তারেক রহমানের যে ‘সিগন্যাল’ পেলেন সিলেটের মেয়র আরিফ

Published: 12 April 2023

সিলেট অফিস :


সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) ভোটের ঠিক আগ মুহূর্তে লন্ডনে অবস্থান করছেন বিএনপি নেতা ও বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ না করার ঘোষণার মধ্যে তার এ সফর বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

স্থানীয় একাধিক নেতার দাবি, সোমবার মেয়র আরিফ লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে নির্বাচন ও প্রার্থিতা নিয়ে আলোচনা করতেই গেছেন। সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, তারেক রহমানের সাথে মেয়র আরিফ দেখা করছেন এবং তার প্রার্থীতার বিষয়টি ‍তুলে ধরে তারেক রহমানের মতামত চেয়েছেন। সূত্রটি জানায়, তারেক রহমান মেয়র আরিফকে নির্বাচনের ব্যাপারে কোন গ্রীণ সিগন্যাল দেন নি। বরং বলে দিয়েছেন, দলের সিদ্ধান্তের কথা। তাই আরিফ অনেকটা হতাশ হয়ে ফিরে আসেন।

এ নিয়ে সিলেটজুড়ে শুধু বিএনপি নেতাকর্মী নয়, ভোটারদের মধ্যে নানা আলোচনা ও নানা জল্পনা-কল্পনা চলছে।

যদিও এ বিষয়ে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে তার ঘনিষ্ঠ এক নেতা জানিয়েছেন, দেশে ফিরে তিনি তার সিদ্ধান্ত (মেয়র পদে অংশ নেওয়া না নেওয়া) সাংবাদমাধ্যমকে জানাবেন।

তফসিল ঘোষণার পর থেকেই সিলেট নগরবাসীর মধ্যে আলোচনা চলছে বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী প্রার্থিতা নিয়ে।

এদিকে লন্ডনের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মেনর পার্ক এলাকার রয়েল রিজেন্সি সেন্টারে যুবদলের আলোচনাসভায় বক্তব্য দেন মেয়র আরিফ। সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নেবেন না বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে শুধু এই কথাতেই সীমাবদ্ধ থাকলেন না। পরের কথায় বলে দিলেন— ‘পেয়ে গেছেন সিগন্যাল’!

বক্তব্যের একপর্যায়ে ‘একটি সিগন্যাল’ পেয়েছেন এমন কথা বলায় এখনো দোটানায় নেতাকর্মীরা। সিলেটবাসীও অপেক্ষায় তার মুখ থেকে পরিষ্কার ‘হ্যাঁ অথবা না’ শব্দ শোনার জন্য।

তবে তার এমন বক্তব্যে নতুন কিছুর আভাস পাচ্ছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। তাই বিএনপি থেকে হয়তো সিটি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না আরিফ। হতে পারে এটি দল থেকে পদত্যাগ করে ‘স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার সিগন্যাল’!

সিলেট বিএনপির একজন নেতা জানান, মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী সোমবার তারেক রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। লন্ডনের অভিজাত কিংস্টন এলাকায় তাদের এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।

তিনি আরও জানান, দলীয় পদে থেকে নির্বাচনে গেলে আরিফ দল থেকে বহিষ্কৃত হবেন। তিনি দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচন করবেন না। তবে বিএনপি নির্বাচনে না গেলেও দলীয় পদ ছেড়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেও আরিফুল হক চৌধুরীকে বহিষ্কার হতে হবে না।

সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সালেহ আহমদ খসরু বলেন, বিএনপির হাইকমান্ড সিলেট সিটি করপোরেশনকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে দেখে থাকে। সময়ই বলে দেবে দলীয় সিদ্ধান্ত কী আসবে।

তিনি বলেন, যেহেতু বর্তমান সিটি মেয়র বিএনপি পরিবারের একজন, সেহেতু দল এটি আরও গুরুত্ব দিয়ে দেখবে। আর এটি স্থানীয় সরকার নির্বাচন, হয়তো-বা দল সে ক্ষেত্রে নমনীয় থাকতে পারে কিংবা মেয়র আরিফুলের প্রতিও নমনীয় থাকতে পারে।

বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী টানা দুবারের মেয়র। এর আগে তিনি সিলেট পৌরসভার জনপ্রতিনিধি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

২০০২ সালে সিলেট সিটি করপোরেশন প্রতিষ্ঠার পর এখন পর্যন্ত চারবার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২০০৩ সালে প্রথম নির্বাচনে বিজয়ী কামরান ২০০৮ সালের দ্বিতীয় নির্বাচনেও কারাগার থেকে মেয়র নির্বাচিত হন। ২০১৩ সাল থেকে মেয়র পদে আছেন বিএনপির আরিফুল হক চৌধুরী।