ইউপি সদস্য প্রার্থীর বিরুদ্ধে স্ত্রী হত্যার অভিযোগ, আটক দ্বিতীয় স্ত্রী

Published: 8 November 2021

গাইবান্ধা সংবাদদাতা :

গাইবান্ধায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সদস্য প্রার্থী ফজলে রাব্বীর বিরুদ্ধে স্ত্রী হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সদর উপজেলার খোলাহাটী ইউনিয়নের উত্তর খোলাহাটী ঢোলমারা গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। অভিযুক্ত রাব্বী সদর উপজেলার খোলাহাটি ইউনিয়নের ৭নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য প্রার্থী হিসেবে আসন্ন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। পুলিশ আজ সোমবার দুই সন্তানের মা নিহত রত্না বেগম (২৬)’র মরদেহ উদ্ধার করে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ফজলে রাব্বীর দ্বিতীয় স্ত্রী ফারজনা বেগমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

স্থানীয়রা জানায়, সাত বছর আগে উত্তর খোলাহাটী ঢোলমারা গ্রামের লতিফ মিস্ত্রির ছেলে দাদন ব্যবসায়ী ফজলে রাব্বীর সাথে ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের মেয়ে রত্না বেগমের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে চাপ দিয়ে আসছিলেন ফজলে রাব্বী। তিনি ভোটের জন্য রত্নাকে বাবার বাড়ি থেকে দু’লাখ টাকা আনতে বলেন। এদিকে দাদন ব্যবসায়ী ফজলে রাব্বী ৬ মাস আগে প্রেম করে অন্যের স্ত্রী ফারজনা বেগমকে দ্বিতীয় বিয়ে করে। এ নিয়ে সংসারে অশান্তি চরমে ওঠে। প্রায়ই মারপিটের শিকার হতেন রত্না।

স্থানীয়রা অভিযোগে জানায়, রবিবার দুপুরে হঠাৎ অসুস্থ হয় নিহতের ছেলে রনি (৬)। এই খবর জানার পর বিকেলে ফজলে রাব্বী চিকিৎসা না করে তাকে উল্টো নির্যাতন করে। এতে রনির বাঁ হাত ভেঙে যায়। এই ঘটনায় রনির মা রত্না প্রতিবাদ করলে ফজলে রাব্বী তাকে মারপিট করেন। রাতে দুই ছেলে রনি ও তার ছোট ভাই হাবিব (৪) মায়ের সাথে ঘুমিয়ে পড়ে। ফজলে রাব্বী নির্বাচনী প্রচারণা শেষে ভোরে বাড়ি ফেরেন। ভোরে নিহত রত্না বেগম বাড়ির আঙ্গিনা ঝাড়ু দিতে গেলে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ফজলে রাব্বী স্ত্রী রত্না বেগমকে আবার বেধড়ক মারপিট করেন। এতে রত্না মারা গেলে তার মরদেহ খড়ির ঘরের ধরনার সাথে ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলিয়ে রাখার চেষ্টা করে ব্যর্থ হলে বিছানায় রেখে পালিয়ে যান ফজলে রাব্বী।

সোমবার সকালে ঘুম থেকে দুই ভাই রনি ও ছোট ভাই হাবিব মাকে মৃত অবস্থায় দেখতে পেয়ে কান্নাকাটি শুরু করে। পরে প্রতিবেশিরা এসে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছেলে এলাকাবাসী হত্যাকাণ্ডের প্ররোচণা দানকারী ও সহায়তাকারী নিহতের অপর স্ত্রী ফারজনা বেগমসহ ফজলে রাব্বীকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ করতে থাকেন। তারা হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের ফাঁসির দাবি জানান।

গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তদন্ত মো. আব্দুর রউফ জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার মর্গে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের সতিন ফারজনা বেগমকে আটক করা হয়েছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত বলা যাবে।