এন্টিভাইরাস ম্যাক্যাফির স্রষ্টা জন ম্যাক্যাফি ‘আত্মহত্যা’ করেছেন!
পোস্ট ডেস্ক :
কম্পিউটারে এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার ‘ম্যাক্যাফি ভাইরাস স্ক্যান’র স্রষ্টা জন ম্যাক্যাফিকে জেলখানায় তার সেলে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। সব কিছু দেখে মনে হচ্ছে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। এ খবর দিয়ে অনলাইন বিবিসি বলছে, তাকে রাখা হয়েছিল বার্সেলোনার একটি জেলে। যুক্তরাষ্ট্রে তার বিরুদ্ধে আয়কর ফাঁকি দেয়ার মামলা আছে। তাকে সেখানে ফেরত পাঠানোর জন্য স্পেনের একটি আদালত রায় দেয়ার কয়েক ঘন্টা পরে জেলে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। ক্যাটালানের আইন মন্ত্রণালয় বলেছে, জেলখানার চিকিৎসকরা তার দেহে প্রাণের স্পন্দন ফেরানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সফল হননি তারা। এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সবকিছু এই ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, ম্যাক্যাফি নিজেই নিজের জীবন শেষ করে দিয়েছেন।
প্রযুক্তি বিশ্বে বেশ বিতর্কিত হয়ে পড়েছিলেন জন ম্যাক্যাফি। তার কোম্পানি প্রথম বাণিজ্যিক ভিত্তিতে এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার ‘ম্যাক্যাফি ভাইরাস স্ক্যান’ বাজারে ছেড়েছিল। কমপিউটার জগতে তার ম্যাক্যাফি ভাইরাস স্ক্যান শত শত কোটি ডলারের শিল্পকে রক্ষায় সহায়তা করেছে। তারা প্রযুক্তি বিষয়ক আরেক জায়ান্ট প্রতিষ্ঠান ইন্টেলের কাছে তা বিক্রি করেছে কমপক্ষে ৭৬০ কোটি ডলারে। জন ম্যাক্যাফির জন্ম ইংল্যান্ডে। ১৯৮০র দশকে তিনি বিখ্যাত হয়ে ওঠেন, যখন তার প্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করে ম্যাক্যাফি ভাইরাস স্ক্যান চালু করেন। এক সময় কমপিউটারের নিরাপত্তা বিষয়ক এই বিরল ব্যক্তিত্ব বিবিসির কাছে স্বীকার করেছিলেন যে, তিনি নিজের কমপিউটারে কখনো এই সফটওয়্যার ব্যবহার করেননি। অন্য কোনো সফটওয়্যারও ব্যবহার করেননি।
২০২০ সালের অক্টোবরে স্পেন থেকে তুরস্কগামী একটি বিমানে উঠার প্রাক্কালে গ্রেপ্তার করা হয় জন ম্যাক্যাফিকে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি কনসাল্টিং বিষয়ক কর্মকা-ে, বক্তব্য দেয়ার মাধ্যমে, ক্রিপ্টো কারেন্সি এবং নিজের আত্মজীবনীর কাহিনী বিক্রির মাধ্যমে লাখ লাখ ডলার আয় করা সত্ত্বেও চার বছর ধরে আয়কর রিটার্ন জমা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের আইন মন্ত্রণালয়ের অভিযোগ, নিজের ব্যাংক একাউন্টে এসব আয় জমা হওয়া সত্ত্বেও তিনি আয়কর ফাঁকি দিয়েছেন। এ ছাড়া তিনি একটি প্রমোদতরীর মালিক, রিয়েল এস্টেটের মালিক হওয়া সত্ত্বেও এসব সম্পদের বিষয়ে তিনি অস্বীকার করেছেন। অন্য লোকজনের নামেও তিনি সম্পদ করেছেন।
তার বিরুদ্ধে স্পেনের আদালতে বিচার চলছিল। সেখানকার ন্যাশনাল কোর্ট বুধবার সকালে তাকে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেয়ার রায় দেয়। কয়েক বছর ধরে ম্যাক্যাফি অভিযোগ করে আসছিলেন যে, তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। তাকে রাজনৈতিক ও আদর্শগত কারণে বিচার করা হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে কোনো প্রমাণ নেই বলে জানিয়েছে আদালত।