ক্রমশই আরও প্রাণঘাতী হয়ে উঠছে হেপাটাইটিস, দৈনিক মৃত্যু সাড়ে ৩ হাজার
পোস্ট ডেস্ক :
২০২৪ সালের হেপাটাইটিস রিপোর্ট প্রকাশ করলো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। যা রীতিমতো উদ্বেগের। প্রতি বছর ১৩ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে এই অসুখে। সাম্প্রতিক হিসেব অনুযায়ী, দৈনিক সাড়ে তিন হাজার মানুষের প্রাণ কাড়ছে এই অসুখ। এই ভয়ংকর অসুখ হয়ে উঠেছে পৃথিবীর দ্বিতীয় সবচেয়ে সংক্রামক ব্যাধি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্টে বলা হয়েছে, ১৮৭টি দেশের নতুন তথ্য দেখায় যে ভাইরাল হেপাটাইটিসে মৃত্যুর আনুমানিক সংখ্যা ২০১৯ সালে ১.১ মিলিয়ন থেকে ২০২২ সালে ১.৩ মিলিয়নে পৌঁছে গেছে। মৃত্যুর ৮৩ শতাংশের জন্য দায়ী হেপাটাইটিস বি এবং ১৭ শতাংশের পেছনে ছিল হেপাটাইটিস সি সংক্রমণ। ওয়ার্ল্ড হেপাটাইটিস সামিটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “প্রতিদিন, হেপাটাইটিস বি এবং সি সংক্রমণের কারণে বিশ্বব্যাপী ৩৫০০ লোক মারা যাচ্ছে। হেপাটাইটিস বি এবং সি-এ মৃত্যুর প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ সম্মিলিতভাবে বহন করছে বাংলাদেশ, চীন, ইথিওপিয়া, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান, ফিলিপাইন, রাশিয়া এবং ভিয়েতনাম। জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থা এক বিবৃতিতে বলেছে, ২০২৫ সালের মধ্যে এই ১০টি দেশে প্রতিরোধ, রোগ নির্ণয় এবং চিকিত্সার সার্বজনীন অ্যাক্সেস অর্জন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
মনে করা হচ্ছে, ২০২২ সালেই হেপাটাইটিস বি-তে আক্রান্ত হয়েছিলেন ২৫ কোটিরও বেশি মানুষ। হেপাটাইটিস সি-এর ক্ষেত্রে সংখ্যাটা ৫ কোটি। আক্রান্তদের মধ্যে অর্ধেকই ৩০-৫৪ বছর বয়সী। ১২ শতাংশ নাবালক। নারী ও পুরুষদের মধ্যে দেখলে আক্রান্তের ৫৮ শতাংশই পুরুষ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ডঃ টেড্রোস আধানম ঘেব্রেইসাস বলেছেন, ‘এই প্রতিবেদনটি একটি উদ্বেগজনক চিত্র তুলে ধরেছে। হেপাটাইটিস সংক্রমণ প্রতিরোধে বিশ্বব্যাপী অগ্রগতি সত্ত্বেও, মৃত্যু বাড়ছে কারণ হেপাটাইটিসে খুব কম লোকেরই নির্ণয় ও চিকিৎসা করা হচ্ছে। হু জীবন বাঁচাতে এবং এই প্রবণতাকে বদলে দিতে দেশগুলিকে সমস্ত সরঞ্জাম দিয়ে সহায়তা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ বিশ্বব্যাপী অগ্রগতি, রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসার ফাঁক সম্পর্কে কথা বলার পাশাপাশি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২০২৪ গ্লোবাল হেপাটাইটিস রিপোর্ট মূল্য নির্ধারণ এবং পরিষেবা সরবরাহের ক্ষেত্রে বৈষম্যের দিকেও ইঙ্গিত করেছে এবং বলেছে, অর্থায়ন একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে।
প্রতিবেদনে ভাইরাল হেপাটাইটিসের জন্য জনস্বাস্থ্য পদ্ধতির অগ্রগতির জন্য একাধিক পদক্ষেপের রূপরেখা দেয়া হয়েছে, যা ২০৩০ সালের মধ্যে মহামারী শেষ করার দিকে অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে: টেস্টিং এবং ডায়াগনস্টিকসের পরিমাণ বাড়ানো, ‘প্রাথমিক যত্ন’ প্রচেষ্টা জোরদার করা , উন্নত তথ্য সংগ্রহ ; এবং সুশীল সমাজকে সম্পৃক্ত করা।