আমাকে উৎখাত করে কাকে ক্ষমতায় বসাতে চায় তারা: প্রধানমন্ত্রী

Published: 2 May 2024

পোস্ট ডেস্ক :


দেশের বামপন্থি রাজনৈতিক দলগুলোর কার্যক্রমের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের বামপন্থি দলগুলো আমাকে উৎখাতের আন্দোলন করছে। অতি বামদের কাছে আমার প্রশ্ন, তারা আমাকে উৎখাত করে কাকে ক্ষমতায় আনবে? তারা কি একবার এটা ভেবে দেখেছে? আর আমার অপরাধটা কী?

প্রধানমন্ত্রীর থাইল্যান্ড সফর নিয়ে বৃহস্পতিবার তার সরকারি বাসভবন গণভবনে সাম্প্রতিক থাইল্যান্ড সফরের ফলাফল নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের বামরা ৯০ ডিগ্রি ঘুরে গেছে। তারা এখন আমাদের এখানে আন্দোলন করছে। আমি বলে দিয়েছি, তারা আন্দোলন করছে, করুক। অথচ আমি চাইলে আমেরিকার স্টাইলে পুলিশ দিয়ে আন্দোলন থামিয়ে দিতে পারি।

তিনি বলেন, ‘গত বছর ২৮ অক্টোবর আমাদের দেশে আন্দোলনের নামে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে, ভাঙচুর করা হয়েছে। আমাদের পুলিশ এগুলো ধৈর্যের সঙ্গে মোকাবিলা করেছে।’

যুক্তরাষ্ট্রে সম্প্রতি দুজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকানকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে- এ ব্যাপারে আপনি প্রতিবাদ জানিয়েছেন। আনুষ্ঠানিকভাবে এর বিচার দাবির কোনো উদ্যোগ নেবেন কি না? দুদিন আগে আপনি বলেছেন, অতি বাম-অতি ডান মিলে সরকারের বিরুদ্ধে উৎখাতের ষড়যন্ত্র করছে। আপনি জাতীয়-আন্তর্জাতিকভাবে দেশকে অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, বাংলাদেশের মানুষ তখন শঙ্কিত; সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের মানুষের কাছে এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় আপনার বার্তা কী?—গণমাধ্যমকর্মীরা জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আন্দোলন করে যাচ্ছে কেউ ফিউগেটিভ হয়ে বিদেশে বসে। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি, সেই ডিজিটাল বাংলাদেশের বদৌলতে প্রতিদিন অনলাইনে আন্দোলন-সংগ্রাম করেই যাচ্ছে। নির্দেশ দিয়েই যাচ্ছে। সেখানেও প্রশ্ন আছে। যারা আন্দোলন করার করুন, আমরা তো বাধা দিচ্ছি না!

‘অবশ্য আমার মনে হয়, আমাদের একটু নতুন পথ নিয়ে নেওয়ার একটা সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। আমরা যদি আমাদের পুলিশকে বলে দেই, আমেরিকার পুলিশ যেভাবে আন্দোলন থামায়, সেটা অনুসরণ করতে পারে। সেটা করতে পারি। আমার মনে হয়, আমাদের পুলিশ আমেরিকান পুলিশকে অনুসরণ করতে। কারণ আমরা তো পুলিশকে ধৈর্য ধরতে বলেছিলাম। সেই ২৮ অক্টোবর ২০২৩ সালে আমি তো পুলিশকে বলেছিলাম ধৈর্য ধরতে। পুলিশ ধৈর্য ধরতে গিয়ে পিটুনির শিকার হয়েছে। সেই সঙ্গে তাদের হাসপাতালে আক্রমণ, গাড়ি পোড়ানো হয়েছে। কাজেই আমার মনে হয়, এখন আমাদের পুলিশ কিন্তু আমেরিকান স্টাইলে আন্দোলন দমানোর ব্যবস্থাটা নিতে পারে। আমার মনে হয়, সাংবাদিকরা এ ব্যাপারে আমাকে সমর্থন করবেন।’

বাংলাদেশি হত্যার প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘প্রতিবাদ শুধু এখানেই না, আমেরিকায় বসেও প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে।’

অপর এক প্রশ্নের জবাবে সরকার প্রধান বলেন, ‘আমরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় এসেছি। জনগণ আমাদের সঙ্গে রয়েছে, এটাই আমাদের বড় শক্তি। তবে কেউ কেউ চেয়েছিল, নির্বাচন যাতে না হয়। নির্বাচন না হলেই তারা খুশি হতো। যারা ভোটের অধিকার হরণ করেছিল, তারাই এখন ভোটের অধিকারের কথা বেশি বলে। অথচ আমরাই দেশের মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করেছি।’

প্রসঙ্গত, থাইল্যান্ডে ছয় দিনের সরকারি সফর শেষে প্রধানমন্ত্রী ২৯ এপ্রিল ব্যাংকক থেকে দেশে ফিরেছেন। সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশটির প্রধানমন্ত্রী শ্রেথা থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে দুই নেতার উপস্থিতিতে বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের মধ্যে ভিসা অব্যাহতি, জ্বালানি সহযোগিতা, পর্যটন ও শুল্ক সংক্রান্ত বিষয় এবং মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির (এফটিএ) আলোচনার বিষয়ে পাঁচটি দ্বিপাক্ষিক নথি সই হয়।