৪. আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক ব্যবস্থাকে নিজেদের স্বার্থে কাজে লাগানোর উদ্যোগ।
৫. ব্রিটেন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যকার সঙ্কট নিরসন।
৬. কয়লা পোড়ানোর বিরুদ্ধে ও জলবায়ু ইস্যুতে একযোগে কাজ করার ক্ষেত্রে একমত হতে ব্যর্থতা।
জি-৭ সন্মেলন প্রসঙ্গে চীন স্পষ্টই তাদের বিরূপ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। রাখঢাক না করেই চীন বলেছে, জি-৭ হলো ‘small bloc of nations’ । চীনের ভাষায়, এই ক্ষুদ্র গোষ্ঠী ‘বৈশ্বিক নীতি নির্ধারণ ও নির্দেশ’ করতে পারে না। যদিও চীনের ক্রমবর্ধিষ্ণু উত্থান আর রাশিয়ার শক্তিশালী হওয়াকেও ভালো চোখে দেখছে না জি-৭।
মোদ্দা কথায়, নিজেদের বাইরে অন্য কোনও শক্তির ‘আন্তর্জাতিক কর্তৃত্ব’ মেনে না নেওয়ার মনোভাব পুনরায় ব্যক্ত করলো জি-৭ গোষ্ঠী। বিশ্বব্যবস্থায় চীন ও রাশিয়ার বিরুদ্ধে একজোট হয়ে তৎপর হওয়ার বিষয়টিও শীর্ষ সন্মেলনে নবায়ন করে নিলেন জি-৭ জোটের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।
জি-৭ শীর্ষ সন্মেলন ২০২১ ট্রাম্প-আমলের বৈশ্বিক উত্তেজনা, বিশেষত চীনের সঙ্গে দ্বন্দ্ব-সংঘাত নিরসনে কোনও ইতিবাচক ভূমিকা দেখাতে পারে নি।
নতুন মার্কিন নেতা জো বাইডেন যথারীতি মার্কিন তথা ধনী দেশগুলোর স্বার্থের সংরক্ষণে সহযোগীদের সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে এসেছেন সামনের কাতারে। নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথম আন্তর্জাতিক মঞ্চে তাঁর অবস্থান চীনের সঙ্গে ‘পুরনো মুখোমুখি’ অবস্থান পেরিয়ে সমঝোতার বার্তা দিতেও ব্যর্থ হয়েছে।