শিক্ষার্থী হত্যার তদন্তে আগামী সপ্তাহে ঢাকায় আসছে জাতিসংঘের কমিশন

Published: 15 August 2024

বিশেষ সংবাদদাতা :


ছাত্র আন্দোলনের সময় বিক্ষোভকারীদের হত্যা করার বিষয়ে তদন্তের জন্য আগামী সপ্তাহে ঢাকায় আসছে জাতিসংঘের স্বাধীন তদন্ত কমিশন বা ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন। তারা প্রাথমিক ফ্যাক্ট ফাইন্ডিংয়ের কাজটি করবে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যাকাণ্ডের তদন্ত শুরু করতে আগামী সপ্তাহে ঢাকায় আসছে জাতিসংঘের স্বাধীন তদন্ত কমিশন বা ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গোয়েন লুইস।
তিনি বলেন, ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন নিয়ে খুব সংক্ষিপ্ত আলোচনা হয়েছে। ড. ইউনূস এবং জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থার প্রধান ভলকার টুর্কের মধ্যে গতকাল আলোচনা হয়েছে এবং তারা জাতিসংঘের নেতৃত্বে একটি দল কাজ করবে এ বিষয়ে সম্মত হয়েছে। কয়েকজন জাতিসংঘ কারিগরি সহযোগী আগামী সপ্তাহে এসে পৌঁছাবে এবং তারা প্রাথমিক ফ্যাক্ট ফাইন্ডিংয়ের কাজটি করবে। তবে কী কাজ করবে এবং কাজের পরিধি কী হবে সেটি নিয়ে দুইপক্ষকে সম্মত হতে হবে।

এদিন জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে আধা ঘণ্টারও বেশি সময় বৈঠক করেন।

অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধানের সঙ্গে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের ফোনালাপের উদ্ধৃতি দিয়ে গোয়েন লুইস বলেন, অন্তর্র্বতী সরকার তদন্ত দলকে সহায়তা করবে।

জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের বাংলাদেশে আসার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মূল বিষয় হলো আমাদের সহায়তা করা, যাতে আমরা তদন্ত ঠিক মতো করতে পারি। যারা শাস্তি পাওয়ার কথা তাদের যেন শাস্তির মুখোমুখি করা যায়। বর্তমান সরকারের অবস্থান খুবই পরিষ্কার। যারা এই অপরাধগুলো করেছে এবং যারা হুকুম দিয়েছে তাদেরকে অবশ্যই বিচারের সম্মুখীন করতে হবে। সে ব্যাপারে জাতিসংঘ সহায়তা করুক সেটি আমাদের নীতিগত সিদ্ধান্ত আছে। সিদ্ধান্ত হয়েছে তাদের আমরা যুক্ত করবো। বাকি বিষয়গুলো তিনটা মিনিস্ট্রি মিলে ঠিক করে নেবে।

গোয়েন লুইস বলেন, তারা বাংলাদেশে আসার জন্য টিকিট কেটে ফেলেছে এবং আগামী সপ্তাহে আসবে। তারা প্রাথমিকভাবে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিংয়ের কাজটি করবে। তাদের কাজের পরিধি, টার্মস অব রেফারেন্স, কত সময় কাজ করবে সেটি নিয়ে এখনো কাজ চলছে। কিন্তু আমরা কাজ করতে তৈরি আছি।

তারা স্বাধীনভাবে নিজেদের অর্থায়নে তদন্ত করবেন বলে জানিয়েছেন, সে বিষয়ে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, অর্থায়নই সবকিছু না। তারা স্বাধীনভাবেই করুক। কিন্তু তারা যদি তদন্ত করতে যান তাদের নিরাপত্তার বিষয়টিও তো দেখতে হবে। কাজেই স্বাধীন যতই হোক না কেন আমাদের ওপর নির্ভর তো থাকতেই হবে। এই সরকারও চায় একটি স্বচ্ছ তদন্ত হোক। তার ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা হোক। আমরা পুরোপুরি আইন অনুযায়ী কাজটা করতে চাই।

নিরপেক্ষ তদন্তে সরকার তাতের সহযোগিতা করবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করব অবশ্যই যেন একটি নিরপেক্ষ তদন্ত হয়। তার ভিত্তিতে গ্রহণযোগ্য হয় সারা বিশ্বের কাছে। পরিস্থিতিটা এমন যেকোনো কিছু করতে গেলেই এক ধরনের ক্রিটিসিজম আসতে পারে। তাই আমরা চাইব এটা সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে হোক, তাতে আমাদের যা যা সহযোগিতা দরকার তা আমরা করবো।

আবাসিক সমন্বয়ক বলেন, সামনের দিনগুলোতে অন্তর্র্বতীকালীন সরকার যে অগ্রাধিকারগুলো নির্ধারণ করবে সেটিতে একসঙ্গে কাজ করার বিষয়ে আমরা সম্মত হয়েছি। আমরা যেসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করার বিষয়ে একমত হয়েছি সেগুলো হচ্ছে বাংলাদেশের যুব সম্প্রদায়কে মানবাধিকার সম্প্রসারণে সহায়তা করা এবং তদন্ত কাজে সহায়তা করা যেটিতে ড. ইউনুস গত সন্ধ্যায় একমত হয়েছেন।

তিনি বলেন, অর্থনীতি একটি অগ্রাধিকার বিষয়ে এবং এক্ষেত্রে জাতিসংঘ কীভাবে সহায়তা করতে পারে সেটি নিয়ে আলোচনা করেছি। এছাড়া রোহিঙ্গা, বন্যা সহায়তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।